Monthly Archives: August 2024

ভারতীয় পর্যটকদের সংখ্যা কমায় মালদ্বীপের পর্যটন শিল্পে নেমেছে ধস

মোহাম্মদ মুইজ্জু সরকারের ক্ষমতায় আসার পর মালদ্বীপ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কের উত্তেজনা বেড়েছে। নতুন সরকারের বিদেশ নীতি ভারতবিরোধী হওয়ায় দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তিক্ত হয়ে উঠেছে। ফলে মালদ্বীপকে বয়কটের করার ডাক ওঠে ভারতের সামাজিক মিডিয়ায় ।

এছাড়া, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লাক্ষাদ্বীপের পর্যটন সম্ভাবনা তুলে ধরছেন এবং সেখানে ব্যাপক উন্নয়ন প্রকল্প শুরু করেছেন। এর ফলে লাক্ষাদ্বীপের প্রতি ভারতের পর্যটকদের আগ্রহ বেড়েছে, যা মালদ্বীপের পর্যটন শিল্পকে সরাসরি প্রভাবিত করেছে। মালদ্বীপের বদলে লাক্ষাদ্বীপকে পর্যটন গন্তব্য হিসেবে বেছে নিচ্ছেন অনেক ভারতীয়।

এই পরিবর্তনের ফলে মালদ্বীপের পর্যটন শিল্পে ধস নেমেছে, এবং দেশটির পর্যটন খাতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ভারতীয় পর্যটকদের সংখ্যা কমে যাওয়ায় মালদ্বীপের অর্থনীতি, যা পর্যটন খাতের উপর অনেকটাই নির্ভরশীল, তাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

২০২৩ সালে ভারত ছিল মালদ্বীপের পর্যটক উৎসের শীর্ষে, কিন্তু ২০২৪ সালে ভারত ষষ্ঠ স্থানে চলে এসেছে।

এই পরিবর্তন মালদ্বীপের পর্যটন শিল্পে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে, কারণ এটি দ্বীপদেশটির অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পর্যটন শিল্পের আয় কমে যাওয়ার কারণে মালদ্বীপের স্থানীয় পর্যটন সংস্থা ও ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন।

পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য মালদ্বীপের কর্তৃপক্ষ ভারতীয় পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য নতুন কৌশল গ্রহণের দিকে মনোনিবেশ করছে। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করার মাধ্যমে এবং পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় অফার ও সুবিধা প্রদান করে মালদ্বীপ আশা করছে পর্যটন খাতে উন্নতি সাধন করতে পারবে।

ফ্রান্স প্রাণীজগতের ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে টিকা প্রচার করে নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে

ফ্রান্স প্রাণীজগতের ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে টিকা প্রচারের মাধ্যমে নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ৩০ আগস্ট, ২০২৪ তারিখে ফ্রান্সের কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, তারা ব্লু টং ভাইরাস এবং ইপিজুটিক হেমোরেজিক ডিজিজ (EHD) নিয়ন্ত্রণে টিকা প্রচারণা বাড়িয়েছে।

ব্লু টং ভাইরাস, যা মৌমাছি ও অন্যান্য পোকামাকড়ের মাধ্যমে ছড়ায় এবং গরু, ভেড়া ও ছাগলের জন্য মারাত্মক হতে পারে, গত বছরের শেষে নেদারল্যান্ডস, উত্তর বেলজিয়াম ও পশ্চিম জার্মানিতে ছড়িয়ে পড়েছিল। এই ভাইরাস ফ্রান্সে প্রবেশ করেছে এবং ব্রিটেনেও প্রথম প্রাদুর্ভাব ঘটেছে।

ফ্রান্সে ব্লু টং ভাইরাসের ৩৪২টি প্রাদুর্ভাবের খবর পাওয়া গেছে এবং EHD ভাইরাসের ৩৪৪টি প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। এই ভাইরাসগুলি মানুষের জন্য ক্ষতিকর নয় এবং আক্রান্ত পশুদের উৎপাদিত খাদ্যের নিরাপত্তা নিয়ে কোনও উদ্বেগ নেই, তবে অর্থনৈতিকভাবে তা বড় ক্ষতি করতে পারে, বিশেষ করে বিদেশী বাজারের বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।

