ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি কিনা যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব প্রেসিডেন্ট এবং আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলীয় প্রার্থী। আদালতে দাঁড়িয়ে তার সাথে যৌন অভিজ্ঞতার কথা বিশদে বিবরণ দিলেন পর্ণ তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলস।
যৌন কেলেঙ্কারির কথা ধামাচাপা দিতে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে ৭৭ বছর বয়সী ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করেন ওই পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলস। এবং মঙ্গলবার তার বিরুদ্ধে সাক্ষী দেন ওই ৪৫ বছর বয়সী পর্ন তারকা।
২০০৬ সালে হোটেল কক্ষে ট্রাম্পের সঙ্গে কীভাবে তার যৌন মিলন হয়েছিল, তার খুঁটিনাটি তিনি তুলে ধরেন জবানবন্দিতে। সিএনএন লিখেছে, সেই বিবরণ এতটাই বিশদ ছিল যে তাকে থামিয়ে দিয়ে বিচারককে বলতে হয়েছে, এতটা না বললেও পারতেন স্টর্মি ড্যানিয়েলস।
কাঠগোড়ায় বসে প্রায় কয়েক ঘন্টা ধরে ওই তারকা তার নিজের বক্তব্য রাখেন। ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে মুখ বন্ধ রাখার জন্য ঘুষ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এবং সেই ঘটনাটির কোথাও বিশদে আদালতের সামনে তুলে ধরেন। এই পর্ন তারকা আদালতকে বলেন, ঘটনাটি ঘটে যাওয়ার পর এ নিয়ে আর না ভাবার চেষ্টাই করেছিলেন তিনি।এবং বিষয়টা জানাজানি হওয়ার আশঙ্কাও করছিলেন।
ড্যানিয়েলস জুরিদের বলেন, ২০১৮ সালে মুখ বন্ধ রাখার ব্যাপারটি প্রকাশ্যে আসার পর তার জীবন এলোমেলো হয়ে যায়; তিনি একঘরে হয়ে পড়েন আর নিজের বাড়িতেও নিগৃহের শিকার হন।
তিনি জুড়িদের সামনে বিশদে সমস্ত কিছুর বিবরণ দেওয়ার ফলে ট্রাম্পের আইনজীবীরা তাতে আপত্তি জানায়। এবং বাড়তি কথা বলার জন্য ‘মিসট্রায়ালের’ আবেদন তোলেন।শুধু ‘জুরিদের জ্বালাতন করার জন্যই’ তিনি এত কিছু বলছেন- এমন যুক্তি দেখান আইনজীবীরা। বিচারকরা ওই পর্ন তারকার বিশ্বাস যোগ্যতা নিও প্রশ্ন তোলেন এবং তাকে নানান প্রশ্নে জর্জরিত করেন।
রয়টার্স লিখেছে, ড্যানিয়েলস স্বীকার করেন, তিনি ট্রাম্পকে ‘ঘৃণা’ করেন । তবে প্রশ্ন একটা থেকেই যাচ্ছে যে কেন তিনি ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর সাত বছর চুপ ছিলেন, এবং এখনো অনেক বিষয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে।
তিনি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে যৌনমিলনের কথা এবং মুখ বন্ধ রাখার জন্য তাকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার দেওয়ার কথা অস্বীকার করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। তবে ড্যানিয়েল বলেন যে ২০১৬ সালে নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের কাছ থেকে টাকা আদায় করতে চেয়েছিলেন কারন তিনি জানতেন যে নির্বাচনে যদি ট্রাম্প যেতেন তাহলে আর কোন অর্থ সে দেবে না।
এখনো ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তিনটি ফৌজদারি মামলা চলছে। অন্য যে মামলাগুলোতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, সেগুলো হল, ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পরাজয়ের পর ফলাফল উল্টে দেওয়ার চেষ্টা এবং প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব থেকে সরার পর রাষ্ট্রীয় গোপনীয় নথি অসাবধানে সংরক্ষণ করা সংক্রান্ত। এই তিনটি মামলায়ই ট্রাম্প নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন।