এই চিনা চন্দ্রযানটি হল ‘চাং’এ-৬’। এটি চীনের সবচেয়ে বড় রকেট, রকেটটির নাম ‘লং মার্চ- ৫’। রকেটি দেশের দক্ষিণে হায়ানান দ্বীপের ‘ওয়েনচাং স্পেস লঞ্চ সেন্টার’ থেকে বিকাল ৫টা ২৭ মিনিটে চাঁদের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেয় এই চন্দ্রযানটি। চীনের জাতীয় মহাকাশ দপ্তর (সিএনএসএ) জানিয়েছে, উৎক্ষেপনের সময় বিজ্ঞানীদের পাশাপাশি, কূটনীতিক, দেশের শীর্ষস্থানীয় আধিকারিকেরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ছিলেন ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (এএসএ) ও ফ্রান্স, ইতালি, পাকিস্তানের মহাকাশ বিশেষজ্ঞরা। এই সব ক’টি দেশের গবেষণাকারী-পেলোড (যন্ত্র) নিয়ে গিয়েছে ‘লং মার্চ-৫’। ‘চাং’এ-৬’ অভিযানে যুক্ত রয়েছেন ফরাসি গবেষক পিয়ের-ইভ মেসল্যাঁ। তিনি বলেন, ‘‘এত অল্প সময়ে চিন যে ভাবে এমন উচ্চাকাঙ্ক্ষী ও সফল অভিযানে পা দিল তা রহস্যময়।’’
সিএনএসএ-র চন্দ্র-অভিযানের ডেপুটি ডিরেক্টর গে পিং জানান, এই অভিযানে আমেরিকার কোনও সংস্থা অংশ নেয়নি। কারণ, আমেরিকার আইনে বেজিং-এর সঙ্গে নাসা (আমেরিকান মহাকাশ গবেষণা সংস্থা)-র কোনও প্রকার যৌথ অভিযান নিষিদ্ধ।
চাং’এ-৬ অবতরণ করবে চাঁদের দূরতম প্রান্তে। উপগ্রহের দক্ষিণ মেরুর অ্যাটকেন বেসিনে। এই অংশ পৃথিবীর থেকে দেখতে পাওয়া যায় না। অভিযানের লক্ষ্য, অবতরণস্থল থেকে ২ কেজি মাটি ও পাথর সংগ্রহ করা ও পরীক্ষা করা। ইএসএ-র টেকনিক্যাল অফিসার নেল মেলভিল-কেনি। তিনি বলেন, ‘‘চাঁদের দূরতম ওই প্রান্ত এখনও মানুষের চোখে এক রহস্যময় স্থান। কারণ, আমরা কোনও দিনও ওই জায়গাটা পৃথিবী থেকে দেখতে পাইনি। যেটুকু দেখেছি, সেটা কোনও রোবোটিক প্রোবের পাঠানো ছবিতে।’’
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, রকেট থেকে চন্দ্রযানটি বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরে ৪ থেকে ৫ দিন লাগবে চাঁদে পৌঁছতে। জুন মাসে চাঁদে অবতরণ করবে। চন্দ্রযানটি তারপর দু’দিন ধরে মাটি খুঁড়ে নমুনা সংগ্রহ করবে এবং পৃথিবীর উদ্দেশে রওনা দেবে। সব পরিকল্পনামাফিক চললে পৃথিবীতে ফিরে মঙ্গোলিয়ায় নামবে চিনের যানটি।