স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথমবার নিষিদ্ধ হওয়ার ৫০ বছরের বেশি সময় পরে আবার নিষিদ্ধ হলো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় বিরোধীতাকারী রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী।
কোটা আন্দোলনের জেরেই তৃতীয় বারের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে ওই দলের উপর। বৃহস্পতিবার হাসিনা সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এই ঘোষণার গেজেট প্রকাশ করেছে। এ দিন সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে কোটা আন্দোলনের সংঘর্ষ, হত্যাযজ্ঞ, ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সরাসরি এবং উস্কানিতে জড়িত ছিল এই দল।
বৃহস্পতিবার হাসিনা সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এই ঘোষণার গেজেট প্রকাশ করেছে। এ দিন বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নিরাপত্তা বিভাগ থেকে জানানো হয়, সরকারের কাছে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ রয়েছে যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং এর শাখা সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সম্প্রতি সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ, ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সরাসরি এবং উস্কানিতে জড়িত ছিল। সরকার বিশ্বাস করে, জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির-সহ সব শাখা সংগঠন জঙ্গি কার্যকলাপে জড়িত।
স্বাধীনতার পর সাধারণ ক্ষমার আওতায় জামায়াতের কিছু নেতাকর্মী কারাগার থেকে বেরিয়ে এলেও দল হিসেবে জামায়াত নিষিদ্ধ ছিল বহু বছর।পরে ১৯৭৬ সালে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হলে আরো কয়েকটি ধর্মভিত্তিক দল মিলে ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগ (আই.ডি.এল) নামের একটি রাজনৈতিক প্লাটফর্মের ব্যানারে জামায়াতে ইসলামী তৎপরতা শুরু করে। যদিও রাজনীতিতে সরাসরি সক্রিয় হতে শুরু করে আরো তিন বছর পরে।
“নিষিদ্ধ থাকার সময়ে এই দলের নেতারা অনেকে আটক বা আন্ডারগ্রাউন্ডে ছিলো। আর যারা বাইরে ছিলেন তারা আইডিএলে সম্পৃক্ত থেকে সংগঠন গুছিয়েছেন। ১৯৭৯ সালে জামায়াত ইসলামী সরাসরি রাজনীতি করার সুযোগ পায়। পরবর্তীতে আরও সুসংগঠিত হতে পেরেছে কারণ তারা ক্যাডার ভিত্তিক দল বলে নেতারা যেভাবে বলে কর্মীরা সেভাবেই অ্যাক্ট করে,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন নয়া দিগন্ত পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সালাহউদ্দিন বাবর।জামায়াতে ইসলামীর ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ১৯৭৯ সালের সংসদ নির্বাচনে আইডিএল- এর ব্যানারে জামায়াতে ইসলামীর ছয় জন এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন।