দিল্লি সফর নিয়ে মঙ্গলবার (জুন ২৫) সকালে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন,শেখ হাসিনা এই দেশকে বিক্রি করে না। আমরা এই দেশ স্বাধীন করেছি, এটা মনে রাখা উচিত।’ একটা দেশের মধ্যে অন্য দেশের ট্রানজিট দিলে কোনো ক্ষতি নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমার একটা প্রশ্ন আছে। বিক্রির ওজনটা কিভাবে করা হয়েছে? কোন কিছু বিক্রি হলেতো ওজন মেপে হয় না? এখনতো ইলেকট্রনিক মেশিন আছে।আগে দাঁড়িপাল্লায় মাপা হত। তো কিসে মেপে বিক্রি হচ্ছে? আর বিক্রিটা হয় কিভাবে?
তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ। মুক্তিযুদ্ধ করে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। যারা এই সমালোচনা করে তাদের জানা উচিত, সারাবিশ্বে একটি মাত্র মিত্র শক্তি যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে, নিজেদের রক্ত ঝরিয়ে এই দেশ স্বাধীন করে দিয়েছে। আমাদের সব মুক্তিযোদ্ধারা সেখানে ট্রেনিং পেয়েছে। বিশ্বে যারাই কোনো যুদ্ধে মিত্র শক্তির সহযোগিতা পেয়েছে, তারা কিন্তু সেই দেশ ছেড়ে কোনোদিন ফেরত যায়নি। এখনো জাপানে আমেরিকান সৈন্য, জার্মানিতে রাশিয়ান সৈন্য আছে। এখানে ভারত ব্যাতিক্রম। তারা মিত্র শক্তি হিসেবে আমাদের পাশে যুদ্ধ করে এসেছে। যখনই জাতির পিতা চেয়েছেন ভারত তাদের সৈন্য দেশে ফেরত নিয়ে গেছে। তারা যুদ্ধের সরঞ্জাম সবকিছু নিয়েই এখানে যুদ্ধে এসেছিলো। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সারেন্ডার করেছিলো তাদের কাছে। কিন্তু আমরা স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র পেয়েছি। কারণ তারা ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করেছে। এরপরেও যারা কথা বলে যে, ভারতের কাছে বিক্রি হয়ে যাবে, সেই বিক্রিটা হয় কিভাবে? সেটাই তো আমার প্রশ্ন।
ভারতের সাথে ওষুধের চুক্তিতে বাংলাদেশে ওষুধের দাম কমবে কি না বা আমাদের দেশের মানুষ কম খরচে চিকিৎসা সেবা পাবে কি না-এমন প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ওষুধ শিল্পের অনেক কাঁচামাল ওখান থেকে আনতে হয়। আর কিছু কিছু ওষুধ আছে, যা এখনো আমরা উৎপাদন করি না। যদিও আমাদের ওষুধ শিল্প অনেক উন্নত এবং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের এক-দেড়শ ওষুধ রপ্তানি করি। এরপরও কিছু কিছু বিশেষ ওষুধ থাকে, যা আমাদের দেশে সেভাবে শিল্প গড়ে ওঠেনি। সেক্ষেত্রে আমাদের দেশের মানুষ লাভবান হবে।
তিনি বাংলাদেশের অনেক মানুষ ভারতে চিকিৎসা নিতে যান। সেজন্য ভিসা সহজে করা যায়, আমরা করে দিয়েছি। আমরা উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা যতো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে পারবো আর যতো বেশি ব্যবসা বাণিজ্য আদান প্রদান হবে, এতে বাংলাদেশই লাভবান হবে।