Monthly Archives: August 2024

বাংলাদেশে গণ অভ্যুত্থান: দেশের অর্থনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলবে

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে গণ অভ্যুত্থানের ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ে একটি গুরুতর বিষয় হিসেবে সামনে এসেছে। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, কোনো দেশের রাজনীতিতে গণ অভ্যুত্থান শুধু শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটায় না, বরং অর্থনীতির ওপরও দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে। বাংলাদেশে যদি এই ধরনের একটি অভ্যুত্থান ঘটে, তা দেশের অর্থনীতিতে কীভাবে প্রভাব ফেলতে পারে, তা বিশ্লেষণ করাই এই নিবন্ধের উদ্দেশ্য।

অস্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগ প্রবাহে বিঘ্ন

গণ অভ্যুত্থানের সবচেয়ে তাৎক্ষণিক প্রভাব হলো রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিতিশীলতা, যা অর্থনীতির সব খাতকে প্রভাবিত করে। অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হন। বাংলাদেশে একটি অভ্যুত্থান ঘটলে বর্তমান বিদেশি বিনিয়োগকারীরা হয় তাদের কার্যক্রম স্থগিত করবে, নয়তো নতুন বিনিয়োগ থেকে বিরত থাকবে। এটি বিনিয়োগ প্রবাহে গুরুতর বিঘ্ন সৃষ্টি করবে, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ধীর করে দিতে পারে।

বাণিজ্য ও রপ্তানি খাতে ঝুঁকি

বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি হলো তৈরি পোশাক শিল্প, যা বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের একটি বড় উৎস। গণ অভ্যুত্থান হলে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটবে, শ্রমিকদের মাঝে উদ্বেগ এবং অনিশ্চয়তা ছড়িয়ে পড়বে, এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে। এর ফলে রপ্তানি কমে যাবে এবং দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার আয় কমে যাবে।

মুদ্রাস্ফীতি ও মুদ্রার অবমূল্যায়ন

গণ অভ্যুত্থানের ফলে দেশে সরবরাহ চেইন ব্যাহত হতে পারে, যার ফলে খাদ্য ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সংকট দেখা দিতে পারে। এর ফলে মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যাবে এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান হ্রাস পাবে। এ পরিস্থিতি কেন্দ্রীয় ব্যাংককে মুদ্রা অবমূল্যায়নের দিকে ঠেলে দিতে পারে, যা বৈদেশিক ঋণের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে এবং অর্থনীতির স্থিতিশীলতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

রেমিট্যান্স প্রবাহের ওপর প্রভাব

বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিরা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন, বিশেষ করে রেমিট্যান্সের মাধ্যমে। যদি দেশে গণ অভ্যুত্থান ঘটে, প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হতে পারে এবং তারা হয়ত তাদের অর্থ পাঠানো কমিয়ে দিতে পারেন। এই ধরনের ঘটনা অর্থনীতির জন্য একটি বড় ধাক্কা হতে পারে, কারণ রেমিট্যান্স দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে সহায়তা করে।

সরকারি নীতিতে অনিশ্চয়তা ও উন্নয়ন প্রকল্পে বাধা

গণ অভ্যুত্থান সাধারণত সরকারি নীতির ধারাবাহিকতা এবং উন্নয়ন প্রকল্পের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প, বিশেষ করে অবকাঠামোগত উন্নয়নের উদ্যোগগুলো বন্ধ হয়ে যেতে পারে। নীতির অনিশ্চয়তা এবং পরিবর্তন অর্থনৈতিক পরিকল্পনার ধারাবাহিকতাকে ব্যাহত করবে, যার ফলে দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হবে।

সামাজিক ও মানবিক সংকট

অভ্যুত্থানের ফলে দেশজুড়ে বিশৃঙ্খলা এবং সংঘর্ষের সম্ভাবনা তৈরি হয়, যা সাধারণ জনগণের জীবনে ভয়াবহ প্রভাব ফেলে। মানবিক সংকটের সৃষ্টি হয়, এবং এতে অর্থনীতির আনুষঙ্গিক খাতগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিশেষ করে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং সামাজিক নিরাপত্তার মতো খাতগুলোতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

