স্থানীয় সময় সকাল ছয়টা ঠিক তখনই ঘটে ভয়ংকর এক দুর্ঘটনা, কুয়েতের মাঙ্গাফ শহরের একটি শ্রমিক আবাসন ভবনে আগুন লাগে যেখানে মোট ৪৯ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ৪০ জন ভারতীয় এবং ৫০ জন আহত হয়েছে, বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর। ভারতীয় ছাড়াও নিহতদের মধ্যে পাকিস্তান, ফিলিপাইন, মিশর ও নেপালের বাসিন্দাও আছে বলে জানা গেছে।
ছয় তলা বিল্ডিংয়ের একটি রান্নাঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়, এমনটাই জানান কর্মকর্তারা, সেই আবাসন টিতে প্রায় ১৯৫ জন লোক বাস করত এবং তারা সকলেই একই কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। আধিকারিকরা জানিয়েছেন, বাসিন্দারা সবাই ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন। ধোঁয়ার মধ্যেই শ্বাসরুদ্ধ হয়ে বেশিরভাগ জনের মৃত্যু হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন প্রাণ বাঁচাতে বাসিন্দাদের অনেকেই জানলা দিয়ে ঝাঁপ দিয়েছিলেন কিন্তু তারা প্রাণে বাঁচেননি।
আহতদের কুয়েতের আদান, জাবের, ফারওয়ানিয়া, মোবারক আল কাবীর ও জাহরা নামক পাঁচটি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মতে, ভর্তি হওয়া রোগীদের বেশিরভাগই স্থিতিশীল।
ভারতীয় রাষ্ট্রদূত আদর্শ সোয়াইকা যে ভবনে আগুন লেগেছিল সেই স্থান পরিদর্শন করেছিল এবং আহতদের সাথে বিভিন্ন হাসপাতালে দেখা করেছেন।
বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে যে কুয়েতে ভারতীয় দূতাবাস স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করছে এবং পরিবারের সদস্যদের জন্য একটি হেল্পলাইন নম্বর +৯৬৫-৬৫৫০৫২৪৬ (হোয়াটসঅ্যাপ এবং নিয়মিত কল) তৈরি করা হয়েছে । স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রের খবর কুয়েতের সময় ভোর ৪:৩০ নাগাদ আদতে আগুনটি লাগে এবং ছটা নাগাদ দমকলের কাছে খবর পৌঁছায়। সময়ের এই ব্যবধান নিয়েও উঠছে নানান প্রশ্ন।
কুয়েত টাইমস জানিয়েছে যে, শেখ ফাহাদ আল-ইউসুফ আল-সাবাহ, প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী ভবনের মালিক এবং দারোয়ানকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন। কুয়েতের আমির শেখ মেশাল আল-আহমদ আল-জাবের আল-সাবাহ কর্তৃপক্ষকে আগুনের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং বলেছেন যে এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার বাসভবনে একটি উচ্চ-পর্যায়ের পর্যালোচনা সভা করেছেন এবং যারা মারা গেছেন তাদের প্রত্যেকের পরিবার পিছু ২ লাখ করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন। তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।
বিদেশ মন্ত্রক বলেছে যে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে, রাজ্যের মন্ত্রী শ্রী কীর্তি বর্ধন সিং অবিলম্বে কুয়েতে যাচ্ছেন “মৃতদেহের দ্রুত প্রত্যাবাসনের পাশাপাশি আহতদের চিকিৎসা সহায়তার জন্য”।
বিদেশ মন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর তার কুয়েতের প্রতিপক্ষ আবদুল্লাহ আলী আল-ইয়াহিয়ার সাথে কথা বলেছেন যিনি তাকে সেখানকার কর্তৃপক্ষের প্রচেষ্টা সম্পর্কে আপডেট করেছেন। “আশ্বস্ত করা হয়েছিল যে ঘটনাটি সম্পূর্ণভাবে তদন্ত করা হবে এবং সেই দায় স্থির করা হবে,” মিঃ জয়শঙ্কর এক্স-এ বলেছিলেন, তিনি আরও বলেছেন যে তিনি যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের মৃতদেহ দ্রুত প্রত্যাবাসনের আহ্বান জানিয়েছেন।