জাপানে মোতায়েন মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে, যা নিয়ে জাপানের জনগণ ও সরকার ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। সম্প্রতি একাধিক অভিযোগ সামনে আসায় দেশটির বিভিন্ন মহল থেকে প্রতিবাদ ও তদন্তের দাবি উঠেছে।
জাপানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ওকিনাওয়া ও অন্যান্য অঞ্চলে মোতায়েন মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক যৌন নিপীড়নের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এই অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে ধর্ষণ, যৌন হয়রানি এবং অসদাচরণের ঘটনা।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা এক বিবৃতিতে বলেন, “এই ধরনের আচরণ সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য এবং আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা মার্কিন সরকারের সাথে যৌথভাবে এই অভিযোগগুলোর তদন্ত করছি এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ওকিনাওয়ার গভর্নর ডেনি তামাকি বলেন, “আমাদের কমিউনিটি এই ধরনের আচরণের শিকার হতে পারে না। আমরা আমাদের জনগণের সুরক্ষা ও মর্যাদা রক্ষার জন্য সব রকমের পদক্ষেপ নেব।” ওকিনাওয়ায় মার্কিন সামরিক উপস্থিতি দীর্ঘদিন ধরে বিতর্কিত এবং স্থানীয় জনগণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগও এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে তারা জানায়, “আমরা এই অভিযোগগুলোকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছি এবং জাপান সরকারের সাথে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছি। আমাদের নীতি অনুযায়ী, কোনও ধরনের অসদাচরণ ও যৌন নিপীড়নের জন্য শূন্য সহিষ্ণুতা রয়েছে।”
জাপানের সাধারণ জনগণও এই ঘটনাগুলো নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা মার্কিন বাহিনীর সদস্যদের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের জন্য দোষারোপ করে এবং তাদের দ্রুত বিচার দাবি করে।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে জাপান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের ঘটনা দুই দেশের মধ্যে সামরিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ককে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
বর্তমানে যৌথ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জাপান সরকার আশ্বাস দিয়েছে যে, তারা কোনও ধরনের পক্ষপাতিত্ব ছাড়া সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করবে। তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।