আগামী ৮ জুলাই তিন দিনের সফরে চীনের রাজধানী বেইজিং যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । মাত্র কয়েক দিন আগে তিনি ভারত সফর করে এসেছেন। ভারতের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকে চীনের প্রসঙ্গও উঠেছিল। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, ঢাকার সঙ্গে বেইজিংয়ের সম্পর্ক নিয়ে ‘নিশ্চিন্ত’ হতে চায় নয়াদিল্লি। এ অবস্থায় সফরকালে নয়াদিল্লি-বেইজিংয়ের মধ্যে ভারসাম্য আনার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা রয়েছে ঢাকার কর্মকর্তাদের মধ্যে।
চীন বন্ধু ও উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলেও জানান চীনা মন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে ৫০ বছরের গভীর বন্ধুত্ব রয়েছে। আমরা দুই দেশই আরও গভীরভাবে সম্পৃক্ততা চাই। অবকাঠামো উন্নয়ন, কৃষি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ইত্যাদি খাতে দুই দেশ সহযোগিতা বাড়াতে চায়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সফরে এসব বিষয়ে ফলাফল বয়ে আনবে।
চীন যে প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফরকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে এবং রাজনৈতিকভাবে দুই দেশের সম্পর্ককে নিবিড় করতে চায়, সেটা সিপিসির নেতা লি জিয়ানছাওয়ের কথায় স্পষ্ট। গতকাল সোমবার দুপুরে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে আলোচনার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
লি জিয়ানছাও বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বিস্তৃত ও ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। দুই সপ্তাহের মধ্যে অনুষ্ঠেয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেইজিং সফরের দিকে তাকিয়ে রয়েছে চীন।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর ব্যাপারে আমরা বলেছি। আমরা বলেছি, ওষুধ, চামড়া ও সিরামিক পণ্যগুলো তারা আমাদের থেকে নিতে পারে।’ বাংলাদেশের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল নিয়ে প্রধানমন্ত্রী চীন সফরে যাচ্ছেন বলেও জানান ড. হাছান মাহমুদ।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীনের সহায়তা চাওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে চীনের সহায়তা চেয়েছি। আমরা গাজা ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছি। এ ব্যাপারে আমরা চীনকে অ্যাকটিভ রোল প্লে করার প্রত্যাশা করি।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের মতে, চীন দেখছে, টানা চারবার ক্ষমতায় থাকার মাধ্যমে বাংলাদেশে একটি ক্ষমতাসীন দল রাজনৈতিক দিক থেকে একটি স্থিতিশীলতা তৈরি করেছে। এই পরিস্থিতিতে দেশটি বাংলাদেশের সঙ্গে বৃহত্তর রাজনৈতিক সহযোগিতায় মনোযোগ দিচ্ছে।
জানতে চাইলে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিপিসির আন্তর্জাতিক বিভাগের মন্ত্রীর ঢাকা সফরের মধ্য দিয়ে স্পষ্ট যে রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরদারে তাদের বিশেষ আগ্রহ রয়েছে। কারণ, সিপিসির চিন্তাভাবনার প্রতিফলন ঘটে সরকারের নীতি কৌশলে। ফলে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে যেভাবে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চায়, সেভাবে এগিয়ে যেতে আমরা তৈরি কি না, সেটা নিজেদের প্রস্তুতির ওপর নির্ভর করছে।’