Monthly Archives: September 2024

ভয়াবহ এক খাদ্য সঙ্কটের সম্মুখে কিউবা

Asia Monitor18 কিউবাকে বিশ্বের চিনির বাটি বলা হয়। এখন সেই চিনি মেশানো জল খেয়েই দিন কাটছে কিউবার বাসিন্দাদের। খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে কিউবাতে। বেশ কিছু বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞার সাথে লড়াই করেছে কিউবা সরকার। বর্তমান পরিস্থিতির জন্য কিউবা সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে দোষারোপ করেছে। ১৯৬২ সালে যুক্তরাষ্ট্র কিউবার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে এবং ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর তা আরও জোরালও হয়ে পড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া নিষেধাজ্ঞার ফলস্বরূপ কিউবা নিত্যপন্য আমদানিতে হিমশিম খাচ্ছে। ফলে খাদ্য সঙ্কট প্রবল আকার ধারণ করেছে। ভতুর্কি দেওয়া রেশনের খাবার না থাকলে অধিকাংশ কিউবানকে না খেয়ে দিন কাটাতে হত। সরকারি সিদ্ধান্তের ফলে ইতিমধ্যে রেশনের দেওয়া রুটির আকার ছোট করা হয়েছে। রুটির ওজন ৮০ গ্রাম থেকে ৬০ গ্রাম  করা হয়েছে।একজন মানুষের হাতের তালুর চেয়েও ছোট করা হয়েছে রুটির আকার। চাল, তেল ও কফি প্রায় দুষ্প্রাপ্য।

সরকারি তথ্যানুসারে, কিউবাতে প্রতি মাসে রুটি উৎপাদনের জন্য ৩ হাজার ৩০০ টন গমের প্রয়োজন হয়। সেখানে গত জুলাই ও আগস্ট মাসে দেশটি এই চাহিদার প্রায় এক- তৃতীয়াংশ জোগাড় করেছে। এই মাসের জন্য গম জোগাড় হয়েছে মাত্র ৬০০ টন। কিউবায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছে অব্যাহতভাবে। এঁর ফলে দেশটির প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যার পুষ্টি চাহিদা পূরণ অসাধ্য হয়ে পড়েছে।

গত ৩০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক অবস্থার সাথে লড়ছে কিউবা। একজন মানুষের মাসিক গড় আয় মাত্র ৪২ ডলার মানে প্রায় ৫ হাজার ৪০ টাকা।

 নেতানিয়াহুকে হত্যার উদ্দেশ্যে ইসরায়েলিকে নিয়োগ ইরানের

Asia Monitor18 এক ইসরায়েলই নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে যাকে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সহ শীর্ষ ইসরায়েলই কর্মকর্তাদের হত্যার পরিকল্পনার জন্য ইরান নিয়োগ করেছিল। দেশটির পুলিশ এবং শিন বেট ( অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা) এই তথ্য জানিয়েছে। নিয়োগ করা সেই ইসরায়েলই ব্যক্তিকে দুবার ইরানে পাচার করা হয়েছিল।

ওই ব্যক্তির পরিচয় হিসেবে মর্দেখাই মামান নামের উল্লেখ পাওয়া গেছে। উনি আস্কালানের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। তার জন্ম হয় ১৯৫২ সালে। এবং তাকে ২৯ শে আগস্ট আটক করা হয় বলে জানা গেছে। তিনি দীর্ঘ সময় ধরে ইরানে বসবাস করছেন এবং তুর্কি ও ইরানের সাথে সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন। তারাই তাকে ফোনের মাধ্যমে এডি নামক এক ইরানি ব্যবসায়ীর সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। সন্দেহভাজন

এই ব্যক্তি প্রথমবার ২০২৪ সালের মে মাসে এডির সাথে সাক্ষাৎ করার উদ্দেশ্যে ইরানে যান। তিনি সেখানে হাজ্জা নামক একজনের সাথে দেখা করেন যিনি সেখানকার নিরাপত্তা কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেন। ওই সময় সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে ইসরাইলে নিরাপত্তা মিশনের জন্য অনুররোধ করা হয়। যার মধ্যে ‘অর্থ বা অস্ত্র স্থানান্তর করা’ জনাকীর্ণ স্থানের ছবি তোলা এবং তেহরানের নিয়োগকৃত অন্য ইসরায়েলিদের হুমকি দেওয়া অন্তর্ভুক্ত ছিল।