ফ্রান্স কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, ব্লু টং ভাইরাসের বিরুদ্ধে ১১.৭ মিলিয়ন ডোজ টিকা বিতরণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যা আগে ছিল ৬.৪ মিলিয়ন ডোজ। EHD ভাইরাসের বিরুদ্ধে ২ মিলিয়ন ডোজ টিকা সরবরাহ করা হবে, যা এক মিলিয়ন গরুর টিকাদান নিশ্চিত করবে।

এছাড়া, ফ্রান্স এই মাসে ঘোষণা করেছে যে, অক্টোবরে বার্ড ফ্লু (avian influenza) নিয়ন্ত্রণে দ্বিতীয় টিকা দেওয়া শুরু হবে, যা গত বছর সফল হয়েছিল। এই ভাইরাসের কারণে অতীতে বহু মুরগি মারা গেছে, এবং সাম্প্রতিক সময়ে এটি একটি ফার্মে প্রথমবারের মতো শনাক্ত হয়েছে।

পুতিন কেন এখনও ইউক্রেনের আক্রমণকারীদের রাশিয়া থেকে বের করে দেননি!

পুতিন কেন এখনও ইউক্রেনের আক্রমণকারীদের রাশিয়া থেকে বের করে দেননি, এই প্রশ্নের উত্তর বেশ জটিল। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হয়েছিল ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে, কিন্তু ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর সাহস ও আন্তর্জাতিক সমর্থনের কারণে রাশিয়ার লক্ষ্য অর্জন করা এত সহজ হয়নি।

প্রথমত, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী দুর্বল নয়। তারা একদিকে যেমন আন্তর্জাতিক সহায়তা পাচ্ছে, তেমনি তাদের সশস্ত্র বাহিনীও দৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। ইউক্রেনের সামরিক শক্তি, জাতীয় একতা, এবং পশ্চিমা দেশগুলোর সমর্থন রাশিয়ার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।

দ্বিতীয়ত, রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ সমস্যাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা, অর্থনৈতিক চাপ, এবং সামরিক বাহিনীর ত্রুটি রাশিয়ার যুদ্ধের সামর্থ্যকে ক্ষুণ্ণ করেছে। সামরিক বাহিনীর মধ্যে অস্থিরতা ও পরিকল্পনার অভাবও রাশিয়ার অগ্রগতি রোধ করেছে।

তৃতীয়ত, পুতিনের রাজনৈতিক লক্ষ্য এবং কৌশলগুলি কেমন হতে পারে সেটাও ভাবার বিষয়। রাশিয়ার পক্ষ থেকে যুদ্ধে একটি সামগ্রিক বিজয় লাভের বদলে কৌশলগত ও ভূরাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জন করতে হতে পারে। পুতিনের জন্য এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী খেলা হতে পারে, যেখানে সামরিক বিজয়ের চেয়ে বৃহত্তর রাজনৈতিক সুবিধা অর্জন গুরুত্বপূর্ণ।

এছাড়াও, পুতিনের কিছু কৌশলগত পদক্ষেপের মধ্যে ইউক্রেনের অঞ্চলে সামরিক দখল বজায় রাখা এবং আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে একটি কৌশলগত সুবিধা অর্জন অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। এর ফলে, ইউক্রেনের আক্রমণকারীদের দ্রুত সরিয়ে দেওয়া পুতিনের বর্তমান কৌশলগত লক্ষ্য নাও হতে পারে।

রাষ্ট্রদোহ মামলায় হংকংয়ের দুই সাংবাদিক দোষী সাব্যস্ত

Asia Monitor18 হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থি একটি পত্রিকার নেতৃত্ব দিয়ে দেশদ্রোহের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন চুং পুই কুয়েন ও প্যাট্রিক ল্যাম নামক দুই সাংবাদিক। চুং ও ল্যাম এর বয়স ৫৪ এবং ৩৬ বছর। এই দুই সাংবাদিক হংকংয়ে বর্তমানে বন্ধ থাকা স্ট্যান্ড নিউজের সম্পাদক ছিলেন।

