Daily Archives: September 13, 2024

পর্যটন গন্তব্য হিসেবে মালদ্বীপকে বয়কটের দাবি ভারতীয়দের

Asia Monitor18 ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাক্ষাদ্বীপে  ভ্রমণের জন্য গিয়েছিলেন। পরে ভ্রমণ শেষ করে ফেরার পর নরেন্দ্র মোদী ভারত মহাসাগরের তীরে অবস্থিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা এই দ্বীপটির কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেন সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে। এই ছবি শেয়ার করার পরেই মালদ্বীপের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক তুমুল আলোচনা- সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

দেশটিতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সরকারি কর্মকর্তা ও মন্ত্রিসভার সদস্যরাও এর মধ্যে  জড়িয়ে পড়েন। ভারতীয় পর্যটকরা যেন মালদ্বীপের পরিবর্তে লাক্ষাদ্বীপকে নিজেদের পর্যটন গন্তব্য হিসেবে বেছে নেন—ছবির মাধ্যমে মোদী সেই বার্তাই দিয়েছেন বলে অভিযোগ তাদের।

এছাড়াও মালদ্বীপের তিন মন্ত্রী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে উদ্দেশ্য করে আক্রমণাত্মক কথা বলেন এবং তাকে ‘ক্লাউন’ বলে উল্লেখ করেন। তাদের এরূপ মন্তব্যের জন্য গত জানুয়ারি মাসে তাদের সাসপেন্ড করা হয়েছিল। এই তিনজন হল মারিয়াম শিউনা, মালসা শরিফ ও মাহজুম মজিদ। তাদের মধ্যে মারিয়াম ও মালসা মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন। তবে  মাহজুম মাজিদ এখনো পদত্যাগপত্র জমা দেননি। কিন্তু তাদের এই অভিযোগের পাল্টা জবাব দিতে ভারতীয়রাও সরব হয়ে ওঠে। পর্যটন গন্তব্য হিসেবে মালদ্বীপকে বয়কটের ডাক দেন ভারতীয়রা।

বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন এক্স, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপে ‘বয়কটমালদ্বীপ’ হ্যাশট্যাগে চারিদিক ছড়িয়ে গেছে। বিশ্বের যেসব দেশ থেকে পর্যটকরা মালদ্বীপে যেতেন, তাদের অর্ধেকই ছিলেন ভারতীয়।  কিন্তু মালদ্বীপকে বয়কটের ডাক দেওয়ার পর চলতি বছর থেকে দেশটিতে ভারতীয় পর্যটকের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে কমে যায়। ফলে মালদ্বীপের অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব বর্তমান।

ভারতের পোশাক শিল্প কি লাভবান হবে বাংলাদেশের বর্তমান অস্থিরতায়?

Asia Monitor18 ১৯৭৮ সালে প্রথম রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানা প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশে। পোশাক শিল্প তৈরিতে বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ রপ্তানিকারক বাংলাদেশ। পোশাকশিল্পই দেশের অর্থনীতির মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রূপান্তরিত হয়েছে। কিন্তু গত জুলাই ও আগস্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলনের পর বাংলাদেশের পোশাকশিল্প ক্রমান্বয় হ্রাস পাচ্ছে। শেখ হাসিনার পতনে আন্দোলন শেষ হলেও এখনো অস্থিরতা রয়েই গেছে। পোশাক শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবিদাওয়ার কারণে এবং গ্যাসসংকটের কারণে উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। শুধুমাত্র গত বছরই ৫৪ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে ঢাকা। তবে বিশ্বে পোশাক রপ্তানির দিক দিয়ে বাংলাদেশেরও ছাড়িয়ে রয়েছে চীন। বাংলাদেশের মোট জিডিপির ১০ শতাংশ আসে পোশাক খাত থেকে।

তবে এই পরিস্থিতিতে এমন প্রশ্ন অনেকের মন থেকেই উঠে আসছে যে, ভারতের পোশাকশিল্প কি লাভবান হতে পারবে বাংলাদেশে এই অস্থিরতার সুযোগে? ব্রিটেনের প্রভাবশালী সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট, এ বিষয়টি এক প্রতিবেদনে বিশ্লেষণ করেছে।

ভারত যেসব তুলা উৎপাদন করে তা বাংলাদেশে রপ্তানি করে। ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ তুলা উৎপাদনকারী দেশ। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কয়েকটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশে চলমান অস্থিরতার কারণে তারা নতুন করে ৫৪ মিলিয়ন ডলারের অর্ডার পেয়েছে এবং গত আগস্টে স্প্যানিশ ফ্যাশন ফার্ম জারার কাছ থেকে ১৫ শতাংশ বেশি অর্ডার পেয়েছে বলে নয়াদিল্লির বাইরের আরেকটি গ্রুপ জানিয়েছে। তবে তুলা উৎপাদনের দিক থেকে ভারত এগিয়ে থাকলেও পোশাক খাতের দিক দিয়ে ভারত বাংলাদেশের থেকে অনেক পিছিয়ে।

শিল্প বিশ্লেষক মেহেদি মাহবুব বলেছে  বাংলাদেশের পোশাকশিল্পকে এখনই টেক্কা দেওয়ার সক্ষমতা ভারতের নেই। বাংলাদেশের পোশাককেই ইউরোপের বাজারগুলো প্রাধান্য দিয়ে থাকে। তিনি আরও বলেছেন ২০১৬ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ভারতের পোশাক রপ্তানি থেকে আয় কমেছে প্রায় ১৫ শতাংশ। আর অন্যদিকে  বাংলাদেশের  ৬৩ শতাংশ বেড়েছে।

error: Content is protected !!