একটি গাছ বা খুঁটিকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁর বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের হামছাদী গ্রামে গতকাল মঙ্গলবার শেষ দিনে জমে ওঠে ‘পাগলা গাছের মেলা’।প্রতিবছর ৩১ বৈশাখ থেকে ২ জ্যৈষ্ঠ পর্যন্ত এই মেলাটি হয়ে থাকে।স্থানীয়দের কাছে এটি পাগলা গাছের মেলা হিসেবে পরিচিত।
এলাকাবাসী জানায়, ৫০০ বছর আগে হামছাদী গ্রামের দুই ভাই ফনি সেন ও সুরেন্দ সেন ঘর তৈরির জন্য বার্মা (বর্তমান মায়ানমার ) থেকে ২০টি খুঁটি কিনে আনেন। ১ জ্যৈষ্ঠ রাতে তাঁরা স্বপ্নে দেখেন, তাঁদের কেনা খুঁটিগুলোর দুটি নিজেদের দেবতা হিসেবে পরিচয় দিচ্ছে। খুঁটি দুটি পাগল রূপ ধারণ করে দুই ভাইয়ের উদ্দেশে বলছে, ‘আমাকে ঘরের খুঁটির কাজে লাগাবে না। আমি তোমাদের দেবতা।
সেই থেকে ওই এলাকার সনাতন ধর্মের লোকজন গাছের খুঁটি দুটিকে প্রতিবছর পহেলা জ্যৈষ্ঠে বিশেষ পূজা-অর্চনা করে আসছে। পরবর্তী সময়ে একটি খুঁটি হারিয়ে যায়। পূজারিরা জানায়, পূজা শেষে খুঁটিটি পূজামণ্ডপের পাশের একটি পুকুরে সারা বছর ডুবিয়ে রাখা হয়।পাগল-ভক্তরা ভক্তি করার জন্য প্রতিবছর পুকুর থেকে খুঁটিটি উঠিয়ে দুধ দিয়ে স্নান করায়।ফুল, ফল ঘি, খাসি ও পাঁঠা বলি দিয়ে পাগলা খুঁটির নামে উৎসর্গ করে। পাগলা গাছের মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার লোকের সমাগম ঘটে।
গতকাল ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, দোকানিরা বাঁশের বাঁশি, কাঠের চেয়ার, হাতপাখা, চৌকি, মোড়া, চুড়ি, প্লাস্টিকের খেলনা, মিষ্টি ইত্যাদি পণ্য নিয়ে বসেছে। বসেছে নাগরদোলাও।পূজা উদযাপন কমিটির সদস্য তপন কুমার চক্রবর্তী জানান, এ মেলা আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য বহন করে আসছে। মেলার আনুষ্ঠানিকতা পূজা অর্চনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়। তবে এই মেলায় হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে অংশগ্রহণ করে ।সময়গমের কথা মাথায় রেখে নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা।