হ্যানয়, ৩১ জুলাই ২০২৪ – দক্ষিণ চীন সাগরে আঞ্চলিক জলসীমা নিয়ে চীনের সাথে উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে এবার দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে ভিয়েতনাম। ফিলিপিন্সের পর এবার ভিয়েতনামও এই বিতর্কিত অঞ্চলে নিজেদের সীমানার দাবি জানিয়ে দৃশ্যপটে প্রবেশ করেছে।
দক্ষিণ চীন সাগর বিশাল প্রাকৃতিক সম্পদ, কৌশলগত সামরিক মহাসাগরীয় পথ, এবং মৎস্য সম্পদে সমৃদ্ধ হওয়ায় এই এলাকা দীর্ঘদিন ধরে আঞ্চলিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। চীন দক্ষিণ চীন সাগরের প্রায় সম্পূর্ণ অংশের উপর তাদের সার্বভৌমত্ব দাবি করে আসছে, যা “নাইন-ড্যাশ লাইন” হিসেবে পরিচিত। এই দাবির বিপরীতে ফিলিপিন্স, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ব্রুনাই এবং তাইওয়ানও আঞ্চলিক অধিকার দাবি করে আসছে।
ভিয়েতনামের সরকারী মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেন, “দক্ষিণ চীন সাগরে আমাদের সার্বভৌমত্ব এবং স্বার্থ রক্ষা করার জন্য আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এই অঞ্চলে আমরা শান্তি এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে চাই, তবে একই সাথে আমাদের জাতীয় সীমানা রক্ষা করার অধিকার রয়েছে।”
ভিয়েতনাম সম্প্রতি তাদের সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধি করেছে এবং সমুদ্রতীরে বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প শুরু করেছে। বিশেষ করে, স্প্রাটলি দ্বীপপুঞ্জের আশেপাশে ভিয়েতনাম তাদের সামরিক ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। ভিয়েতনামের এ পদক্ষেপ চীনের জন্য একটি স্পষ্ট সংকেত, যা এই অঞ্চলে তার সামরিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করছে।
চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ভিয়েতনামের এ পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে এবং বলেছে যে তারা এই অঞ্চলে চীনের সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ করার যে কোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। চীনের মুখপাত্র বলেন, “দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের সার্বভৌমত্ব অনস্বীকার্য। আমরা শান্তি চাই, তবে আমাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত।”
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দক্ষিণ চীন সাগরের এ উত্তেজনা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশগুলোও এই অঞ্চলের আঞ্চলিক বিতর্কে যুক্ত রয়েছে এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে তাদের ভূমিকা পালন করছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই উত্তেজনা ভবিষ্যতে বড় আকার ধারণ করতে পারে এবং এ অঞ্চলে নিরাপত্তা পরিস্থিতি অবনতির দিকে যেতে পারে।
ভিয়েতনাম এবং ফিলিপিন্সের দৃঢ় অবস্থান দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের প্রভাব মোকাবিলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এটি দেখায় যে এ অঞ্চলের ছোট দেশগুলোও তাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে সমাধান খুঁজছে।