উপসংহার

বাংলাদেশে যদি গণ অভ্যুত্থান ঘটে, তাহলে তা দেশের অর্থনীতিতে গভীর এবং বহুমুখী প্রভাব ফেলবে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সামাজিক শান্তি বজায় রাখতে না পারলে অর্থনৈতিক অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হবে, এবং দেশের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা কঠিন হয়ে পড়বে। এই পরিস্থিতিতে, দেশের নেতৃত্ব এবং জনগণের উচিত হবে সচেতনতা, সহনশীলতা এবং সংলাপের মাধ্যমে সমস্যাগুলোর সমাধান করা, যাতে অর্থনীতি তার স্বাভাবিক গতিতে ফিরে আসতে পারে এবং দেশের উন্নয়ন অব্যাহত থাকে।

যুক্তরাষ্ট্রে দুই ভারতীয়-আমেরিকান আইনপ্রণেতার বাংলাদেশে ‘সমন্বিত’ হিন্দু আক্রমণ বন্ধের জন্য হস্তক্ষেপ চাওয়া

যুক্তরাষ্ট্রের দুই ভারতীয় আমেরিকান আইনপ্রণেতা বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে “সমন্বিত আক্রমণ” বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্র  সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপের দাবি করেছেন। তাঁরা উল্লেখ করেছেন যে অঞ্চলে অস্থিরতা, “ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা এবং সহিংস্রতার দ্বারা প্ররোচিত,”।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর, ৫ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের ৫২টি জেলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে অন্তত ২০৫টি হামলার ঘটনা ঘটেছে, এমন তথ্য দিয়েছে দুটি হিন্দু সংগঠন—বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ এবং বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ।

হাজার হাজার বাংলাদেশি হিন্দু সহিংস্রতা থেকে বাঁচতে প্রতিবেশী দেশ ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।

মিশিগানের কংগ্রেসম্যান শ্রী থানেদার, আগস্ট ৯ তারিখে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্তনি ব্লিঙ্কেনকে লিখিত চিঠিতে বলে যে বাংলাদেশে হিন্দুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত নৃশংসতার বিরুদ্ধে তাঁর অবস্থান একা নয়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অনেক সদস্য, তাঁর নিজের জেলা থেকেও কিছু, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে সহিংস কর্মকাণ্ডের নিন্দা করেছেন।

“মুহাম্মদ ইউনুস বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর, যুক্তরাষ্ট্রের একটি দায়িত্ব রয়েছে এই নতুন সরকারকে সহায়তা করার , যাতে সহিংস্রতা এবং নাগরিক অস্থিরতা শেষ হয়। আমি বাইডেন প্রশাসনকে আহ্বান জানাচ্ছি  বাংলাদেশি হিন্দু এবং অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য অস্থায়ী রক্ষিত স্থিতি প্রদান করার জন্য,” থানেদার লিখেছেন।

মুহাম্মদ ইউনুস, ৮৪ বছর বয়সী নোবেলজয়ী, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নিয়েছেন।শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে পালানোর পর, বাংলাদেশে হিন্দু মন্দির, বাড়ি এবং ব্যবসায়গুলি ভাঙচুর করা হয়েছে, নারীরা অসম্মানিত হচ্ছে এবং আওয়ামী লীগ পার্টির সাথে যুক্ত দুই হিন্দু নেতা নিহত হয়েছে।

থানেদার ব্লিঙ্কেনকে ইউনুস এবং তাঁর সরকারের সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন, “বাংলাদেশের হিন্দুদের বিরুদ্ধে আক্রমণ বন্ধ করার জন্য”।

“আমি আপনাকে বাংলাদেশে পরিস্থিতি এবং শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর সমন্বিত হিন্দুবিরোধি সহিংসতার উত্থান নিয়ে লিখছি। মুহাম্মদ ইউনুস এখন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের তার সরকারের সাথে জড়িত হওয়া অত্যন্ত জরুরি যেন সহিংসতা শেষ হয় এবং দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হয়,” কৃষ্ণমূর্তি লিখেছেন।

