Daily Archives: August 14, 2024

শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততার অভিযোগ ‘হাস্যকর’: মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর

সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততার অভিযোগ নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা চলছে। এই প্রসঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে জানায়, এই ধরনের অভিযোগ ‘হাস্যকর’ এবং ভিত্তিহীন।

বিবৃতিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপের পক্ষে নয়। তারা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং সবসময়ই জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটানোর উপর জোর দেয়। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে আরও জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখে এবং দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও জোরদার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই বিবৃতি এমন সময় এলো, যখন বাংলাদেশের রাজনীতিতে উত্তেজনা বাড়ছে এবং বিভিন্ন মহল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। সম্প্রতি কিছু রাজনৈতিক নেতা ও বিশ্লেষক দাবি করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র শেখ হাসিনার সরকারকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য পরিকল্পনা করছে। তবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এই ধরনের দাবিকে সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে এবং এটিকে ‘হাস্যকর’ আখ্যা দিয়েছে।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এই বিবৃতি যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান স্পষ্ট করেছে এবং এটি বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনা প্রশমিত করতে ভূমিকা রাখতে পারে। তবে একইসঙ্গে, তারা বলছেন, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করার জন্য সব পক্ষেরই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা জরুরি।

বিশ্লেষকরা আরও মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে যে কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে, তা দীর্ঘদিন ধরে গড়ে উঠেছে এবং এটি দ্বিপাক্ষিক স্বার্থের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। ফলে, এই ধরনের অভিযোগ দুই দেশের সম্পর্কের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে তারা আশঙ্কা করছেন। তবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এই বিবৃতি সেই আশঙ্কা অনেকটাই দূর করবে বলে তারা মনে করছেন।

উল্লেখ্য, শেখ হাসিনা সরকার দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। তাই, এই ধরনের অভিযোগ উত্থাপন এবং পরবর্তী সময়ে তা নাকচ করা দুই দেশের সম্পর্কের গভীরতার প্রমাণ হিসেবে দেখা যেতে পারে।

লেবাননের বৈরুতে দরিদ্র মানুষের জীবন আরও কঠিন হয়ে উঠছে, রয়েছে অতীতের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা…

লেবাননের রাজধানী বৈরুতের বাসিন্দারা নতুন করে সংঘাতের আশঙ্কায় ভীত। প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যা দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করছে এবং মুদ্রাস্ফীতি ৪০% এ পৌঁছেছে, এমন পরিস্থিতিতে লেবানন নতুন সংঘাতের জন্য প্রস্তুত নয়।

২০২০ সালের ৪ আগস্ট বৈরুত বন্দরে ২,৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বিস্ফোরণে শহরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল এবং এতে ২২০ জন নিহত ও ৭,০০০-এরও বেশি আহত হন। চার বছর পরও, এই বিস্ফোরণে আঘাতপ্রাপ্ত বহু পরিবার এখনও সেই ক্ষতি সামলে উঠতে অক্ষম।

২০১৯ সালের অর্থনৈতিক সংকটের পর, লেবাননের অর্থনীতি চরম বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়। লেবানিজ পাউন্ডের মান ২০১৯ সালের পর থেকে ৯৮% কমে গেছে এবং মুদ্রাস্ফীতি ৪০% পৌঁছেছে। জনগণের জীবনযাত্রার মান হয়েছে নিম্ন এবং সঠিক বেতন পর্যন্ত পান না।

২০২৩ সালের মার্চে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) লেবাননের দীর্ঘস্থায়ী সংকটের সতর্কতা প্রকাশ করেছিল। লেবাননের খাদ্য সরবরাহ বর্তমানে চার মাসের জন্য যথেষ্ট বলে মনে করা হচ্ছে, তবে জ্বালানির সরবরাহ সপ্তাহের হিসাবে পরিমাপ করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ সংকটের কারণে দৈনিক ব্ল্যাকআউট ঘটছে, যা সাধারণ নাগরিকদের জন্য আরো কঠিন পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে।

ইজরায়েল ও হেজবোলার মধ্যে চলমান উত্তেজনার কারণে যদি সংঘাত বাড়ে, তাহলে লেবাননের জন্য পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে। নাসের ইয়াসিন, পরিবেশ মন্ত্রী, জানান যে বর্তমান প্রস্তুতি খুবই সংকোচণীয় এবং সরকারী বাজেট প্রায় ৮০% কমে গেছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবাননে এক মিলিয়নেরও বেশি মানুষ সাময়িক আশ্রয়ের জন্য স্কুল বিল্ডিংয়ে আশ্রয় নিতে হতে পারে।
বৈরুতের বাসিন্দারা নতুন করে সংঘাতের আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন। যারা ভুক্তভোগি তারা এখনও সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করছেন এবং বর্তমান পরিস্থতি তাদের জীবনযাত্রা আরও কঠিনতর হয়ে উঠেছে। যা দেশের মানবিক সংকটকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা আগামী মাসে পদত্যাগ করবেন এবং পুনরায় নির্বাচনের জন্য প্রার্থী হবেন না..

