Daily Archives: September 5, 2024

আফ্রিকাকে ৫১ বিলিয়ান আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে চিন, এটা কী চিনের নতুন ফাঁদ?

চীন সম্প্রতি ঋণ-দুর্দশাগ্রস্ত আফ্রিকান দেশগুলিতে ৫১ বিলিয়ান আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে,যা একটি নতুন ঋণ ফাঁদ হতে পারে বলে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এই বিশাল প্রতিশ্রুতি আফ্রিকাতে চীনের প্রভাব বাড়ানোর প্রচেষ্টার অংশ, যা অবকাঠামো প্রকল্প, ঋণ এবং বিনিয়োগের মাধ্যমে সম্পন্ন হচ্ছে এবং এর মূল অংশ হলো বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই)। বেইজিংয়ে চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা শীর্ষ সম্মেলনে ফোরামে এই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।

এই প্রতিশ্রুতির লক্ষ্য উচ্চ ঋণ সহ অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন আফ্রিকান দেশগুলিকে সমর্থন করা। সমর্থকরা যুক্তি দেন যে এই আর্থিক সহায়তা প্রবৃদ্ধি (অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি বলতে মোট দেশজ উৎপাদনের বর্ধিত অংশের শতকরা মানকে বোঝায়) উদ্দীপিত করতে পারে, অবকাঠামো উন্নত করতে এবং বেকারত্ব কমাতে সাহায্য করবে, যা অঞ্চলের দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।

সমালোচকরা উদ্বিগ্ন যে মূলধনের এই নতুন প্রবাহ বিদ্যমান ঋণ সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। অনেক আফ্রিকান দেশ ইতিমধ্যেই ব্যাপকভাবে ঋণগ্রস্ত, অতিরিক্ত ঋণের ফলে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরী হতে পারে। কিছু আফ্রিকান দেশ পূর্বের চীনা ঋণের পরিশোধই এখনও করতে পারেনি।যার ফলে একটি “ঋণ ফাঁদ”এ জড়িয়ে পরার আশঙ্কা করা হচ্ছে,যেখানে দেশগুলি ঋণ গ্রহণ এবং পরিশোধের চক্রে আটকে যেতে পারে।

আফ্রিকায় চীনের ভূমিকাকে প্রায়শই সম্পদের অ্যাক্সেস সুরক্ষিত করতে এবং তার ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব প্রসারিত করার কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হয়। নতুন ঋণের শর্তাবলী, সুদের হার এবং পরিশোধের সময়সূচী এই ঋণ সমস্যা কমাতে বা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই নতুন আর্থিক সহায়তা আফ্রিকান দেশগুলিকে আরও ঋণ সঙ্কটে যাতে না পরে, তা নিশ্চিত করার জন্য স্বচ্ছতা এবং দায়িত্বশীল ঋণদান অপরিহার্য।

চীন এবং প্রাপক দেশ উভয়ের জন্যই বিদ্যমান আর্থিক চ্যালেঞ্জগুলিকে এড়াতে সাবধানতার সাথে এই ঋণদান পরিচালনা করা গুরুত্বপূর্ণ।

হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন ইসির পদত্যাগ

অবশেষে গুঞ্জনের সমাপ্তি টেনে পদত্যাগ করেছে বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় সংবাদ সম্মেলন করে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছে আউয়াল কমিশন।সংবিধান অনুযায়ী পাঁচ বছরের জন্য দায়িত্ব নির্ধারণ করা থাকলেও মাত্র আড়াই বছরেই বিদায় নিলো কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি)।সংবাদ সম্মেলন শেষে ইসি সদস্যরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করতে যাবেন বলেও জানা গেছে।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তিনিসহ তাঁর কমিশনের সদস্যরা পদত্যাগ করার মনস্থির করেছেন। রাষ্ট্রপতির কাছে দেওয়ার জন্য পদত্যাগপত্রগুলো ইসি সচিবালয়ের সচিবের কাছে তাঁরা জমা দিয়েছেন।

সৌজন্য বিনিময়ে অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল, নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবীব খান ও মো. আলমগীর উপস্থিত ছিলেন। অন্য দুই কমিশনার রাশেদা সুলতানা ও মো. আনিছুর রহমান উপস্থিত ছিলেন না।

নিজের বক্তব্য পড়ে সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের জবাব না দিয়ে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন সিইসি। নিজের বক্তব্যে তিনি ১৯৭৩ সালের নির্বাচন থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির নির্বাচন পর্যন্ত সব কটি নির্বাচনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। পরদিনই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এরপর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা শপথ নেন। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ে বড় ধরনের পরিবর্তন আসে। প্রধান বিচারপতি থেকে শুরু করে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের অনেকে ইতিমধ্যে পদত্যাগ করেছেন। আজ হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন ইসি পদত্যাগের ঘোষণা দিল।

