চীন সম্প্রতি ঋণ-দুর্দশাগ্রস্ত আফ্রিকান দেশগুলিতে ৫১ বিলিয়ান আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে,যা একটি নতুন ঋণ ফাঁদ হতে পারে বলে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এই বিশাল প্রতিশ্রুতি আফ্রিকাতে চীনের প্রভাব বাড়ানোর প্রচেষ্টার অংশ, যা অবকাঠামো প্রকল্প, ঋণ এবং বিনিয়োগের মাধ্যমে সম্পন্ন হচ্ছে এবং এর মূল অংশ হলো বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই)। বেইজিংয়ে চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা শীর্ষ সম্মেলনে ফোরামে এই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
এই প্রতিশ্রুতির লক্ষ্য উচ্চ ঋণ সহ অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন আফ্রিকান দেশগুলিকে সমর্থন করা। সমর্থকরা যুক্তি দেন যে এই আর্থিক সহায়তা প্রবৃদ্ধি (অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি বলতে মোট দেশজ উৎপাদনের বর্ধিত অংশের শতকরা মানকে বোঝায়) উদ্দীপিত করতে পারে, অবকাঠামো উন্নত করতে এবং বেকারত্ব কমাতে সাহায্য করবে, যা অঞ্চলের দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।
সমালোচকরা উদ্বিগ্ন যে মূলধনের এই নতুন প্রবাহ বিদ্যমান ঋণ সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। অনেক আফ্রিকান দেশ ইতিমধ্যেই ব্যাপকভাবে ঋণগ্রস্ত, অতিরিক্ত ঋণের ফলে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরী হতে পারে। কিছু আফ্রিকান দেশ পূর্বের চীনা ঋণের পরিশোধই এখনও করতে পারেনি।যার ফলে একটি “ঋণ ফাঁদ”এ জড়িয়ে পরার আশঙ্কা করা হচ্ছে,যেখানে দেশগুলি ঋণ গ্রহণ এবং পরিশোধের চক্রে আটকে যেতে পারে।
আফ্রিকায় চীনের ভূমিকাকে প্রায়শই সম্পদের অ্যাক্সেস সুরক্ষিত করতে এবং তার ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব প্রসারিত করার কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হয়। নতুন ঋণের শর্তাবলী, সুদের হার এবং পরিশোধের সময়সূচী এই ঋণ সমস্যা কমাতে বা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই নতুন আর্থিক সহায়তা আফ্রিকান দেশগুলিকে আরও ঋণ সঙ্কটে যাতে না পরে, তা নিশ্চিত করার জন্য স্বচ্ছতা এবং দায়িত্বশীল ঋণদান অপরিহার্য।
চীন এবং প্রাপক দেশ উভয়ের জন্যই বিদ্যমান আর্থিক চ্যালেঞ্জগুলিকে এড়াতে সাবধানতার সাথে এই ঋণদান পরিচালনা করা গুরুত্বপূর্ণ।