১৯৯৭ সালে হংকং ব্রিটেন থেকে চীনের হাতে হস্তান্তর হওয়ার পর এটিই প্রথম রাষ্ট্রদোহ মামলা কোন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে। রাষ্ট্রদোহ মূলক প্রবন্ধ প্রকাশের অভিযোগে এই দুই সাংবাদিককে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত। মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলি আদালতের রায়ের নিন্দা জানিয়েছে। স্ট্যান্ড নিউজের মূল সংস্থা বেস্ট পেনসিল লিমিটেডের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৭ টি সংবাদ প্রবন্ধ ও মন্তব্য প্রকাশের ষড়যন্ত্রে রাষ্ট্রদ্রোহ মূলক অভিযোগ আনা হয়েছিল।

সেখানে চুং ও ল্যাম দুজনেই নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেন। বৃহস্পতিবার কেবলমাত্র চুং আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আদালতে যে প্রবন্ধগুলোকে  রাষ্ট্রদোহ মূলক বলে গণ্য করা হয়েছে তার অধিকাংশই চুং সম্পাদনা করেছিলেন। আদালতের মতানুসারে, যেগুলোকে রাষ্ট্রদোহ মূলক বলে গণ্য করা হয়েছে তার মধ্যে নির্বাসিত অ্যাক্টিভিসট,নাথাল ল এবং সানি চিয়ুং, অভিজ্ঞ সাংবাদিক অ্যালান আউ এবং চুঙের স্ত্রী চ্যান পুই ম্যানের লেখা।

৫৭ দিনের বিচারকালে, সরকারি প্রসিকিউটার লরা এনজি বলেছেন, স্ট্যান্ড নিউজ একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম  হিসেবে কাজ করত যা অবৈধ মতাদর্শ প্রচার করত।

২৬ সেপ্টেম্বর রায় ঘোষণা করা হবে। এই রায়ের উপর ভিত্তি করে তাদের দুই বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

রাশিয়ায় প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা ৯২ জন মার্কিনীর

যুক্তরাষ্ট্রের ৯২ জন সাংবাদিক, আইনজীবী এবং ব্যবসায়ীকে রাশিয়া বিরোধী দৃষ্টিভঙ্গির অভিযোগে  রাশিয়ায় প্রবেশ করার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন মস্কো। ৯২ জন প্রকাশ করা এই নামের তালিকার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ২৪ জন সাংবাদিক রয়েছে। এদের মধ্যে ১৪ জন ওয়ালস্ট্রিট জার্নালের, পাঁচ জন নিউইয়র্ক টাইমসের, এবং চারজন ও য়াশিংটন পোস্টে কর্মরত রয়েছে। নিষেধাজ্ঞার এই তালিকার মধ্যে বেশ কয়েকজন রাষ্ট্রীয় কৌঁসুলি, মার্কিন প্রতিরক্ষা শিল্প সংস্থার কর্মী, এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আধ্যাপকের নাম রয়েছে।

স্নায়ুযুদ্ধের পর থেকে ইউক্রেন যুদ্ধ রাশিয়ার সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে অবনতির সৃষ্টি করেছে। রাশিয়া জানিয়েছে, পশ্চিমারা ইউক্রেনকে রাশিয়ার অভ্যন্তরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার অনুমতি দিয়ে আগুন নিয়ে খেলছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সাংবাদিক ইভান গারশকোভিচ ১৬ মাস রাশিয়ায় আটক থাকার পর বন্দি বিনিময়ের মাধ্যমে মুক্তি পান। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল রাশিয়ার এই নিষেধাজ্ঞাকে ‘হাস্যকর’ বলে বর্ণনা করেছেন।

তবা রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, তারা বিশ্বমানের প্রধান কিছু সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিকদের উপর নজর দিচ্ছে। এছাড়াও রুশ সরকার জানিয়েছে যে তথাকথিত স্বাধীনতা, মুক্তবিশ্বের নামে যারা রাশিয়া এবং রাশিয়ার জনগণের বিরুদ্ধে গুজব- প্রপাগণ্ডা ছড়াচ্ছে তাদের রাশিয়ায় প্রবেশের প্রয়োজন নেই।

রাশিয়ার মার্কিনীদের উপর এমন নিষেধাজ্ঞা এটি প্রথম নয় এর আগে গত বছর সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সহ ৫০০ মার্কিনীর ওপর রাশিয়ায় প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল।