দ্বিতীয়বার ভ্রমণের উদ্দেশ্যে একটি লরির মাধ্যমে ইরানে পাচার করা হয়েছিল সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তিকে। সেখানে গিয়ে তিনি কিছু ইরানি গোয়েন্দা এজেন্টদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তারা তাকে ইসরায়েলের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের  অনুরোধ করেন, যেখানে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা  ছিল। এছাড়াও তাকে অন্য কিছু কাজও করতে বলা হয়েছিল।

প্রায় এক দশক পর ভোট জম্মু ও কাশ্মীরে

Asia Monitor18 এক দশক পর প্রথম আঞ্চলিক নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরে। এটিই বিধানসভার প্রথম নির্বাচন  ২০১৪ সালের পর থেকে এবং জম্মু ও কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের পর। ২০১৯ সালে বিশেষ মর্যাদা বাতিলের সময় রাজ্যটিকে জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ নামের দুটি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে ভাগ করে দেওয়া হয়।  জম্মু ও কাশ্মীর এই প্রথম কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল হিসেবে নির্বাচন হতে দেখছে।

অঞ্চলটির ৯০ আসনের বিধানসভার এ নির্বাচন তিন পর্বে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ২৪টি আসনে বুধবার প্রথম পর্বে ভোট গ্রহণ করা হয়েছে। এই আসনগুলির মধ্যে ১৬টি কাশ্মীর উপত্যকায় ও আটটি জম্মুর। দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হবে ২৬ টি আসনে ২৫শে সেপ্টেম্বর এবং ৪০ টি আসনে ১লা অক্টোবর শেষ ভোট গ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচনের সমাপ্তি ঘটবে। ৮ই অক্টোবর ভোট গণনা করে ওইদিনই ফল প্রকাশ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

এ নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৯০ লাখ। ভারতের নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে বুধবার প্রথম পর্বের ভোট স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় শুরু হওয়ার পর থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ৪১ শতাংশ ভোট পড়েছে। জঙ্গি এলাকাগুলি যেমন পুলওয়ামা, অনন্তনাগ এরকম বহু অঞ্চলে ভোটদানের হার যথেষ্ট ভালো। জনগণ আগ্রহী হয়ে বুথমুখি হয়েছে ভোট দেওয়ার জন্য।

১৯৪৭ সালে ভারতে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে জম্মু ও কাশ্মীরে এখনও পর্যন্ত ১২ টি বিধানসভা ভোট হয়েছে। গত কিছুদিন ধরে জম্মু ও কাশ্মীরে বেশ কয়েকটি বিচ্ছিন্নতাবাদী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় ভারতীয় সেনা সদস্যসহ বেশ কিছু বিচ্ছিন্নতাবাদীও নিহত হয়েছে। তাই কড়া নিরাপত্তার ব্যাবস্থা করা হয়েছে।

এবারের নির্বাচনের বড় বৈশিষ্ট্য হলো, কাশ্মীরের অনেক বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাও এই ভোটে অংশ নিচ্ছেন।

আন্দামান নিকবোর দ্বীপপুঞ্জের রাজধানীর নাম পরিবর্তন

Asia Monitor18 আন্দামান ও নিকবোর দ্বীপপুঞ্জের রাজধানী পোর্ট ব্লেয়ার। আন্দামান ও নিকবোর দ্বীপপুঞ্জের প্রবেশ পথ এই পোর্ট ব্লেয়ার। এই বন্দর শহরটির নামকরণ করা হয়েছিল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ঔপনিবেশিক নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন আর্চিবল্ড ব্লেয়ারের নামে। ভারত সরকার বর্তমানে এই পোর্ট ব্লেয়ারের নাম পরিবর্তন করে ‘শ্রী বিজয় পুরম’ করেছে। জাতিকে ঔপনিবেশিক ছাপ থেকে মুক্ত করতে এরূপ পরিবর্তন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে নয়া দিল্লি।

