১৩ ই জুলাই শনিবার ঘড়িতে তখন সন্ধ্যা ৬’টা বেজে ১৫ মিনিটে নির্বাচনী প্রচার অভিযানের বক্তৃতা সবেমাত্র শুরু করতেই ৭৮ বছর বয়সী প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ড্রোনাল্ড ট্রাম্প গুলিবিদ্ধ হয়।
পিটসবার্গ থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার উত্তরে পেনসিলভানিয়ার বাটলারে নির্বাচনী প্রচারণায় গিয়েছিলেন ট্রাম্প।ট্রাম্প নিজের বক্তৃতা শুরু করেছে কী ঠিক তখনই তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে বন্দুকধারী আততায়ী। সঙ্গে সঙ্গেই সিক্রেট সার্ভিস এজেন্ট ও নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে ঘিরে ফেলে, কোনো লাভ হয়নি তাতে, কারণ ততক্ষণে গুলি তার কান ভেদ করে চলে যায়। এবং সঙ্গে সঙ্গেই তিনি কানে ডান হাত চাপা দিয়ে মঞ্চেই বসে পড়েন।প্রায় মিনিট খানেক পরে ট্রাম্প উঠে দাঁড়ান।এই ঘটনা নিয়ে চারপাশে উত্তেজনা ছড়ায়।
হামলার পরপরই দ্রুত একটি গাড়িতে করে ট্রাম্পকে হাসপাতালে নিয়ে যান সিক্রেট সার্ভিসের সদস্যরা। ট্রাম্পের ডান কান ফুটো হয়েছে। তবে তেমন কিছু গুরুতর নয় জখম হয়নি। তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দিয়েছে, জানিয়েছে ব্লুমবার্গ।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হামলাকারীর নাম প্রকাশ করেছে। হামলাকারীর নাম থমাস ম্যাথিউ ক্রুকস। তার বয়স মাত্র ২০ বছর। মার্কিন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ভোটার কার্ডের তথ্য অনুযায়ী ক্রুকস রিপাবলিকান দলের তালিকাভুক্ত একজন সদস্য ছিলেন। এফবিআই জানিয়েছে, ক্রুকসের কাছে কোনও আইডি কার্ড ছিল না। তাই তার পরিচয় শনাক্ত করতে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গুলি হওয়ার আগে পর্যন্ত আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলির জানা ছিল না যে, সমাবেশের পাশের ভবনের ছাদে কেউ আছে, যে কিনা তার লক্ষ্য স্থির রেখেছিল ট্রাম্পের দিকে। ট্রাম্পের কাছ থেকে ২০০ মিটারেরও কম দূরত্বের একটি ছাদ থেকে গুলি করে। বন্দুকধারীকে হত্যা করতে একটি সিক্রেট সার্ভিস স্নাইপার পাল্টা গুলি চালান।
ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন শীর্ষস্থানীয় রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাট নেতারা।হামলার পর ট্রাম্পের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কথা বলেছেন বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা। ট্রাম্প নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প বলেছেন, ‘এটা অবিশ্বাস্য যে আমাদের দেশে এ রকম একটি ঘটনা ঘটেছে।’
নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেওয়া সমর্থকদের মধ্যে একজন নিহত ও আরও দুইজন আহত হয়েছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই জানিয়েছেন, একটি গুলি আমার ডান কানের ওপরের অংশে লেগেছে। হঠাৎ শব্দ হলো এবং রক্তক্ষরণ হতে শুরু করলো। সমর্থকদের একজন গুলিতে নিহত হয়েছেন, তার পরিবারের প্রতিও সমবেদনা জানিয়েছেন ট্রাম্প।
ট্রাম্পের প্রচার শিবির জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহে তিনি রিপাবলিকান ন্যাশনাল কনভেনশনে যোগ দেবেন।
এক বিবৃতিতে বাইডেন জানিয়েছেন, ‘আমেরিকাতে এই ধরনের সহিংস্রতার কোনো স্থান নেই। এর নিন্দা জানাতে আমাদের অবশ্যই এক জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
আগামী ৫ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তার আগে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় মার্কিন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনার পর নিরাপত্তা রক্ষীদের ব্যর্থতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।