Monthly Archives: July 2024

মিয়ানমারের জান্তা মন্ত্রীর রাশিয়া সফর: ইস্পাত প্ল্যান্ট ও ওষুধ উৎপাদন সহযোগিতার আলোচনা

নেইপিডো, ১৬ জুলাই, ২০২৪: মিয়ানমারের জান্তা সরকারের শিল্প মন্ত্রী চার্লি থান দক্ষিণ শান রাজ্যে একটি রাশিয়া-সমর্থিত ইস্পাত প্ল্যান্ট সম্পূর্ণ করতে এবং অভ্যন্তরীণভাবে ওষুধ উৎপাদনের জন্য কাঁচামাল আমদানি নিয়ে আলোচনা করতে গত সপ্তাহে রাশিয়া সফর করেছেন। রাষ্ট্রীয় মিডিয়া সূত্রে এই খবর জানা গেছে।

রাশিয়ায় চার্লি থানের এই সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিল দীর্ঘদিন ধরে স্থবির থাকা ইস্পাত প্ল্যান্ট প্রকল্পটিকে পুনরুজ্জীবিত করা। পাশাপাশি, মিয়ানমারের ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্পকে শক্তিশালী করতে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানি নিয়ে রাশিয়ার সাথে আলোচনা করা। জান্তা সরকারের প্রধান মিন অং হ্লাইং মায়ানমারে ইস্পাত ও ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য উৎপাদন বাড়ানোর জন্য মন্ত্রীর ওপর ক্রমাগত চাপ দিচ্ছেন, যা আমদানির খরচ কমাতে সহায়ক হবে।

রাশিয়ার সহযোগিতায় এই ইস্পাত প্ল্যান্টটি চালু হলে মিয়ানমারের ইস্পাত উৎপাদনে স্বনির্ভরতা অর্জন করতে সক্ষম হবে। এর ফলে দেশটি বিদেশ থেকে ইস্পাত আমদানি নির্ভরতা কমাতে পারবে। এছাড়া, ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যের কাঁচামাল আমদানি বৃদ্ধি মিয়ানমারের ওষুধ উৎপাদন শিল্পকে সমৃদ্ধ করবে, যা দেশের স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।এই সফরের ফলস্বরূপ মিয়ানমার এবং রাশিয়ার মধ্যে অর্থনৈতিক ও কৌশলগত সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই উদ্যোগ মিয়ানমারের অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে সহায়ক হবে এবং দেশের শিল্প খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

চার্লি থানের রাশিয়া সফর সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে জান্তা সরকারের মুখপাত্র বলেন, “আমরা রাশিয়ার সাথে আমাদের কৌশলগত ও অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করতে চাই। ইস্পাত এবং ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্পে রাশিয়ার সাথে আমাদের এই সহযোগিতা মিয়ানমারের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।”

মধ্যএশিয়ায় চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব: জাপানের কৌশলগত পদক্ষেপে ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষার প্রচেষ্টা

টোকিও, ১৬ জুলাই, ২০২৪: মধ্য এশিয়ায় চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের প্রতিক্রিয়ায় জাপান এই অঞ্চলে তার উপস্থিতি জোরদার করতে শুরু করেছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে জাপান আশা করছে, চীনের প্রভাবকে বাধাগ্রস্ত করার পাশাপাশি মধ্য এশিয়ার দেশগুলির স্বাধীনতা রক্ষা করা যাবে এবং ইউরেশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে জাপানের প্রভাব বাড়ানো সম্ভব হবে।

জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, মধ্য এশিয়ার দেশগুলির সাথে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক শক্তিশালী করতে জাপান একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর অংশ হিসেবে প্রযুক্তি, শিক্ষা এবং অবকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, জাপানের এই পদক্ষেপের দ্বিগুণ প্রভাব রয়েছে। প্রথমত, এটি মধ্য এশিয়ার দেশগুলির স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে সহায়ক হবে। দ্বিতীয়ত, এটি ইউরেশিয়ার ভূ-রাজনীতি গঠনে জাপানের প্রভাবকে বাড়িয়ে তুলবে, যা এই অঞ্চলে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।মধ্য এশিয়ার অনেক দেশই চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অংশ হিসেবে বিভিন্ন প্রকল্পে জড়িত। তবে এই প্রকল্পগুলো নিয়ে দেশগুলোর মধ্যে চীনের প্রভাব বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। জাপানের উদ্যোগ এসব দেশের জন্য একটি বিকল্প সরবরাহ করতে পারে এবং চীনের একক প্রভাবকে প্রতিহত করতে সহায়তা করবে।