রাশিয়ার ১০০ বসতি দখলের দাবিঃ ইউক্রেনের

Asia Monitor18 রাশিয়ার সীমান্তবর্তী কুরস্ক অঞ্চলে তিন সপ্তাহ লড়াই হয়েছিল। তিন সপ্তাহ লড়াইয়ের পর ১০০ রুশ বসতি এবং এর সাথে ১হাজার ২৯৪ বর্গকিলোমিটার এলাকা দখল করার দাবি জানিয়েছে। ইউক্রেইনের সেনারা গত ৬ ই আগস্ট হটাত করে কুরস্ক অঞ্চলে ঢুকে পড়ে এবং এরপর সাত দিনেই রাশিয়ার ভূখন্ডের ১ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা দখলে নেওয়ার দাবি করেছে ইউক্রেইন। 

ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভেলোদিমির জেলেনস্কি গত সপ্তাহে জানিয়েছেন, রাশিয়ার ভূখন্ডের ১২৫০ বর্গকিলোমিটারের বেশি জায়গা দখলে নিয়েছে ইউক্রেনের সেনারা। ইউক্রেইন আগে বলেছিল, তাদের রুশ ভূখন্ড দখলের কোনও অভিপ্রায় নেই।তাদের লক্ষ্য কেবল পূর্ব ইউক্রেইনে রুশ বাহিনীর আক্রমণ থেকে মনোযোগ সরিয়ে নিয়ে তাদের হটিয়ে দেওয়া।

 কিন্তু এখনও রুশ বাহিনী পূর্ব ইউক্রেনে হামলা করছে। কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনে হামলার পাল্টা জবাব দেবে বলে জানানো হয়েছে। গত দুদিন ধরে ইউক্রেনে রাশিয়ার বিমান হামলা বেড়ে গেছে। এর আগে রাশিয়া ইউক্রেইনে হামলা চালায় এবং সেই হামলার ফলে চারজন নিহত হয়। ইউক্রেইনীয় কমান্ডার ইন চিফ ওলেক্সান্দর সিরস্কি এও বলেছেন যে, ইউক্রেইন ৫৯৪ জন রুশ সেনাকে আটক করেছে।

পশ্চিমি তীরে  মসজিদের  ভেতরে ৫ ফিলিস্তিনিকে হত্যা  ইসরায়েলি সেনার

Asia Monitor18 ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের তুলকার্ম নামক একটি শহরের এক মসজিদের ভেতরে লুকিয়ে থাকা পাঁচ ফিলিস্তিনি যোদ্ধাকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। স্থানীয় সময় এই ঘটনা ঘটে।  হেলিকপ্টার, ড্রোন ও সাঁজোয়া যান নিয়ে তুলকার্ম, জেনিন ও জর্ডান উপত্যকার এলাকাগুলোতে অভিযান শুরু করে শত শত ইসরায়েলি সেনা।

         বুধবার মধ্যরাত থেকে এই অভিযান শুরু হয়। এই হত্যাকান্ড গত কয়েকদিনের চলা অভিযানের মধ্যে অন্যতম একটি। বুধবার মাঝরাতে শুরু হলেও বৃহস্পতিবারেও অভিযান শেষ হয়নি বলে জানা গেছে প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে। এছাড়াও তারা জানিয়েছে  ইসরায়েলই অভিযানের আগে গাজা ও পশ্চিম তীরের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। জেনিনের প্রধান হাসপাতালের সামনে ইসরায়েলই সেনারা অবস্থান করেছিল। অ্যাম্বুলেন্স গুলিতে তল্লাশি চালাচ্ছিল।

ইসরায়েলই সেনারা বুধবার হাসপাতালটির সামনে মাটির স্তূপ তৈরি করে প্রবেশ আটকে দিয়েছিলেন। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য বিভাগের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, বুধবারের এই ইসরায়েলই অভিযানে প্রায় ১২ জন ফিলিস্তিনির হত্যা হয়েছে। তুলকার্মের মসজিদে যে ৫ জনকে হত্যা করা হয়েছে তার মধ্যে আবু শুজা নামে পরিচিত মুহম্মদ জব্বারও একজন।

১৯৬৭ সালের যুদ্ধে পশ্চিমি তীর দখল করে নেয় ইসরায়েল।

কুপওয়ারায় এক জঙ্গিকে নিরাপত্তা বাহিনী শেষ করে, তল্লাশি অভিযান চলছে!

