প্রেক্ষাপট
বর্তমান বিশ্বে চীনের প্রভাবশালী অর্থনৈতিক ও কৌশলগত উদ্যোগগুলির মধ্যে অন্যতম হলো বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (BRI)। এই প্রকল্পের মাধ্যমে চীন বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশে বড় মাপের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করছে, যা মূলত ঋণ সহায়তার মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। এই উদ্যোগের ফলে অনেক দেশই চীনের ঋণের ফাঁদে পড়েছে, যার মধ্যে শ্রীলঙ্কা অন্যতম। বর্তমান পরিস্থিতিতে নেপালও শ্রীলঙ্কার মতো চীনের ঋণের ফাঁদে পড়ে দেউলিয়া হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
নেপালের ঋণের বর্তমান অবস্থা
নেপাল বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে যোগ দিয়েছে এবং চীনের কাছ থেকে বড় অঙ্কের ঋণ গ্রহণ করেছে। এসব ঋণ মূলত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় করা হয়েছে, যেমন রাস্তা, ব্রিজ, এবং শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ। কিন্তু এই প্রকল্পগুলির অনেকগুলিই আর্থিকভাবে লাভজনক নয় এবং ঋণের বোঝা ক্রমশ বাড়ছে।
শ্রীলঙ্কার উদাহরণ
শ্রীলঙ্কার উদাহরণ উল্লেখ না করলেই নয়। শ্রীলঙ্কা চীনের কাছ থেকে বিশাল অঙ্কের ঋণ গ্রহণ করে হাম্বানটোটার মতো বড় প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছে। কিন্তু প্রকল্পগুলির লাভজনকতা না থাকায় শ্রীলঙ্কা সেই ঋণ শোধ করতে পারছে না এবং শেষমেষ হাম্বানটোটা বন্দরটি ৯৯ বছরের জন্য চীনের কাছে ইজারা দিতে বাধ্য হয়েছে। এই ধরনের পরিস্থিতির কারণে শ্রীলঙ্কা আজ দেউলিয়া হওয়ার পথে।
নেপালের সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ
নেপালের অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন যে, চীনের ঋণের বোঝা বাড়তে থাকলে নেপালের অর্থনৈতিক অবস্থাও শ্রীলঙ্কার মতো হতে পারে। ইতিমধ্যে নেপালের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে চলেছে। এছাড়া, নেপালের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং দুর্নীতিও অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উপসংহার
নেপাল যদি চীনের ঋণের ফাঁদ থেকে বের হতে না পারে, তাহলে শ্রীলঙ্কার মতোই তাদেরও দেউলিয়া হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এজন্য নেপালের উচিত তাদের অর্থনৈতিক নীতি পুনর্বিবেচনা করা এবং বিকল্প অর্থায়ন উৎস খোঁজা। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক মহলেরও উচিত উন্নয়নশীল দেশগুলিকে চীনের ঋণের ফাঁদ থেকে রক্ষা করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।