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ একটি পোস্টে বলেছেন,  শ্রী বিজয় পুরম আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের অর্জিত বিজয়ের প্রতীক। কিন্তু ‘আগের নামটিতে  একটি ঔপনিবেশিক উত্তরাধিকার ছিল। স্বাধীনতা সংগ্রাম ও ইতিহাসের পাতায় আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ এক অন্যন্য স্থানে আছে। তিনি বলেছেন ঔপনিবেশিক চিহ্ন মুছে ফেলার উদ্দেশ্যে এই উদ্যোগ মোদী সরকারের।

এছাড়াও তিনি বলেছেন সুভাষচন্দ্র বসু এখানের আকাশে ভারতের প্রথম পতাকা উড়িয়েছিলেন। বীর সাভারকার ও সেলুলর জেলের কথাও বলেছিলেন। এই জেলে অনেক স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা বন্দি ছিলেন। কুখ্যাত এই জেল ভারতের জাতীয় স্মৃতি স্থাপনা।

২০১৮ সালে নরেন্দ্র মোদী আন্দামান সফরে গিয়ে সেখানকার তিনটি জায়গার নাম বদল করেন। হ্যাভলক আইল্যান্ডের নাম বদলে স্বরাজ দ্বীপ, নীল আইল্যান্ডের বদলে শহীদ দ্বীপ এবং রস আইল্যান্ডের বদলে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু দ্বীপ। এছাড়াও রাষ্ট্রপতি ভবনের নাম বদলে অমৃত উদ্যান রাখা হয়েছে। গত কয়েক বছরে বহু জায়গার নাম পরিবর্তন করা হয়েছে এবং নরেন্দ্র মোদী ২০২৩ সালে ২১ টি নামবিহীন দ্বীপের নামকরণ করেছেন পরম বীর পুরষ্কার প্রাপ্তদের নামে। বিভিন্ন ধর্মীয় স্থান, রেল ষ্টেশন আরও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করেন তিনি।

পোর্ট ব্লেয়ার( শ্রী বিজয় পুরম) প্রায় ৫০০ টিরও বেশি আদিম দ্বীপের প্রবেশদ্বার। বর্তমানে এটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র।  

প্রথমবারের জন্য পরমাণু কর্মসূচির ছবি প্রকাশ্যে আনল উত্তর কোরিয়া

Asia Monitor18 উত্তর কোরিয়া একনায়ক শাসিত দেশ। উত্তর কোরিয়া প্রথমবারের মতো তাদের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কাঁচামাল বা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার ভেতরের ছবি দেখালেন গোটা বিশ্বকে। উত্তর কোরিয়ার নাম শুনলেই আমাদের চোখে এক গোপনীয়তার দৃশ্য ভেসে ওঠে। একটু কিছু ভুল হলেই সেখানে প্রশাসনিক কর্তা থেকে শুরু সাধারণ মানুষকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

শুক্রবার অস্ত্র তৈরির কারখানা পরিদর্শন করেন কিম। তিনি সেখানে কর্মরত মানুষের সাথে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করছিলেন। কারখানাটিতে বিভিন্ন অস্ত্র সুসজ্জিত রয়েছে। ধাতব সেন্ত্রিফিউজের লম্বা সারির সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে কিম। এই যন্ত্র গুলির ব্যবহৃত হয় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার কাজে।উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কার্যক্রমের উপর জাতিসংঘ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। উত্তর কোরিয়া পশ্চিমি দেশগুলিকে আজীবনকাল তাচ্ছিল্য করে এসেছে। বিশেষ করে আমেরিকাকে। তিনি যে এই দেশগুলিকে গ্রাহ্য করেন না তার বার্তা দেওয়ার জন্যই মাঝে মাঝে ক্ষেপণাস্ত্রের বিবিধ পরীক্ষা করেন।

গত মঙ্গলবার কিম জানিয়েছিলেন, ‘আমরা দ্রুত পরমাণু অস্ত্রের সংখ্যা বাড়াতে চাই’। রাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিয়ে এরূপ ঘোষণা। স্বৈরাচারী শাসক হিসেবে বেশ খারাপ নাম আছে কিমের। অনেকে অভিযোগ করেছেন সেখানে নাকি ইন্টারনেট পরিষেবাও রাষ্ট্রের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়।উত্তর কোরিয়ার কাছে কতগুলো পারমাণবিক অস্ত্র আছে তা না জানলেও এক হিসাবের মাধ্যমে এই সংখ্যা ৫০ টিতে দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও আরও ৪০ টি উপাদান আছে অস্ত্র তৈরির জন্য।