জাপানের কৌশলগত পদক্ষেপের ফলে মধ্য এশিয়ায় নতুন ধরনের সহযোগিতা ও প্রতিযোগিতার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। এটি শুধু এই অঞ্চলেই নয়, বরং সমগ্র ইউরেশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক ভারসাম্যে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারে।জাপানের এই উদ্যোগ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যেও সাড়া ফেলেছে। বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা জাপানের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে এবং এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা প্রকাশ করেছে।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, “আমরা মধ্য এশিয়ার দেশগুলির সাথে আমাদের সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি, এই অঞ্চলে আমাদের উপস্থিতি জোরদার করা কেবল মধ্য এশিয়ার দেশগুলির জন্যই নয়, বরং সমগ্র ইউরেশিয়ার জন্যও মঙ্গলজনক হবে।”

কোটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বিকৃতভাবে প্রকাশ করা হচ্ছে: ওবায়দুল কাদের

ঢাকা, ১৬ জুলাই, ২০২৪: বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে বিকৃতভাবে প্রকাশ করা হচ্ছে। রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটার বিষয়ে সুস্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছেন। তবে কিছু অসাধু ব্যক্তি ও গোষ্ঠী তার বক্তব্যকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। আমরা এ ধরনের অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা জানাই।”

কাদের আরও বলেন, “কোটা সংস্কারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান সবসময়ই শিক্ষার্থীবান্ধব। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, কোটা পদ্ধতি নিয়ে যৌক্তিক ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে এই বিষয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে জনমনে অস্থিরতা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।”

এই প্রসঙ্গে তিনি সকলকে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান এবং গুজবে কান না দিয়ে সঠিক তথ্য যাচাই করার পরামর্শ দেন। তিনি আরও বলেন, “সরকার শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে এবং সবার মতামত নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।”

ওবায়দুল কাদের জানান, সরকার সবসময় শিক্ষার্থীদের পাশে ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত নিয়ে অত্যন্ত আন্তরিক। কোনো ধরনের ভুল তথ্য বা অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে সরকার ও জনগণকে একসাথে কাজ করতে হবে।”

এদিকে, কোটার বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা ও বিতর্ক চলছে। শিক্ষার্থীরা তাদের দাবির পক্ষে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে এবং সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে তাদের সাথে আলোচনা করা হচ্ছে।

ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যের পর সংশ্লিষ্ট মহলে বিষয়টি নিয়ে আরও সচেতনতা তৈরি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। একইসাথে, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সঠিক ও সত্য প্রকাশ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বুয়েন্স আয়ার্সে ইহুদিদের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে বোমা হামলা: ইরানি নাগরিকদের জড়িত থাকার অভিযোগ

বুয়েন্স আয়ার্স, ১৬ জুলাই, ২০২৪: আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সে অবস্থিত ইহুদিদের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র আমিআ ভবনে ভয়াবহ বোমা হামলার ঘটনায় ইরানি নাগরিকদের জড়িত থাকার অভিযোগ করেছেন আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ও বিচারমন্ত্রী মারিয়ানো কুনিও লিবারোনা। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করা হয়।

হামলার ফলে আমিআ ভবনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং অন্তত ২০ জন নিহত ও ৫০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। পুলিশ ও উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে এবং মৃতদেহ উদ্ধার করছে।

মারিয়ানো কুনিও লিবারোনা জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যে এই হামলার পেছনে ইরানি নাগরিকদের সম্পৃক্ততা রয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা সুনির্দিষ্ট তথ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে এই অভিযোগ করছি। তদন্ত চলছে এবং আমরা আশা করছি শীঘ্রই এর পেছনের কুশীলবদের চিহ্নিত করতে সক্ষম হব।”

এই ঘটনার পর আর্জেন্টিনার বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে এবং বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনী হামলাকারীদের খুঁজে বের করতে এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এই হামলার নিন্দা জানানো হয়েছে এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করা হয়েছে। ইহুদি সম্প্রদায়ের নেতারা এই হামলাকে একটি বর্বরোচিত ও কাপুরুষোচিত আক্রমণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

