সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিস্তারের ফলে ইনফ্লুয়েন্সারদের ভূমিকা ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে যুবসমাজের উপর তাদের প্রভাব অপরিসীম। বাংলাদেশেও এ প্রভাবের ব্যতিক্রম নয়। তবে, এই প্রভাব সবসময় ইতিবাচক না হয়ে নেতিবাচকও হতে পারে। বাংলাদেশের অন্যতম আলোচিত ইনফ্লুয়েন্সার পিনাকী ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ উঠেছে যে, তিনি যুবসমাজকে বিপথে চালিত করছেন।
পিনাকী ভট্টাচার্য তার বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতামত প্রকাশ করে থাকেন। তবে, তার কিছু বক্তব্য ও কার্যক্রম নিয়ে সম্প্রতি ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, তার কিছু বক্তব্য ও কর্মকাণ্ড যুবসমাজের মধ্যে ভুল ধারণা ও নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করছে।
যুবসমাজের উপর ইনফ্লুয়েন্সারদের প্রভাব অত্যন্ত শক্তিশালী। তারা সহজেই এই প্রভাবশালীদের বক্তব্য ও কর্মকাণ্ড দ্বারা প্রভাবিত হন এবং সেটি অনুসরণ করার চেষ্টা করেন। পিনাকী ভট্টাচার্যের মতামত ও বক্তব্যে কখনও কখনও সামাজিক, রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় বিষয়ে উস্কানিমূলক এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশ পাওয়া যায়। এর ফলে, যুবসমাজের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে এবং তারা ভুল পথে পরিচালিত হচ্ছে।
এ ধরনের পরিস্থিতি সমাজের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ। যুবসমাজের মধ্যে বিভ্রান্তি এবং নেতিবাচক প্রভাব সামাজিক অস্থিরতা বৃদ্ধি করতে পারে। এ ধরনের অবস্থায়, আমাদের সকলের উচিত দায়িত্বশীল আচরণ করা এবং তথ্য যাচাই করে সঠিক তথ্য প্রচার করা।
প্রথমত, ইনফ্লুয়েন্সারদের উচিত তাদের বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলা। তাদের উচিত তথ্য যাচাই করে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ তথ্য প্রচার করা এবং উস্কানিমূলক বা বিভ্রান্তিকর তথ্য এড়িয়ে চলা।
দ্বিতীয়ত, সরকারের উচিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত বিভ্রান্তিকর ও উস্কানিমূলক তথ্যের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে এ ধরনের কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।
তৃতীয়ত, সমাজের প্রতিটি স্তরে সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। যুবসমাজকে তথ্য যাচাইয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করতে হবে এবং তাদেরকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সঠিক ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
যুবসমাজ দেশের ভবিষ্যৎ। তাদেরকে সঠিক পথে পরিচালিত করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। পিনাকী ভট্টাচার্যের মত ইনফ্লুয়েন্সাররা যদি তাদের প্রভাবের মাধ্যমে যুবসমাজকে ভুল পথে পরিচালিত করেন, তবে সেটি আমাদের সবার জন্যই ক্ষতিকর। সমাজের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় যুবসমাজকে সঠিক দিকনির্দেশনা দেওয়া এবং তাদের মধ্যে সঠিক তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করা আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।
আমাদের বিশ্বাস, যৌথ প্রচেষ্টায় আমরা এই সমস্যার সমাধান করতে পারব এবং একটি সুস্থ, সুন্দর ও সমৃদ্ধ সমাজ গড়ে তুলতে সক্ষম হব।