বিএনপির সঙ্গে দ্বন্দ্ব মিটিয়ে ফেলতে চান শেখ হাসিনার পুত্র জয়

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ও তার তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বিএনপির সঙ্গে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব মিটিয়ে ফেলার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার লক্ষ্যে তিনি এই উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানান।

জয় বলেন, দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য রাজনৈতিক সমঝোতা জরুরি। তিনি মনে করেন, দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক বিভাজন দূর করে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব, যেখানে সব রাজনৈতিক দল একসঙ্গে কাজ করতে পারবে।

বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে জয় বলেন, “আসুন, দেশের স্বার্থে আমরা সবাই মিলে একটি সমঝোতায় পৌঁছাই। দ্বন্দ্ব নয়, সমঝোতাই পারে আমাদের দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে।” তিনি উল্লেখ করেন, দেশের যুব সমাজও শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশ চায়, যেখানে তারা তাদের ভবিষ্যৎ গড়তে পারবে।

জয়ের এই মন্তব্যকে রাজনৈতিক মহলে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করা হলেও, বিএনপি নেতারা এখনও তাদের প্রতিক্রিয়া জানায়নি। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জয় যদি সত্যিই এই উদ্যোগে সফল হন, তবে দেশের রাজনীতিতে একটি নতুন অধ্যায় সূচিত হতে পারে।

দুই মাসের মধ্যেই সরকারের পতন হতে পারে: ইমরান খান

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান সম্প্রতি এক বক্তব্যে বলেছেন যে, বর্তমান সরকার দুই মাসের মধ্যেই পতনের সম্মুখীন হতে পারে। তার এই মন্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং ভবিষ্যৎ রাজনীতির গতিপথ নিয়ে জল্পনা-কল্পনার জন্ম দিয়েছে।

ইমরান খান বলেন, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং জনগণের অসন্তোষ সরকারের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমানভাবে অবস্থান তৈরি করছে। তিনি অভিযোগ করেন যে, বর্তমান সরকার জনবিরোধী নীতি গ্রহণ করে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে। ইমরান খান দাবি করেন, সাধারণ জনগণ আর এই সরকারের শাসন মেনে নিতে রাজি নয়, এবং তার ফলশ্রুতিতে খুব শিগগিরই সরকার পতনের সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে।

ইমরান খান আরও উল্লেখ করেন যে, তার দল পিটিআই আগামী নির্বাচনের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত এবং জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করতে চায়। তিনি বলেন, জনগণের ক্ষোভ এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে সরকারের বিরুদ্ধে একটি গণআন্দোলন শুরু হতে পারে, যা শেষ পর্যন্ত সরকারের পতনে পরিণত হবে।

অন্যদিকে, সরকারের পক্ষ থেকে ইমরান খানের এই বক্তব্যকে রাজনৈতিক চক্রান্ত বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। সরকার দাবি করেছে যে, ইমরান খান জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য এমন মন্তব্য করছেন এবং দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার চেষ্টা করছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইমরান খানের এই বক্তব্য পাকিস্তানের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে, এবং আগামী মাসগুলোতে দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।

একে অপরের রাষ্ট্রদূত বহিষ্কার করল ব্রাজিল ও নিকারাগুয়া

কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি ঘটিয়ে ব্রাজিল ও নিকারাগুয়া তাদের রাষ্ট্রদূতদের বহিষ্কার করেছে। দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনা এবং রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ব্রাজিল প্রথমে নিকারাগুয়ার রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করে, যার পরপরই নিকারাগুয়াও পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করে। কূটনৈতিক মহল মনে করছে, এই পদক্ষেপ দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের আরও অবনতির ইঙ্গিত দিচ্ছে।

ব্রাজিল সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, নিকারাগুয়ার মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং রাজনৈতিক দমন-পীড়নের বিষয়ে ব্রাজিলের উদ্বেগকে নিকারাগুয়া অগ্রাহ্য করেছে, যা এই কূটনৈতিক সংকটের মূল কারণ।