অন্যদিকে আবার দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রের জ্বালানি উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনার তীব্র নিন্দা করেছে।

পর্যটন গন্তব্য হিসেবে মালদ্বীপকে বয়কটের দাবি ভারতীয়দের

Asia Monitor18 ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাক্ষাদ্বীপে  ভ্রমণের জন্য গিয়েছিলেন। পরে ভ্রমণ শেষ করে ফেরার পর নরেন্দ্র মোদী ভারত মহাসাগরের তীরে অবস্থিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা এই দ্বীপটির কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেন সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে। এই ছবি শেয়ার করার পরেই মালদ্বীপের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক তুমুল আলোচনা- সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

দেশটিতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সরকারি কর্মকর্তা ও মন্ত্রিসভার সদস্যরাও এর মধ্যে  জড়িয়ে পড়েন। ভারতীয় পর্যটকরা যেন মালদ্বীপের পরিবর্তে লাক্ষাদ্বীপকে নিজেদের পর্যটন গন্তব্য হিসেবে বেছে নেন—ছবির মাধ্যমে মোদী সেই বার্তাই দিয়েছেন বলে অভিযোগ তাদের।

এছাড়াও মালদ্বীপের তিন মন্ত্রী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে উদ্দেশ্য করে আক্রমণাত্মক কথা বলেন এবং তাকে ‘ক্লাউন’ বলে উল্লেখ করেন। তাদের এরূপ মন্তব্যের জন্য গত জানুয়ারি মাসে তাদের সাসপেন্ড করা হয়েছিল। এই তিনজন হল মারিয়াম শিউনা, মালসা শরিফ ও মাহজুম মজিদ। তাদের মধ্যে মারিয়াম ও মালসা মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন। তবে  মাহজুম মাজিদ এখনো পদত্যাগপত্র জমা দেননি। কিন্তু তাদের এই অভিযোগের পাল্টা জবাব দিতে ভারতীয়রাও সরব হয়ে ওঠে। পর্যটন গন্তব্য হিসেবে মালদ্বীপকে বয়কটের ডাক দেন ভারতীয়রা।

বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন এক্স, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপে ‘বয়কটমালদ্বীপ’ হ্যাশট্যাগে চারিদিক ছড়িয়ে গেছে। বিশ্বের যেসব দেশ থেকে পর্যটকরা মালদ্বীপে যেতেন, তাদের অর্ধেকই ছিলেন ভারতীয়।  কিন্তু মালদ্বীপকে বয়কটের ডাক দেওয়ার পর চলতি বছর থেকে দেশটিতে ভারতীয় পর্যটকের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে কমে যায়। ফলে মালদ্বীপের অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব বর্তমান।

ভারতের পোশাক শিল্প কি লাভবান হবে বাংলাদেশের বর্তমান অস্থিরতায়?

Asia Monitor18 ১৯৭৮ সালে প্রথম রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানা প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশে। পোশাক শিল্প তৈরিতে বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ রপ্তানিকারক বাংলাদেশ। পোশাকশিল্পই দেশের অর্থনীতির মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রূপান্তরিত হয়েছে। কিন্তু গত জুলাই ও আগস্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলনের পর বাংলাদেশের পোশাকশিল্প ক্রমান্বয় হ্রাস পাচ্ছে। শেখ হাসিনার পতনে আন্দোলন শেষ হলেও এখনো অস্থিরতা রয়েই গেছে। পোশাক শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবিদাওয়ার কারণে এবং গ্যাসসংকটের কারণে উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। শুধুমাত্র গত বছরই ৫৪ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে ঢাকা। তবে বিশ্বে পোশাক রপ্তানির দিক দিয়ে বাংলাদেশেরও ছাড়িয়ে রয়েছে চীন। বাংলাদেশের মোট জিডিপির ১০ শতাংশ আসে পোশাক খাত থেকে।

তবে এই পরিস্থিতিতে এমন প্রশ্ন অনেকের মন থেকেই উঠে আসছে যে, ভারতের পোশাকশিল্প কি লাভবান হতে পারবে বাংলাদেশে এই অস্থিরতার সুযোগে? ব্রিটেনের প্রভাবশালী সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট, এ বিষয়টি এক প্রতিবেদনে বিশ্লেষণ করেছে।

