টানা ৩বার প্রধানমন্ত্রী হবার কুর্সির পথে নরেন্দ্র মোদী। তবে নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হলেও, এতে বাংলাদেশের জনগণের বা শেখ হাসিনা সরকারের খুব একটা সুবিধার সম্ভাবনা আছে তা বলা যায় না।
ভারতের ১৮ তম জাতীয় নির্বাচনের ফলাফল ঘোষিত হয়েছে মঙ্গলবার, মোট আসন ৫৪৩ টি। যার মধ্যে নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি অর্থাৎ বিজেপি এর নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট(এনডিএ) ২৯০ টিরও বেশি আসনে বিজয়ী হয়।
তবে ভারতীয় নির্বাচনী আইন অনুযায়ী সরকার গঠন যদি করতে হয়, তাহলে কমপক্ষে ২৭২ টি আসনের প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে বিজেপি একক দল হিসেবে ২৪০ টি আসনে জয়ী হয়েছে। এই নির্বাচনে বিজেপি বিরোধী দল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোট জয়ী হয়েছে ২৩২ টি আসনে, কংগ্রেস এককভাবে জিতেছে ৯৯ টি আসনে।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা বাংলাদেশের শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বিভিন্ন অভিযোগ জানিয়ে আসছে, সেগুলি হল- কর্তৃত্ববাদী নীতি অনুসরণ, সাংবাদিক ও সমালোচকদের গ্রেপ্তার, গণমাধ্যমের উপর নিয়ন্ত্রণ, বিরোধীদের সরিয়ে ফেলা, মানবাধিকার লঙ্ঘন ইত্যাদি।
জাতীয় নির্বাচনে জয়লাভের পর গত ১৮ জানুয়ারি ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণব কুমার ভার্মার সঙ্গে এক বৈঠকের শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন , ভারত ও বাংলাদেশের “বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে সংশয় আর অবিশ্বাসের দেয়াল ভেঙ্গে দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভবিষ্যতেও ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কে চিড় ধরার কোনো কারণ দেখছি না।”
জাতীয় সংসদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, “নরেন্দ্র মোদি ইতিমধ্যেই প্রমাণ করেছেন, তিনি দক্ষিণ এশিয়ার নেতা। আমরা তাঁর বিজয়ে খুশি”।
দিলারা চৌধুরীর মতে, “মোদির দীর্ঘ শাসনামলে দেখা গেছে, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক মানুষে মানুষে নয়, বরং দল হিসেবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বেশি ঘনিষ্ঠ ছিল।”
রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক দেবজ্যোতি চন্দ বলেন, বিজেপি এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ভারত এবার “একটি শক্তিশালী বিরোধী দল” পেতে যাচ্ছে বলে বুধবার বেনারের কাছে মন্তব্য করেন।
পূর্বের দুটি লোকসভা ভোটে কংগ্রেস জয়ী হতে না পারলেও এই লোকসভা ভোটে প্রায় ১০০ টি আসনে জয় লাভ করে দলটি। ‘পুনরুত্থানের ইঙ্গিত’ বলে এক প্রতিবেদনে মন্তব্য করে, টাইমস অফ ইন্ডিয়া। বিজেপির আধিপত্যের জন্য” একটি শক্তিশালী চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে বলে মনে করা হচ্ছে।