অন্যদিকে, নিকারাগুয়া অভিযোগ করেছে যে, ব্রাজিল তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে, যা তাদের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। এই উত্তেজনার ফলে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে আন্তর্জাতিক মহল থেকে কূটনৈতিক হস্তক্ষেপের আহ্বান উঠেছে।

আদালত ঘেরাওয়ের ডাকে ফুলকোর্ট সভা স্থগিত

প্রধান বিচারপতি হাই কোর্টের বিচারপতিদের নিয়ে পূর্বে নির্ধারিত ফুলকোর্ট সভা আহ্বান করেছিলেন। তবে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এই সময়েই হাই কোর্ট ঘেরাওয়ের ডাক দেয়, যার কারণে এই সভা স্থগিত করা হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনটি দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের সমন্বয়ে গঠিত একটি সংগঠন, যারা সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। তারা অভিযোগ করেছেন যে, আদালতে তাদের দাবি-দাওয়া সঠিকভাবে শুনানি করা হচ্ছে না এবং বিচার প্রক্রিয়ায় বৈষম্য করা হচ্ছে।

হাই কোর্ট ঘেরাওয়ের ডাক দেওয়ার পর, বিচার বিভাগের শীর্ষ পর্যায় থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং পরিস্থিতির উত্তেজনা ও নিরাপত্তার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে ফুলকোর্ট সভা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন যে, তারা ন্যায়বিচার না পাওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। অন্যদিকে, বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আইন ও বিচার বিভাগের ওপর নতুন করে চাপ সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে আদালতের স্বাধীনতা এবং ন্যায়বিচারের প্রশ্নটি আবারও আলোচনায় উঠে এসেছে।

ফের গাজার স্কুলে ইজরায়েলি বিমান হামলায় মৃত্যু শতাধিক

গাজার একটি স্কুলে ইজরায়েলি বিমান হামলায় ১০০ জনের বেশি লোকের মৃত্যু হয়েছে, এমন দাবি করেছে গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি। এই হামলার ফলে আরও অনেকে আহত হয়েছে।

স্থানীয় মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, শনিবার সকালে স্কুলটিতে তিনটি রকেট হামলা চালায় ইজরায়েল বিমান বাহিনী। স্কুলটি গাজার বর্তমান ভয়াবহ পরিস্থিতিতে শরণার্থীদের আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল।

ইজরায়েলি সামরিক বাহিনী বলছে, তারা হামলা করেছে কারণ ওই স্কুলে হামাসের কমান্ড এবং কন্ট্রোল সেন্টার ছিল। তাদের মতে, হামলার সময় কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছিল যাতে বেসামরিক ক্ষতির সম্ভাবনা কমানো যায়।

এই হামলার পর স্কুলটিতে ভয়াবহ আগুন লেগে যায়।উদ্ধারকর্মীরা আহতদের সক্রিয়ভাবে সাহায্য করতে সক্ষম হচ্ছে না আগুনের ভয়াবহতার জন্য, ইজরায়েলি কর্তৃপক্ষ ওই এলাকায় জল সংযোগ বন্ধ করে দেওযায় আরও বিপত্তি ঘটে।

মাহমুদ বাসাল, এজেন্সির মুখপাত্র, এক টেলিগ্রাম পোস্টে বলেছেন, “ইসরায়েলি বোমা হামলায় আল-টাবাই’ইন স্কুলে ৪০ জন শহীদ এবং বহু মানুষ আহত হয়েছে।”

তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, “টিমগুলো আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে এবং শহীদদের মরদেহ উদ্ধার ও আহতদের উদ্ধার করার কাজ চলছে।” হামলাটিকে “ভয়াবহ গণহত্যা” বলে বর্ণনা করেছেন তিনি।

রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেন ও কিয়েভের গোলাবর্ষণ হামলায় গুরুতর আহত বেশ কয়েকজন