ভারত যেসব তুলা উৎপাদন করে তা বাংলাদেশে রপ্তানি করে। ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ তুলা উৎপাদনকারী দেশ। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কয়েকটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশে চলমান অস্থিরতার কারণে তারা নতুন করে ৫৪ মিলিয়ন ডলারের অর্ডার পেয়েছে এবং গত আগস্টে স্প্যানিশ ফ্যাশন ফার্ম জারার কাছ থেকে ১৫ শতাংশ বেশি অর্ডার পেয়েছে বলে নয়াদিল্লির বাইরের আরেকটি গ্রুপ জানিয়েছে। তবে তুলা উৎপাদনের দিক থেকে ভারত এগিয়ে থাকলেও পোশাক খাতের দিক দিয়ে ভারত বাংলাদেশের থেকে অনেক পিছিয়ে।

শিল্প বিশ্লেষক মেহেদি মাহবুব বলেছে  বাংলাদেশের পোশাকশিল্পকে এখনই টেক্কা দেওয়ার সক্ষমতা ভারতের নেই। বাংলাদেশের পোশাককেই ইউরোপের বাজারগুলো প্রাধান্য দিয়ে থাকে। তিনি আরও বলেছেন ২০১৬ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ভারতের পোশাক রপ্তানি থেকে আয় কমেছে প্রায় ১৫ শতাংশ। আর অন্যদিকে  বাংলাদেশের  ৬৩ শতাংশ বেড়েছে।

মস্কোতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করলেন এনএসএ ডোভাল!

ভারতীয় জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল মস্কোতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠক ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে চলমান কৌশলগত আলোচনা এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গভীরতার প্রতিফলন। বৈঠকটি এমন এক সময় অনুষ্ঠিত হয়েছে যখন বৈশ্বিক ভূরাজনীতি জটিল হয়ে উঠছে, নতুন নতুন জোট এবং আঞ্চলিক উত্তেজনার মধ্যে দিয়ে।

বৈঠকে ডোভাল এবং পুতিন তাদের কৌশলগত অংশীদারিত্বের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে নিরাপত্তা সহযোগিতা, প্রতিরক্ষা সংযুক্তি এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা। আলোচনা সম্ভবত দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও হয়েছে, বিশেষ করে ভারতের ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে এবং তার প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে।

আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই এবং গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়, যেখানে ভারত ও রাশিয়া ঐতিহাসিকভাবে শক্তিশালী সহযোগিতা করে এসেছে। এছাড়া, উভয় পক্ষ হয়তো তাদের সামরিক এবং প্রযুক্তিগত সহযোগিতাকে আরও শক্তিশালী করার উপায়ও আলোচনা করেছে, কারণ দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘকাল ধরে একটি প্রতিরক্ষা সম্পর্ক বিদ্যমান।

এই বৈঠক রাশিয়ার চলমান বৈশ্বিক প্রভাব বৃদ্ধি প্রচেষ্টার প্রেক্ষাপটে অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে পশ্চিমা দেশগুলির সঙ্গে তার সম্পর্ক সঙ্কটাপন্ন। ভারতের জন্য, রাশিয়ার সঙ্গে একটি শক্তিশালী কৌশলগত অংশীদারিত্ব বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যখন এটি অন্যান্য প্রধান শক্তির সঙ্গে জটিল সম্পর্কগুলি পরিচালনা করছে।

সার্বিকভাবে, ডোভালের এই সফর ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী কৌশলগত মিত্রতা এবং তাদের পারস্পরিক স্বার্থ ও স্থিতিশীলতার প্রতি প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।

