মালয়েশিয়া যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান প্রতিযোগিতার মাঝে একটি ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করছে। চীনকে একটি প্রধান অর্থনৈতিক সহযোগী হিসেবে বিবেচনা করার পাশাপাশি, মালয়েশিয়া দক্ষিণ চীন সাগরের সীমান্ত বিরোধ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্কের উন্নতির ক্ষেত্রে একটি সাবধানী মনোভাব অবলম্বন করছে। এটি একটি কৌশলগত নীতি যা মালয়েশিয়াকে দুই প্রধান শক্তির সাথে সম্পর্ক বজায় রাখতে সহায়তা করতে পারে, তবে এটি একটি ঝুঁকিপূর্ণ বাজি, কারণ বড় শক্তিগুলি এই অবস্থানে সন্তুষ্ট নাও থাকতে পারে।
চীনের সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি:
জুন মাসে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং মালয়েশিয়া সফর করেন এবং একাধিক চুক্তি স্বাক্ষর করেন, যার মধ্যে একটি পাঁচ বছরের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা চুক্তির পুনর্নবীকরণ অন্তর্ভুক্ত ছিল।
লি এবং আনোয়ার পূর্ব উপকূল রেল লিঙ্ক (ECRL) এর একটি ট্রেন স্টেশনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন, যা চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প।
মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক লাভ:
চীন ২০০৯ সাল থেকে মালয়েশিয়ার শীর্ষ বাণিজ্যিক পার্টনার। মালয়েশিয়া ডিজিটাল অর্থনীতি, আবাসন এবং শহুরে উন্নয়ন, ট্রান্সন্যাশনাল অপরাধ মোকাবেলা, উচ্চ শিক্ষা, পর্যটন এবং সাংস্কৃতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে চীনের সাথে চুক্তি করেছে। মালয়েশিয়া সম্প্রতি ‘BRICS’ ব্লকের সদস্য হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে, যেখানে চীন একটি মূল সদস্য।
দক্ষিণ চীন সাগরের উত্তেজনা:
চীন দক্ষিণ চীন সাগরের প্রায় পুরো অংশের দাবি করে, যদিও ২০১৬ সালের আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল এই দাবিগুলিকে আইনগতভাবে ভিত্তিহীন ঘোষণা করেছে। মালয়েশিয়া আগের সরকারে চীনের দাবিকে “অবিচারপূর্ণ” বলে অভিহিত করেছিল, তবে বর্তমান সরকার এই বিষয়টি নিয়ে কম আলোচনা করছে।
যুক্তরাষ্ট্র-চীন প্রতিযোগিতা:
২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্র চীনে উন্নত সেমিকন্ডাক্টর চিপের রপ্তানি নিষিদ্ধ করে, যা চীনের উচ্চ প্রযুক্তির সামরিক সিস্টেম তৈরিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে। এতে মালয়েশিয়ার চীনে সেমিকন্ডাক্টর রপ্তানি যুক্তরাষ্ট্র-মালয়েশিয়া সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে পারে।
আনোয়ার ইব্রাহিম যুক্তরাষ্ট্রের চাপের প্রতি সংবেদনশীল নন এবং তিনি জানিয়েছেন যে মালয়েশিয়া সব দেশের সাথে বাণিজ্য করবে।