এই হামলা ১৯৯৪ সালে একই ভবনে ঘটে যাওয়া বোমা হামলার স্মৃতিকে তাজা করে তুলেছে, যেখানে ৮৫ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছিলেন। সেই হামলার তদন্তেও ইরানি সরকারের ওপর অভিযোগ ওঠে, তবে তা আজও নিষ্পত্তি হয়নি।

আর্জেন্টিনা সরকার এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দায়ীদের বিচার নিশ্চিত করতে সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র জানান, “আমরা আর্জেন্টিনার জনগণের নিরাপত্তা রক্ষায় সবসময় সতর্ক রয়েছি এবং এ ধরনের জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করব।”

চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে ৪ কেজি কোকেনসহ বিদেশি নারী আটক

চট্টগ্রাম, ১৬ জুলাই, ২০২৪: চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৪ কেজি কোকেনসহ স্টালিয়া শান্টে নামে এক বিদেশি নারীকে আটক করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। আটককৃত নারী ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ বাহামার নাগরিক। সোমবার রাতে এক গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে তল্লাশি চালিয়ে কোকেনসহ আটক করা হয়।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, স্টালিয়া শান্টে (২৮) একটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে চট্টগ্রামে আসেন। তল্লাশির সময় তার লাগেজের ভেতরে বিশেষ কায়দায় লুকানো অবস্থায় কোকেনের প্যাকেটগুলো উদ্ধার করা হয়। কোকেনের বাজার মূল্য প্রায় ২০ কোটি টাকা।

কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, স্টালিয়া শান্টে প্রথমে সন্দেহভাজন হিসেবে নজরে আসেন তার অস্বাভাবিক আচরণের কারণে। এরপর তার লাগেজ তল্লাশি করে এই বিপুল পরিমাণ কোকেন পাওয়া যায়। তাকে আটক করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এবং পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ ধরনের ঘটনা আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালান চক্রের সাথে সম্পর্কিত হতে পারে। তারা এই চক্রের অন্যান্য সদস্যদের চিহ্নিত করতে তদন্ত শুরু করেছেন।

চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এই সাফল্য মাদক নিয়ন্ত্রণে একটি বড় অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, মাদক চোরাচালান রোধে বিমানবন্দর এবং দেশের অন্যান্য প্রবেশপথগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে।

এই ঘটনাটি দেশের বিভিন্ন মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো মাদক চোরাচালান রোধে আরও তৎপর হতে প্রস্তুত।

কোটা সংস্কার আন্দোলন: শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, দেশের বিভিন্ন মহাসড়ক অবরোধ

ঢাকা, ১৬ জুলাই, ২০২৪: কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার পর দেশের বিভিন্ন মহাসড়কে অবরোধের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রাতে ঢাকার শাহবাগে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর একদল অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির হামলা চালানোর পর আজ সারা দেশে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে।

হামলার ফলে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন এবং তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলার পরপরই শিক্ষার্থীরা রাজধানীর শাহবাগ, ফার্মগেট, মিরপুরসহ বিভিন্ন স্থানে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। একইসঙ্গে দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরাও আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে বিভিন্ন মহাসড়কে অবরোধ শুরু করেন।

এই অবরোধের কারণে দেশের বিভিন্ন মহাসড়কে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। সাধারণ মানুষ এবং যাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীরা দাবি করছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে এবং হামলাকারীদের গ্রেফতার করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

অবরোধ এবং বিক্ষোভের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। সাধারণ মানুষ এবং যাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবি, কোটা সংস্কারের দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে এবং হামলাকারীদের গ্রেফতার করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

অবরোধের কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সাধারণ যাত্রীরা। বিভিন্ন যানবাহন দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকায় কর্মস্থলে পৌঁছাতে দেরি হচ্ছে এবং অন্যান্য জরুরি কাজও ব্যাহত হচ্ছে।

অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পক্ষে সমর্থন প্রকাশ করছেন এবং তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ে শান্তিপূর্ণ উপায়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন।

পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে বিরামহীন বৃষ্টি ! ২৪ ঘণ্টায় মৃত ১২

