চীন এবং বাংলাদেশ যুগ্ম সামরিক অভ্যাস ঘোষণা করেছে, যা “চীন-বাংলাদেশ সুবর্ণ বন্ধুত্ব ২০২৪” নামে পরিচিত, যা জাতিসংঘের শান্তি রক্ষাবাহিনী বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের উপর মনোনিবেশ করে। এই পদক্ষেপ তাদের প্রতিরক্ষা সম্পর্ককে গভীর করে এবং এটি চীনের কৌশল যা বিদেশে সামরিক শক্তি ব্যবহার করে।
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে শক্তিশালী সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। তবে বেশ কিছু বিতর্কের বিষয়ও রয়েছে , যেমন- দীর্ঘদিনের দ্বিপাক্ষিক নদীর জল বিরোধ। এছাড়াও দুটি দেশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা রয়েছে, ভারতের সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশী নিহত হওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে শক্তিশালী অর্থনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। বেজিং বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রকল্পে ২৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে, যা পাকিস্তানের পর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এটি বাংলাদেশে সেতু, রাস্তা, রেলপথ, বিমানবন্দর এবং বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ২০০৯-১০ সালে $৩.৩ বিলিয়ন থেকে বেড়ে ২০২১-২২-এ $২০. বিলিয়ন-এ উন্নীত হয়েছে।
চীন বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক বন্ধু হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে ২০১৬ সালে ২০৫ মিলিয়ন ডলারের মূল্যে দুটি সংস্কারকৃত সাবমেরিন সরবরাহ করেছিল। এছাড়াও, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছর চীনে নির্মিত ১.২১- বিলিয়ন ডলারের একটি সাবমেরিন ঘাঁটি উদ্বোধন করেছিলেন। যা বঙ্গোপসাগর উপকূলে কক্সবাজারে অবস্থিত, এই ঘাঁটিতে একসঙ্গে ছয়টি সাবমেরিন এবং আটটি যুদ্ধজাহাজ থাকতে পারে। বাংলাদেশের সাথে চীনের সুদৃঢ় সম্পর্ক, বিশেষ করে নৌ-সহযোগিতার ক্ষেত্রে, ২০০২ সালের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি থেকে উদ্ভূত হয়েছে, যা সামরিক প্রশিক্ষণ এবং প্রতিরক্ষা সরবরাহ করে।
বাংলাদেশ ও ভারত ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ১১টি সামরিক মহড়া করেছে, তবে চীন-বাংলাদেশের মহড়া বাংলাদেশ এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের উপর তাদের প্রভাব নিয়ে বেশ কিছু উদ্বেগ উত্থাপন করেছে। বাংলাদেশ কি ধীরে ধীরে ভারত থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে চীনের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক খুঁজছে?
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ইতিহাস ও রাজনীতির গবেষক আলতাফ পারভেজ দ্য ডিপ্লোম্যাট বলেন, “এই মহড়ার মাধ্যমে ভারত ও চীনের মধ্যে শীতল যুদ্ধের দিকে নিয়ে যাচ্ছে”। তার মতে, বাংলাদেশের সামরিক মহড়ায় যোগ দেওয়া উচিত নয় কারণ এটি একটি ছোট উন্নয়নশীল দেশ এবং এই ধরনের সামরিকীকরণের প্রয়োজন নেই। “এটি কেবল সমস্ত দিক থেকে সমস্যাকে টেনে আনবে।”