আওয়ামী লীগকে ক্ষমা করলে নিহতদের সঙ্গে বেইমানি করা হবে:মন্তব্য রিজভীর

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার নির্দেশে যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে তাদের হত্যাকারীদের ক্ষমা করলে নিহতদের আত্মার সঙ্গে বেইমানি করা হবে। একটি রাজনৈতিক দলের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, তারা বলছেন আওয়ামী লীগকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। গণহত্যাকারীদের কিসের ক্ষমা করতে বলেছেন তারা, মন্তব্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।

জামায়েত ইসলামীর প্রতি ইঙ্গিত করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, তারা বলছেন-আওয়ামী লীগকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। গণহত্যাকারীদের কিসের ক্ষমা করতে বলেছেন তারা। যদি শেখ হাসিনাসহ অপরাধীদের বিচার না করা হয় তাহলে বাংলাদেশ কবরস্থানে পরিণত হবে।

তিনি বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি-নিরপরাধ কেউ যেন মামলার শিকার না হয়। কিন্তু যারা অপরাধী তাদের ক্ষমা করা যাবে না।’

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘আপনারা কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তাদের কাজ করতে দিন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এ বিষয়ে কঠোর বার্তা দিয়েছেন।’

এ সময় বিএনপির সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম, চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক, ডা. মনোয়ারুল কাদির বিটু, ডা. জাহিদুল কবির, মেহেবুব মাসুম শান্ত ও আরিফুর রহমান তুষার উপস্থিত ছিলেন।

খুলনা মেডিকেলে চিকিৎসা সেবা বন্ধ, ভোগা‌ন্তি চরমে

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলার কথা ছিল। তবে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে কোনো চিকিৎসক আসেনি। আউটডোর সেবা সম্পূর্ণ বন্ধ না থাকলেও চিকিৎসক না আসায় রোগীরা চরম ভোগান্তিতে পড়ে। তবে জরুরি বিভাগে সীমিত আকারে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে।

নিগ্রহ করার প্রতিবাদে খুলনায় চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলছে। এতে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে রোগী ও তাদের স্বজনরা।

এদিকে দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোয় বহির্বিভাগে চিকিৎসা- সেবা বন্ধ থাকায় গতকাল সোমবারও ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে রোগী ও তাঁদের স্বজনদের। অনেককেই চিকিৎসা না পেয়ে ফিরতে হয়েছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গতকাল বিকেলে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের পক্ষে হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসক আব্দুল আহাদ সাংবাদিকদের বলেন, রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে মঙ্গলবার থেকে সীমিত পরিসরে আউটডোর সেবা
চালু করা হবে।

‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি, আমাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। আমাদের কর্মপরিবেশের ব্যবস্থা করতে হবে এবং যারা আমাদের গায়ে হাত তুলেছে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় আমরা কর্মবিরতিতে চলে যাব।’

নিউরো সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যে ঘটনাটি ঘটিয়েছেন এটি অত্যন্ত নেককারজনক ঘটনা। আমরা হাসপাতালের পরিচালক চিকিৎসক এবং বিইউবিটির ভিসি ও শিক্ষার্থীদের সাথে সভাকক্ষে আলোচনা করেছি।

ঘটনার বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি হবে এবং যারা এই চিকিৎসকদের গায়ে হাত দিয়েছে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অর্থাৎ রোববার রাত আটটার মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে গ্রেপ্তার করার জন্য বলা হয়েছে। এরপর দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না দিলে চিকিৎসকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে যাবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘একজন শিক্ষার্থী মারা গেছে। আমরা মর্মাহত, কিন্তু তার মানে এই নয় যে, আমাদের চিকিৎসকদের তারা মারপিট করতে পারেন। আমার চিকিৎসকদের যদি কোনো অবহেলা থাকে বা কোনো ধরনের গাফিলতি থাকে তাহলে তারা হাসপাতালের পরিচালকের কাছে এসে অভিযোগ করতে পারতেন। কিন্তু তারা সেটি না করে আমাদের তিন চিকিৎসককে মারপিট করেছে, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক এবং মানা যায় না।’

এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ চিকিৎসকরা শনিবারই ঢাকা মেডিকেলে ‘উই ওয়ান জাস্টিস’ স্লোগান দিয়ে হাসপাতাল কম্পাউন্ডে মিছিল করছেন এবং দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি করেন তারা।

ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসকরা শনিবার রাতে বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে কর্মবিরতি শুরু হবে।

এদিকে শনিবার মধ্যরাতে খিলগাঁও সিপাহীবাগ এলাকা থেকে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহতরা ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসা নিতে আসেন। ওই সময় অন্য আরেকটি গ্রুপ চাপাতিসহ হাসপাতালে জরুরি বিভাগের ভেতরে ঢুকে পড়ে। এ সময় চালানো হয় ভাঙচুর। হাতেনাতে চারজনকে আটক করে সেনাবাহিনীতে দেয় কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আসাদুজ্জামান বলেন, ‘ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং আমি চিকিৎসকদের আশ্বস্ত করছি তাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব আমি নিলাম। আমি সেনাবাহিনীর উচ্চ পর্যায়ের সাথে কথা বলেছি, এখানে চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় জরুরি বিভাগে সেনাবাহিনী মোতায়েন থাকবে। এই ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন হবে এবং সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

error: Content is protected !!