বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য অত্যাধুনিক ও উচ্চগতির এক্সটার্নাল টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপনের জন্য ৩৭৮ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছিল।
বিশেষ এই টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপনের মাধ্যমে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অফসাইট ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট স্থাপনায় আধুনিক টেলিফোন ও দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা প্রদান করা, জাতীয় পারমাণবিক ও তেজস্ক্রিয়তা বিষয়ক ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রের সঙ্গে রূপপুর কেন্দ্র এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার নিরবচ্ছিন্ন টেলিযোগাযোগব্যবস্থা নিশ্চিত করার কথা ছিল, প্রকল্প সূত্রে জানা গিয়েছে।বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুর আগেই এ ধরনের টেলিযোগাযোগব্যবস্থা স্থাপনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
প্রকল্পের সংশোধন প্রস্তাব সূত্রে জানা গেছে,প্রকল্পের মূল কাজ শুরু হয়নি কারণ অনুমোদিত ডিপিপিতে রুশ পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সেবা গ্রহণের মাধ্যমে যন্ত্রপাতি ক্রয় ও অন্যান্য কার্যক্রম সম্পাদনের উল্লেখ ছিল। কিন্তু বিদ্যমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে রাশিয়ার কোনো প্রতিষ্ঠানকে অর্থ পরিশোধ করার জটিলতার কারণে চুক্তি করা যায়নি।পরবর্তী কালে স্থানীয় পর্যায়ের বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ অনুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হওয়ায় এর মেয়াদ বৃদ্ধিসহ প্রকল্পটি সংশোধন করার কথা বলা হচ্ছে।
প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি দের থেকে জানা গেছে,এই প্রকল্পের অন্যতম মূল অংশ বিভিন্ন সরকারি মালিকানাধীন কম্পানি থেকে অপটিক্যাল ফাইবার লিজ নেওয়ার যে মূল্যতালিকা পাওয়া গেছে তা অনুমোদিত ডিপিপির প্রাক্কলিত ব্যয়ের তুলনায় অনেক বেশি। এ ছাড়া বাস্তব কারণে যন্ত্রপাতিসহ অন্যান্য খাতেও ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে।
জানা গেছে, প্রকল্পটি ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে মার্চ ২০২৪ মেয়াদে ৩৭৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নের কথা ছিল।
তবে প্রকল্পের মূল কাজ শুরুই হয়নি। এখন মেয়াদ দুই বছর তিন মাস বাড়িয়ে জুন ২০২৬ পর্যন্ত এবং প্রাক্কলিত ব্যয় ৩৪৪ কোটি ৯৪ লাখ টাকা বাড়িয়ে ৭২৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা করার জন্য প্রকল্পের প্রথম সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রকল্পের উদ্দেশ্য,৩৭০ কিলোমিটার রাস্তা কাটার ক্ষতিপূরণ, আট বছরের অগ্রিম পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণসংক্রান্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয়, অপটিক্যাল ফাইবার লিজ (রেলওয়ে, পিজিসিবি, বিটিসিএল, স্যাটেলাইট চ্যানেল লিজ) সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয়, স্থানীয় ও বৈদেশিক পরামর্শক সেবা ক্রয়, টেলিযোগাযোগ সরঞ্জাম ক্রয়, বৈদেশিক ও স্থানীয় প্রশিক্ষণ এবং চারটি মোটরযান ভাড়া ও তিনটি মোটরযান ক্রয় করা।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন, এই প্রকল্পটি মূল প্রকল্পের সহায়ক হিসেবে দেশের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। প্রকল্পের প্রয়োজনীয় টেলিযোগাযোগ সুবিধা প্রদান এবং আইসিটি অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট সুবিধা সম্প্রসারণে কার্যকর ভূমিকা রাখবে এই প্রকল্প।