বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে সরকার দেশের সব স্কুল ও কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে। কোটা পদ্ধতির সংস্কার চেয়ে শুরু হওয়া ছাত্র আন্দোলনে এখনও পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং বহু ছাত্র-ছাত্রী ও নিরাপত্তাকর্মী আহত হয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের নেতৃত্বে শুরু হওয়া এই আন্দোলন ক্রমশ দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি সংস্কার করে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। আন্দোলনকারীরা মনে করেন যে বর্তমান কোটা ব্যবস্থা মেধাবীদের প্রতি অবিচার করছে এবং এতে মেধা ভিত্তিক প্রতিযোগিতার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
সরকার বিক্ষোভকারীদের আশ্বাস দিলেও, তারা এতে সন্তুষ্ট হতে পারেনি। ফলে বিক্ষোভ আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেটসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভকারীরা রাস্তাঘাট অবরোধ করে রেখেছে। এর ফলে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে এবং জনজীবন স্তব্ধ হয়ে পড়েছে।
পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ফলে বেশ কিছু জায়গায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার ঢাকাসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শহরে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করেছে। এছাড়া, ইন্টারনেট সেবা সীমিত করা হয়েছে যাতে ভুল তথ্য ও গুজব ছড়িয়ে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত না হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, “পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত দেশের সব স্কুল ও কলেজ বন্ধ থাকবে।” এ সিদ্ধান্তের ফলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে, যা নিয়ে অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন।
সরকার ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে। সরকার কোটা পদ্ধতি পুনর্বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে, তবে বিক্ষোভকারীরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যতক্ষণ না তাদের দাবি মেনে নেওয়া হয়।
বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের স্থিতিশীলতা নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। দেশবাসী শান্তিপূর্ণ সমাধানের আশায় আছে, যাতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা পুনঃস্থাপিত হয় এবং শিক্ষার্থীরা তাদের পড়াশোনায় ফিরতে পারে।