ত্রিপুরায় ছড়িয়েছে এইচআইভি মহামারীর চাঞ্চল্যতা

ত্রিপুরায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে এইচআইভি মহামারী সংক্রমনের কারণে চাঞ্চল্যতা সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার এই উদ্বেগ জনক খবর প্রকাশ হয় এএনআই নামক সংবাদ সংস্থা দ্বারা । ত্রিপুরায় মোট এইচআইভি সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ৫৬৭৪। তাদের মধ্যে ৯২৪ জন মারা গেছে। ২০০৭ সাল থেকে ২০২৪ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী ত্রিপুরায় ৮২৮ জন স্কুল পড়ুয়া এবং কলেজ পড়ুয়া এইচআইভি দ্বারা সংক্রমিত হয়েছেন যার মধ্যে ৪৭ জন মারা গেছে।

এইচআইভি বা এইডস এই মরণব্যাধি সারা বিশ্বের জন্য এক ত্রাসের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই এইচআইভি ভাইরাস নানান ভাবে শরীরে প্রবেশ করতে পারে যেমন সংক্রমিত রক্ত, অনিরাপদ যৌন মিলন থেকে, সংক্রমিত সুঁচ ব্যবহার করা ইত্যাদি। এইচআইভির লক্ষণগুলির মধ্যে জ্বর, মাথাব্যাথা, ডায়রিয়া, ওজন কমানো, কাশি, নিউমোনিয়া ইত্যাদি।

তবে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এই সংক্রমণ ঠেকানো সম্ভব তা অস্বীকার করার উপায় নেই। ত্রিপুরা রাজ্যে ত্রিপুরা অ্যাড কন্ট্রোল সোসাইটির এই পাদুর্ভাব রোধে ক্রমাগত প্রয়াস জারি রেখেছে। সচেতনতামূলক কর্মসূচি এবং স্ক্রিনিং এর মাধ্যমে এই রোগ প্রতিরোধের চেষ্টা চালাচ্ছে এই কর্মসূচি ১৯৯৯ সাল থেকে শুরু হয়েছে।

ত্রিপুরার ছাত্র জনসংখ্যার মধ্যে একটি গুরুতর এইচআইভির পাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে যা ইনজেকশন ব্যবহারের দ্বারা আরো বেড়েছে। ত্রিপুরা স্টেট এডস কন্ট্রোল সোসাইটি (টিএসএসিএস) কর্মকর্তাদের মতে, ৮২৮ জন শিক্ষার্থী এইচআইভির জন্য ইতিবাচক পরীক্ষা করেছে। যার মধ্যে ৪৭ জন মারা গিয়েছে। ২২০ টি স্কুল এবং ২৪টি কলেজে সংক্রমণটি বিস্তৃত যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে দ্রুত এইচআইভি সংক্রমণের বিষয়টি তুলে ধরে। প্রচেষ্টার মধ্যে রয়েছে রাজ্যব্যাপী স্বাস্থ্য সুবিধা গুলি থেকে ডেটা সংগ্রহ করা এবং ৮,৭২৯ জনকে অ্যান্টি রেট্রোভাইরাল থেরাপি(এআরটি) প্রদান করা।

সচিবালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে ত্রিপুরার এইডস কন্ট্রোল সোসাইটির প্রজেক্ট ডাইরেক্টর ডা. সমর্পিতা দত্ত জানিয়েছেন, ত্রিপুরায় এইচআইভি/এইডস মোকাবিলায় সমস্ত রকমের প্রয়াস জারি রয়েছে। কিন্তু, শিরাপথে মাদক ব্যবহারের প্রবনতা বৃদ্ধি এই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে। তিনি দাবি করেন, প্রতিনিয়ত স্ক্রিনিং এবং সচেতনামূলক কর্মসূচি মাধ্যমে ওই রোগ প্রতিরোধের চেষ্টা চলছে।

ত্রিপুরার এইডস কন্ট্রোল সোসাইটির পক্ষ থেকে সর্বশেষ দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, ঔষধ নিচ্ছেন এমন এইচআইভি সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা আজকে পর্যন্ত ৫৬৭৪ জন। তাদের মধ্যে ৯২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে, শুধু এইচআইভি সংক্রমণের ফলেই তাদের মৃত্যু হয়েছে এমন তথ্য তাদের কাছে উপলব্ধ নেই। সোসাইটির যুগ্ম অধিকর্তার দাবি, এইচআইভি সংক্রমিতের হৃদরোগ, দূর্ঘটনা কিংবা অন্য কোনো রোগ অথবা করোনা আক্রান্ত হয়েও মৃত্যু হয়েছে। ফলে, তার মৃত্যু এইচআইভি সংক্রমণের ফলেই হয়েছে তা এই মূর্হুতে নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়।

এদিকে, এইডস কন্ট্রোল সোসাইটি প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ১৮৪৭ জন নতুন এইচআইভি সংক্রমিত শনাক্ত এবং ৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। তেমনি, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে নতুন ১৭৯০ জন এইচআইভি সংক্রমিত শনাক্ত এবং ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখন পর্যন্ত ওই দুই অর্থবছরেই সবচেয়ে বেশি নতুন এইচআইভি সংক্রমিতের হদিশ মিলেছে। এবিষয়ে সোসাইটির যুগ্ম অধিকর্তার দাবি, ওই দুই বছরে সবচেয়ে বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। তিনি বলেন, ওই দুই বছরে তিন লক্ষ ৭৬ হাজার নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।

About Tuhina Porel

Check Also

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীর্ঘ সময় পর পাকিস্তান সফরে যাচ্ছেন

Asia Monitor18 পাকিস্তান সফরে যাচ্ছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ভারতের কোনো মন্ত্রী শেষবার ২০১৫ সালে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!