গতকাল ইউক্রেন ও কিয়েভের সেনারা কুরস্কে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করলে রাশিয়ার সেনাদের সাথে তীব্র লড়াই হয়।ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর গোলাবর্ষণ হামলায় রাশিয়ার সীমান্তবর্তী কুরস্ক অঞ্চলে ৫৫ জন আহত হয়েছে,যারা এখনও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন এবং তাদের মধ্যে ১২ জনের অবস্থা খুবই গুরুতর, সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে এমনটাই জানিয়েছে রুশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখাইল মুরাশকো।

“কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনীয় সেনাদের গোলাবর্ষণ হামলায় আহত ৫৫ জন এখনও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। ১২ জন রোগীর অবস্থা গুরুতর,যার মধ্যে ৮জন শিশু রয়েছে। আউটপেশেন্ট কেয়ার পেয়েছেন ২০ জন, যার মধ্যে দুজন শিশু, স্বাস্থ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

মুরাশকো আরও বলেন, শক্তিশালী চিকিৎসা দল তৈরী করা হয়েছে,যারা দ্রুত গতিতে কাজ অব্যাহত রেখেছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ফেডারেল ডিজাস্টার মেডিসিন সেন্টার চিকিৎসা সহায়তার বিতরণ সমন্বয় করছে। “আহতরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাচ্ছেন,” মন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন।

৬ আগস্ট, কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে ব্যাপক আক্রমণ করা হয়। গোলাবর্ষণ এবং ড্রোন হামলায় অন্তত পাঁচজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন এবং ৬০ জনেরও বেশি আহত হন। স্থানীয় বাসিন্দাদের মস্কো সহ অন্যান্য রুশ অঞ্চলে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতে, বাটলগ্রুপ নর্থ এবং ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস (এফএসবি) সুদঝানস্কি এবং করেনেভস্কি জেলায় ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর প্রবাহিত হওয়ার প্রচেষ্টা ব্যর্থ করেছে। কুরস্ক অঞ্চলে সামরিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে কিয়েভ প্রায় ৯৪৫ জন সেনা এবং ১০২টি যন্ত্রপাতি হারিয়েছে, যার মধ্যে ১২টি ট্যাঙ্ক এবং ১৭টি আর্মার্ড পারসোনেল ক্যারিয়ার অন্তর্ভুক্ত।

ইউক্রেন ও কিয়েভপন্থী সেনারা রুশ সীমান্তে ঢুকে পড়ায় বাড়ে বিপত্তি,চলে তুমুল যুদ্ধ

বৃহস্পতিবার রাশিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় দুই পক্ষের চরম যুদ্ধ হয়।ইউক্রেনের সেনা এবং কিয়েভপন্থী যোদ্ধারা কুরস্ক অঞ্চল দখল করার চেষ্টা করে।গত মঙ্গলবার রাশিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমের সীমান্তবর্তী অঞ্চলটিতে ইউক্রেনের সেনা এবং কিয়েভপন্থী যোদ্ধারা ঢুকে পড়ে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রালয় জানায় যে, কুরস্কের পুরো অঞ্চলটি ইউক্রেন ও কিয়েভের সেনারা দখল করার চেষ্টা করে কিন্তু রুশ সেনারা তাদের পরিকল্পনা ব্যর্থ করে। ২০২২ সালের ইউক্রেনে হামলার পর থেকে রাশিয়ার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে কিয়েভপন্থী যোদ্ধারা অনেকবার অনুপ্রবেশ করেছে।আবার কখনো কখনো ইউক্রেন সেনাদের অনুপ্রবেশের খবরও পাওয়া যায়।