কিশিদা আজ রাজধানীতে একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন যে এলডিপি’র (লিবারাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি) নেতৃত্বের জন্য দ্বিতীয় মেয়াদে প্রার্থী হবেন না এবং আগামী মাসে পদত্যাগ করবেন। তিনি উল্লেখ করেন যে এলডিপি’কে একটি পরিবর্তিত দল হিসেবে উপস্থাপন করার প্রয়োজন।

কিশিদা বলেছেন,“স্বচ্ছ এবং খোলামেলা নির্বাচন এবং মুক্ত ও সজাগ বিতর্ক এখন অতীতের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এলডিপি’র পরিবর্তন দেখানোর প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে আমি পদত্যাগ করছি।”

কিশিদার পদত্যাগের মূল কারণ হচ্ছে দলের মধ্যে চলমান রাজনৈতিক কেলেঙ্কারি। এলডিপি’র দুটি প্রধান গোষ্ঠী অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে, তাদের আয় ও ব্যয়ের যথাযথ ঘোষণা না দেওয়ার এবং রাজনৈতিক তহবিলকে অবৈধভাবে আইনপ্রণেতাদের মধ্যে বিতরণ।
কিশিদার অর্থনৈতিক নীতির প্রতি জনগণের আস্থাও কমে গেছে। বিশেষ করে মার্কিন ডলারের বিপরীতে ইয়েনের দুর্বলতার কারণে অর্থনৈতিক উদ্বেগ বেড়েছে।

কিশিদার পদত্যাগের ঘোষণার পর, ইয়েনের মূল্য ডলারের বিরুদ্ধে কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং নিক্কেই ২২৫ শেয়ার সূচক সামান্য কমেছে। মার্কেট বিশ্লেষকরা বলেছেন যে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বিনিয়োগকারীদের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে।

কিশিদার নেতৃত্বে জাপান আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, বিশেষ করে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে আমেরিকার জোট গঠনে এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের সময় জাপান তার সমর্থন অব্যাহত রেখেছে।

তবে এলডিপির ভেতরে বড় ধরনের আর্থিক কেলেঙ্কারির খবর প্রকাশিত হওয়ায় ফুমিও কিশিদার জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ে।

দেশটির পার্লামেন্টে এলডিপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। তাই যিনিই দলটির নেতা নির্বাচিত হবেন, তিনিই হবেন জাপানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।

বাইডেন সাম্প্রতি ইউক্রেনের অনুপ্রবেশ নিয়ে পুতিনের উদ্দেশ্যে কী বললেন…

সাম্প্রতিককালে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী এলাকার যুদ্ধের পরিস্থিতির ওপর গোটা দেশ নজর রেখেছে। ঠিক এরই মাঝে বাইডেন রাশিয়ার অনেকগুলি বিষয়ের উপর মন্তব্য করেন,যার মধ্যে কিছু মন্তব্য পুতিনেকে উদ্দেশ্যে করে বলা।

ফেব্রুয়ারি ২০২২ থেকে, রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে একটি বৃহৎ আকারের আক্রমণে যুক্ত হয়েছিল, যা ২০১৪ সালে রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখল এবং পূর্ব ইউক্রেনে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সমর্থনের সাথে চলা সংঘাতের একটি উল্লেখযোগ্য বিস্তার।এই আক্রমণ আন্তর্জাতিকভাবে শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে, যার মধ্যে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা, ইউক্রেনকে সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা, এবং রাশিয়াকে বৈশ্বিক স্তরে বিচ্ছিন্ন করার কূটনৈতিক প্রচেষ্টাও অন্তর্ভুক্ত।

বাইডেনের মন্তব্য:
বাইডেন বলেছেন যে,বর্তমান পরিস্থিতি পুতিনের জন্য একটি “বাস্তব সংকট” তৈরি করেছে। এটি সম্ভবত নির্দেশ করে যে পুতিন বিভিন্ন সামরিক, অর্থনৈতিক, এবং রাজনৈতিক চাপের কারণে একটি জটিল এবং চ্যালেঞ্জিং অবস্থার সম্মুখীন হয়েছে।

যুদ্ধের ময়দানে, রাশিয়ার সেনাবাহিনী, ইউক্রেনীয় সেনাদের প্রতিরোধ করতে যথেষ্ট সরব, কিন্তু এতে প্রাণহানি বাড়ার সম্ভাবনাও অধিক রয়েছে। যা তাদের সামরিক লক্ষ্য এবং দীর্ঘমেয়াদী কৌশলকে জটিল করে তুলেছে।
আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞাগুলি রাশিয়ার অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। এই অর্থনৈতিক চাপ পুতিনের প্রশাসনের ওপর বাড়তি বোঝা সৃষ্টি করেছে।

আন্তর্জাতিকভাবে,রাশিয়া বিভিন্ন দেশের দ্বারা কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতা এবং নিন্দার সম্মুখীন হয়েছে, যা তার অবস্থানকে আরও জটিল করেছে এবং পুতিনের লক্ষ্য অর্জনে বাধা সৃষ্টি করেছে।

৬ আগস্ট ইউক্রেন কুরস্কের পশ্চিমাঞ্চলে একটি বিস্ময়কর আক্রমণ চালায়। প্রায় ১,০০০ সৈন্য এবং ২৫টিরও বেশি সাঁজোয়া যান ও ট্যাঙ্ক ব্যবহৃত হয়। ইউক্রেনীয় সৈন্যরা কুরস্ক অঞ্চলের ২৮টি শহর ও গ্রাম দখল করেছে। কুরস্কের গভর্নর অ্যালেক্সি স্মিরনভ একটি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন এবং প্রতিবেশী বেলগোরোড অঞ্চলেও পালানোর নির্দেশ দেয়।

error: Content is protected !!