Asia Monitor18 পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে  ভারী বর্ষণের ফলে সমস্ত এলাকা জলমগ্ন হয়ে গেছে। পাঞ্জাব প্রদেশে ২৪ ঘন্টা ধরে চলা অবিরাম বৃষ্টির মধ্যে বিভিন্ন ঘটনার মাধ্যমে প্রায় ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং  আহত প্রায়  আরও ২৭ জন। এছাড়াও ১৪টি বাড়ি ধসে পড়েছে। পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৩০ জুন থেকে পাঞ্জাবজুড়ে মৌসুমি বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আহত হয়েছেন ৬৪ জন ও ৩৫টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

শনিবার প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (পিডিএমএ) তরফ থেকে জানানো হয়, নিহতদের মধ্যে পাঁচ শিশু, তিন নারী ও চারজন পুরুষ রয়েছে। নারোয়াল ও মুলতান জেলায় বজ্রপাতে ফলে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। পিডিএমএ সতর্কতা জারি করে আরও বলেছে, ১৫ জুলাই পর্যন্ত পাঞ্জাবজুড়ে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে।

বন্যার আশঙ্কায় পাহাড়ে ত্রাণ শিবির স্থাপন করেছে লাহোর, শিয়ালকোট, ফয়সালাবাদ ও গুজরানওয়ালা। বড় শহরগুলির প্রশাসন জরুরি পরিস্থিতি বিবেচনায় সতর্ক রয়েছে এবং পিডিএমএ কন্ট্রোল রুম এবং জেলা জরুরি ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রগুলি সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডন জানিয়েছে,পাঞ্জাবের ত্রাণ কমিশনার নাবিল জাভেদ বন্যার পূর্বাভাস পেয়ে সব ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন বলে জানিয়েছে ডন।

প্রবল বর্ষণে পাঞ্জাবের নদী, ব্যারেজ ও বাঁধের জল বৃদ্ধি পেলেও জল প্রবাহ স্বাভাবিক রয়েছে। পিডিএমএ’র মহাপরিচালক ইরফান আলী কাঠিয়া বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ জেলাগুলোতে বন্যার ঝুঁকি বিবেচনায় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলিকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে পাঞ্জাব সরকার।

কোটা আন্দোলন নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও গুলি, বিএনপি-জামাতের প্রতিক্রিয়া

ঢাকা: কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে আবারও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সোমবার বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশের দাবি, আন্দোলনকারীরা রাস্তা অবরোধ করে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটাচ্ছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ফাঁকা গুলি চালায় এবং টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করে।

আন্দোলনকারীরা জানান, তারা শান্তিপূর্ণভাবে তাদের দাবিগুলো তুলে ধরছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই পুলিশ তাদের ওপর আক্রমণ করে। এতে বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারী আহত হন।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি ও জামাতের নেতারা সরকারের সমালোচনা করেছেন। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “সরকারের দমননীতির কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি উপেক্ষিত হচ্ছে। আমরা এই হামলার তীব্র নিন্দা জানাই এবং অবিলম্বে দোষীদের শাস্তি দাবি করি।”

জামাতের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “কোটা সংস্কার আন্দোলন ছাত্রদের যৌক্তিক অধিকার। সরকারের দমনমূলক নীতির কারণে এই আন্দোলন আরও জোরালো হয়েছে। আমরা সরকারের এই ধরনের আচরণের তীব্র নিন্দা জানাই এবং ছাত্রদের দাবির প্রতি আমাদের সমর্থন ব্যক্ত করছি।”

এই পরিস্থিতিতে আন্দোলনকারীরা আরও বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি শান্ত রাখতে এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। তবে, কোটা সংস্কার বিষয়ে সরকারের কোনো সুস্পষ্ট বিবৃতি এখনো আসেনি।

কোটা আন্দোলনকারীদের উপর ছাত্রলীগের হামলা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য

ঢাকা: রাজধানীতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার আয়োজিত একটি প্রতিবাদ সভায় ছাত্রলীগের কর্মীরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তারা শান্তিপূর্ণভাবে তাদের দাবিগুলো তুলে ধরছিলেন, এমন সময় ছাত্রলীগের কর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ছাত্রলীগের কর্মীদের এই হামলার কারণে বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে একটি সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রেখেছেন। তিনি বলেন, “সরকার সবসময়ই জনগণের ন্যায্য দাবিগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে দেখে। তবে যে কোনো ধরনের সহিংস কর্মকাণ্ড বরদাশত করা হবে না। ছাত্রলীগ বা অন্য কোনো সংগঠনের পক্ষ থেকে সহিংস আচরণের অভিযোগ প্রমাণিত হলে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “কোটা সংস্কার আন্দোলনের বিষয়টি সরকারের নজরে আছে এবং বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। আমরা আশা করি সবাই শান্তিপূর্ণভাবে তাদের মতামত প্রকাশ করবেন এবং সহিংসতা থেকে বিরত থাকবেন।”