গতকাল ইউক্রেন ও কিয়েভের সেনারা কুরস্কে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করলে রাশিয়ার সেনাদের সাথে বাঁধে তীব্র লড়াই।রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রালয় থেকে এটিও জানানো হয় যে,রুশ সেনারা বুধবার ইউক্রেনের ৭টি যুদ্ধট্যাঙ্ক,সেনা পরিবহনের ৮টি গাড়ি, ৩১ টি যুদ্ধপরিবহনের গাড়িসহ মোট ৫০ টি যান ধ্বংস করে।ইউক্রেনের সেনা এবং কিয়েভপন্থী যোদ্ধারা কুরস্ক অঞ্চলে অনুপ্রবেশকে ‘বড় ধরণের উস্কানি’  বলে মন্তব্য করে রুশ প্রসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত মঙ্গলবার সকালে দুই ডজন সাঁজোয়া নিয়ে প্রায় এক হাজার ইউক্রেনীয় সেনা কুরস্ক অঞ্চলে ঢুকে পড়ে।প্রথমদিকে রুশ সরকার অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও সীমান্ত থেকে সেনাদের হাটিয়ে দেওয়ার ব্যাপারটিও নিশ্চিত করে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আইএসডব্লিউ সর্বশেষ পরিস্থিতির তথ্য দিয়ে জানায়, রুশ ভূখণ্ডের এ অভিযানে কুরস্ক প্রশাসনিক এলাকার প্রায় ১০ কিলোমিটার ভেতরে অগ্রসর হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী।

সুদঝা শহরেই রাশিয়ার সামরিক সরঞ্জাম রাখার কেন্দ্র। এই শহরকে ঘিরেই ইউক্রেনীয় সেনারা অগ্রসর হয়।প্রায় পাঁচ হাজার বাসিন্দার এই শহর ইউক্রেন সীমান্ত থেকে মাত্র আট কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

বাংলাদেশেকে হাতিয়ার করেই কী এবার ‘চিন’ জলপথে ভারতের উপর নজরদারী চালাবে!

অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদল হওয়ার পরই চিনা জাহাজের দেখা মিলল ভারত মহাসাগরে।ভারত মহাসাগরে কয়েক মাস ধরেই তাদের উপস্থিতি চোখে পড়ছিল। বর্তমানে চিনের তিনটি জাহাজ ভারতীয় উপকূলের কাছাকাছি চলে আসে। উপগ্রহ চিত্রে সেই সমস্ত জাহাজের অবস্থান চিহ্নিত করা গেছে,যা ভারতের জন্য একটি উদ্বিগ্নের বিষয়।

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন মুহাম্মদ ইউনূস।ইউনূসের সাথে চিনের সম্পর্ক হাসিনা অপেক্ষাকৃত ভালো।ভারতের কূটনীতিবিদরা এটি অনুমান করছেন যে,ভারতের পরমাণু এবং ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির উপর নজরদারী রাখার জন্যই চিনা জাহাজগুলি ভারতীয় উপকূলের কাছাকাছি বারংবার আসছে।আরও একটি উদ্বেগের বিয়ষ হল ভবিষ্যতে এই সমস্ত চিনা জাহাজগুলি শ্রীলঙ্কা অথবা মালদ্বীপে ঘাঁটি গড়তে পারে কিংবা বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী কোনো বন্দরে।

হাসিনা সরকারের আমলে বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী কোনো বন্দরে ঘাঁটি গড়ার সুযোগ চিন সরকার পায়নি।কিন্তু চিন ইউনূস ঘনিষ্ট হওযায় সেই সুযোগ শি জিনপিং সরকারের কাছে রয়েছে।পূর্বেও চিন ভারতের উপর নজরদারী চালানোর জন্য ভারতের প্রতিবেশী দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা এবং মালদ্বীপে ঘাঁটি গেড়েছিল।

একটি প্রতিবেদনের দাবি অনুযায়ী, শ্রীলঙ্কার দক্ষিণ-পূর্ব থেকে শুরু করে মূল ভারতীয় ভূখণ্ড এবং আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের মাঝামাঝি আন্তর্জাতিক জলসীমায় অবস্থান করছে শিয়াং ইয়াং হং ০৩, জোং শান ডা শু এবং ইউন ওয়াং ৭ নামে তিনটি চিনা জাহাজ। এর মধ্যে জোং শান ডা শু চিনের ‘সামুদ্রিক গবেষণাগার’ নামে পরিচিত। ১১৪.৩ মিটার দীর্ঘ এবং ১৯.৪ মিটার প্রস্থ ৬৮০০ টনের জাহাজটি চিনের বৃহত্তম গবেষণা জাহাজ।

error: Content is protected !!