ইউক্রেনের আরও একটি শহর দখলের দাবি রাশিয়ার

Asia Monitor18 আরও একটি শহর হারাল ইউক্রেন। রাশিয়া দাবি জানিয়েছে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে নভোরোদিভকা শহরের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার। এছাড়াও তারা শহরটির অদূরে পোকরোভস্ক নগরীর দিকে রুশ বাহিনীর অগ্রসর হওয়ার কথা বলেছে। ইউক্রেনীয় সেনাদের জন্য এ শহরটি  ওই এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ একটি রেল ও সড়ক পরিবহণ কেন্দ্র।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছেন, পোকরোভস্ক নগরী থেকে ১২ কিলোমিটার (৭ মাইল) দূরের নভোরোদিভকা শহর দখল করেছে রুশ বাহিনী। নভোরোদিভকা-সহ পোকরোভস্ক সেক্টরে লড়াইয়ের বিস্তারিত তুলে ধরেছেন ইউক্রেইনের সামরিক বাহিনীর জেনারেল স্টাফ। যুদ্ধের আগে নভোরোদিভকা শহরের জনসংখ্যা ছিল ১৪,০০০।

ইউক্রেইনের সামরিক বাহিনীর জেনারেল স্টাফ দাবি করেছেন রাশিয়ার অগ্রগতির ২৯ টি চেষ্টা প্রতিহত করা হয়েছে। রুশ বাহিনী পোকরোভস্ক থেকে ৭ কিলোমিটারেরও কম দূরত্বে অন্তত দুটি স্থানে হামলা চালাচ্ছে বলে একটি মানচিত্র প্রকাশ করে ইউক্রেইন বংশদ্ভুত প্রভাবশালী রুশপন্থি সামরিক ব্লগার ইউরি পোদোলিয়াকা দেখিয়েছেন।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হয়েছে। তাপর থেকেই হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। লাখ লাখ ইউক্রেনীয় বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে বহু গ্রাম ও নগরী।

রুশ বাহিনীর লক্ষ্য গোটা দনবাস অঞ্চল দখল করা। যেটি  আয়তনে প্রায় যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও রাজ্যের অর্ধেক। যুদ্ধের শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত ইউক্রেইনের এক পঞ্চমাংশ দখল করেছে রুশ বাহিনী।

বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত ‘আমার সোনার বাংলা’ বদলের দাবি  

Asia Monitor18 বাংলাদেশের হাসিনা সরকারের পতনের পর অনেক পরিবর্তন এসেছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশে সংবিধান বদলানোর সাথে সাথে জাতীয় সঙ্গীত বদলানোর দাবি করা হচ্ছে। ইসলামি কট্টরপন্থীরা দাবি করছে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত বদলানোর। রবীন্দ্রনাথের লেখা সঙ্গীতকে বাদ দিয়ে অন্য কোন গানকে তারা জাতীয় সঙ্গীত করার দাবি জানাচ্ছে।

বাংলাদেশ এবং ভারত এই দুই দেশেরই জাতীয় সঙ্গীত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরেরই লেখা। এতদিন বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গাওয়া হত ‘আমার সোনার বাংলা’। আমার সোনার বাংলা গানটি ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতা করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লেখেন। জাতীয় সঙ্গীত বদলানোর বিষয় সম্পর্কে প্রথম দাবি করেন বাংলাদেশ সেনার প্রাক্তন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আজমি। তার মতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারতীয়। এই গানের সঙ্গে ইসলামিক ভাবধারার কোন মিল নেই বলে তার মতামত। এই গান কিছুতেই বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হতে পারে না বলে তিনি জানিয়েছেন।

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্তাদের সরিয়ে দিয়েছে তেমনই বহু উগ্রপন্থীদের মুক্তি দিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের এই দাবি মানা হবে না। অনেকে এই দাবির সমর্থনে আবার অনেকেই বিপক্ষে।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হলে এই গানটিকে জাতীয় সঙ্গীত রূপে বেছে নেন শেখ মুজিবর রহমান। তবে তার মৃত্যুর পর একের বেশি বার এই গান পরিবর্তনের দাবি উঠেছে।

ওপার বাংলার এক বিখ্যাত লেখিকা তসলিমা নাসরিন এই বিষয় আপত্তি জানিয়ে লিখেছেন, জাতীয় সঙ্গীত ছাড়া আমাদের দেশে গর্ব করার আর বেশি কিছু পাই না আমি। প্যারিসে যখন ছিলাম ফরাসি বন্ধুদের বলতাম তোমাদের জাতীয় সঙ্গীত লা মারসেইয়েজ এ কেবল রক্ত নেওয়া আর খুনোখুনির কথা আছে কিন্তু আমাদের জাতীয় সংগীতে ভালোবাসার কথা আছে।

error: Content is protected !!