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

নরকঙ্কাল থেকে তৈরি হচ্ছে নিষিদ্ধ মাদক ‘কুশ’, জোম্বিতে পরিণত হচ্ছে মানুষ, রেড অ্যালার্ট জারি সিয়েরা লিওনে


সিয়েরা লিওনে সম্প্রতি নিষিদ্ধ মাদক ‘কুশ’ ব্যবহারের ব্যাপকতা বেড়েছে, যা দেশের মানুষের মধ্যে চরম বিপর্যয়ের সৃষ্টি করেছে। এই মাদকের অন্যতম ভয়াবহ দিক হলো, এটি মানুষের দেহ ও মনে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করছে এবং তাদেরকে জোম্বির মতো অবস্থা করে তুলছে। সরকার এই সংকট মোকাবিলায় রেড অ্যালার্ট জারি করেছে এবং জনগণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

‘কুশ’ মাদকের উৎপত্তি ও বিস্তার
‘কুশ’ নামক এই নিষিদ্ধ মাদকটি নরকঙ্কাল থেকে তৈরি হয়। এটি প্রায়শই বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্যের সাথে মিশ্রিত হয়, যা এটিকে অত্যন্ত ক্ষতিকর করে তোলে। সিয়েরা লিওনের বিভিন্ন অঞ্চলে এই মাদকের বিস্তার ঘটেছে এবং বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে এটি ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মাদকের সহজলভ্যতা এবং সস্তা দামে পাওয়া যাওয়ার কারণে অনেকেই এর প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন।

মাদকের প্রভাব
‘কুশ’ মাদকের ভয়াবহ প্রভাব মানুষের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার উপর পড়ছে। মাদক গ্রহণের পর মানুষ জোম্বির মতো আচরণ করতে শুরু করে। তাদের চলাফেরা, কথা বলা এবং সাধারণ কাজকর্মে অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা যায়। এই মাদক মানুষের মস্তিষ্ককে এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত করে যে, তারা নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে এবং সামাজিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।

সরকারের পদক্ষেপ
সিয়েরা লিওনের সরকার ‘কুশ’ মাদকের বিপর্যয় মোকাবিলায় কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সরকার রেড অ্যালার্ট জারি করেছে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে মাদক বিরোধী অভিযান শুরু করেছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এই মাদক চক্রের মূল হোতাদের গ্রেফতার করতে। পাশাপাশি, সরকার সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

সচেতনতা বৃদ্ধি ও করণীয়
‘কুশ’ মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাধারণ মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরি। সরকার এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনগুলি মিলে বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচি পরিচালনা করছে। এর মধ্যে রয়েছে:

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সমাজে সচেতনতা কর্মসূচি: স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে মাদকের ক্ষতিকর দিক নিয়ে আলোচনা করা এবং শিক্ষার্থীদের সচেতন করা।

গণমাধ্যমে প্রচার: টেলিভিশন, রেডিও, সংবাদপত্র এবং সামাজিক মাধ্যমে মাদকের বিরুদ্ধে প্রচার চালানো এবং জনগণকে সচেতন করা।

পরিবারের ভূমিকা: পরিবারগুলোকে মাদক থেকে দূরে থাকতে এবং সন্তানদের মাদকের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সচেতন করতে উদ্বুদ্ধ করা।

সমাজের অংশগ্রহণ: সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের অংশগ্রহণে মাদক বিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলা এবং এই বিষয়ে সবাইকে সচেতন করা।

উপসংহার
সিয়েরা লিওনে ‘কুশ’ নামক নিষিদ্ধ মাদকের ব্যবহার দেশের জন্য এক চরম বিপর্যয় ডেকে এনেছে। মানুষের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার উপর এর ভয়াবহ প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। সরকারের রেড অ্যালার্ট এবং সচেতনতামূলক পদক্ষেপ সত্ত্বেও, সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে একযোগে কাজ করতে হবে এই মাদক থেকে নিজেদের এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে। সঠিক সচেতনতা, কঠোর আইন এবং সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব।

error: Content is protected !!