জম্মু ও কাশ্মীরের কুপওয়ারা জেলায় নিরাপত্তা বাহিনী একটি জঙ্গিবিরোধী অভিযানে এক সন্ত্রাসীকে শেষ করেন। বৃহস্পতিবার ভোরে, কুপওয়ারার মাচিল সেক্টরে সংঘর্ষের সময় এই ঘটনা ঘটে। গোপন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে, সেনাবাহিনী এবং অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী যৌথভাবে এই অভিযান শুরু করে।এই ঘটনা ২৮-২৯ আগস্ট রাতের মধ্যে ঘটে এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর চীনার কোরপস সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আপডেট প্রদান করে।

অভিযানের সময়, জঙ্গিরা নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর গুলি চালায়, যার ফলে পাল্টা আক্রমণ করে বাহিনী। এতে এক জঙ্গি নিহত হয়। নিহত জঙ্গির পরিচয় এখনো পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে, তার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

কুপওয়ারা অপারেশনের পাশাপাশি রাজৌরি জেলায় একটি আলাদা অনুসন্ধান অভিযান চলছে। এই অভিযানটিতে ২৮ আগস্ট সন্ধ্যায় খেরি মোহরা লাঠি এবং দান্তল এলাকায় জঙ্গি ও নিরাপত্তা বাহিনী দুই তরফ থেকেই গুলি চলে।নিরাপত্তা বাহিনী এই অঞ্চলে বাকি সন্ত্রাসীদেরও খোঁজ চালাচ্ছে।

বর্তমানে পুরো এলাকা ঘিরে তল্লাশি অভিযান চলছে এবং কোনো সম্ভাব্য সহযোগী জঙ্গির খোঁজে এলাকাটি খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে। নিরাপত্তা বাহিনী সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকতে এবং সন্দেহজনক কোনো কিছু দেখলে সাথে সাথে জানানোর আহ্বান জানিয়েছে।

এই অভিযান জম্মু ও কাশ্মীরের সাম্প্রতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির অংশ হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে, যেখানে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিরাপত্তা বাহিনী সজাগ রয়েছে।

মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র দালাই লামা ও চীনের মধ্যে সরাসরি আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সফলভাবে হাঁটুর চিকিৎসা শেষ করে, তিব্বতির আধ্যাত্মিক নেতা ১৪ তম দালাই লামা ২৮ আগস্ট তার ধর্মশালায় ফিরে এসেছেন। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময়, দালাই লামা বিভিন্ন মার্কিন কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেছেন, যা তিব্বতের নানান সমস্যার কথা তুলে ধরে।

১৯৫০-এর দশকে চীনের PRC দ্বারা আক্রমণের পর তিব্বত চীনের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে এবং এটি আন্তর্জাতিক উদ্বেগের একটি কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিকে, ভারতে মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র দালাই লামার সাথে দেখা করেছেন এবং PRC-কে আধ্যাত্মিক নেতার সাথে সরাসরি আলাপচারিতা শুরু করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।

চ্রিস এলমস বলেছেন, “১৩ বছর হয়ে গেছে এসব আলোচনা বন্ধ হয়ে গেছে এবং আমরা PRC-কে দালাই লামা অথবা তার প্রতিনিধিদের সাথে শর্তহীনভাবে সরাসরি আলোচনা করতে উৎসাহিত করছি।” চ্রিস আরও বলেন, “রেজল্ভ অ্যাক্ট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান বর্ণনা করে এবং এটি এমন কিছু যা আমরা আমাদের মিশনের অংশ হিসেবে নিউ দিল্লিতে মার্কিন দূতাবাসে চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা তিব্বতি জনগণকে সমর্থন করি, আমরা বিশ্বজুড়ে এটি করি। তাই এটি দীর্ঘকাল ধরে চলতে থাকা একটি বিষয় এবং আমরা এটি চালিয়ে যাচ্ছি। আমার সফরের অংশ হলো আমেরিকা কিভাবে তিব্বতি জনগণকে সবচেয়ে ভালভাবে সমর্থন করতে পারে তা বোঝা। আমরা সরাসরি আলোচনার আহ্বান করছি এবং সমাধানের জন্য প্রস্তুত। আমাদের সরকার কেন্দ্রীয় তিব্বতী প্রশাসনের সাথে আলোচনা করেছে এবং আমরা সত্যিই চাই যে আলোচনা শর্তহীনভাবে যত দ্রুত সম্ভব সরাসরি শুরু হোক।”

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ইউনুস নেতৃত্বাধীন জামায়াতে ইসলামী পার্টির নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল

বর্তমানে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনুস, বুধবার ইসলামী জামায়াতে ইসলামী পার্টির ওপর থেকে সমস্ত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে বর্তমান সরকার। এই নিষেধাজ্ঞাটি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বারা আরোপিত হয়েছিল।

শেখ হাসিনা, যিনি ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ভারতে পালিয়ে যান, এই পার্টিকে “জঙ্গি এবং সন্ত্রাসী” সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করেছিল এবং ছাত্র সংগঠন ও অন্যান্য সহযোগী সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে সরকারি চাকরির কোটার বিষয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগ তুলেছিলেন। এক মাসব্যাপী সহিংস প্রতিবাদ এবং হাসিনার দমন-পীড়নে জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী ৬০০-এরও বেশি মানুষ নিহত হন।

অভ্যন্তরীণ মন্ত্রণালয় নিষেধাজ্ঞাগুলি প্রত্যাহার করেছে, যা পার্টিটিকে তার কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার পথকে সুগম করেছে। তবে, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য পার্টিকে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে নিবন্ধন করতে হবে।

পার্টি নেতৃত্বের কাছ থেকে তৎক্ষণাৎ কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। জামায়াতে ইসলামীকে ২০১৩ সাল থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়নি, যখন নির্বাচন কমিশন তার নিবন্ধন বাতিল করে এবং এই সিদ্ধান্তটি উচ্চ আদালতে থেকে বহাল করা হয়, রায় এ এটা বলা হয় যে, পার্টির চার্টার সাংবিধানিকতার বিরুদ্ধে যায় কারণ এই পার্টি ধর্মনিরপেক্ষতার বিরোধিতা করে।

আইন বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন যে হাসিনার নিষেধাজ্ঞাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল এবং আদর্শ ভিত্তিক নয়।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, যিনি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আছেন, হাসিনার সরকারকে দায়ী করেছেন যে নিষেধাজ্ঞাটি সহিংসতা থেকে জনগনের নজর সরানোর জন্য ছিল, যেখানে নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের শক্তি ব্যবহার করে এবং প্রতিবাদকারীদের মধ্যে মৃত্যুর অভিযোগ করা হয়েছিল।

ইউনুস নেতৃত্বাধীন সরকার রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও শৃঙ্খলা পুনঃস্থাপন করতে চেষ্টা করছেন, পুলিশ বাহিনী এবং অন্যান্য সরকারী খাতগুলো বিক্ষোভকারীদের আক্রমণের পরে হতাশ হয়ে পড়েছে। এক বিধ্বংসী বন্যা দেশের পূর্বাঞ্চল ও অন্যান্য অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষতি করেছে, অন্তত ২৭ জন নিহত হয়েছেন।

হাসিনার অধীনে, যাকে একনায়ক হিসেবে সমালোচিত করা হয়েছে, জানুয়ারিতে নির্বাচনের আগে হাজার হাজার বিরোধী নেতৃবৃন্দ ও কর্মীকে আটক করা হয়েছিল। মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলি অভিযোগ করেছে যে তিনি নিরাপত্তা বাহিনী ও আদালতকে বিরোধীদের দমন করতে ব্যবহার করেছেন, যা তিনি অস্বীকার করেন।

জামায়াতে ইসলামী ১৯৪১ সালে ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসনের সময় প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশ গঠনের বিরোধিতা করেছিল। ২০১৩ সালে, ঢাকায় এক বিশাল উন্মাদনায় তরুণ গোষ্ঠী, সুশীল সমাজের সংস্থা ও ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দলগুলি পার্টির নেতৃত্বের মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছিল ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধের জন্য।

বেশিরভাগ সিনিয়র নেতাদের ২০১৩ সাল থেকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে অথবা কারাগারে পাঠানো হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে হত্যা, অপহরণ এবং ধর্ষণ অন্তর্ভুক্ত। পার্টিটি পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে সহায়তা করার জন্য মিলিশিয়া গোষ্ঠী গঠন করেছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয় ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১-এ, প্রতিবেশী ভারত সহায়তায়।

error: Content is protected !!