Monthly Archives: July 2024

মার্কিন কংগ্রেসে নেতানিয়াহুকে স্ট্যান্ডিং ওবেশন, যদিও গাজা ইস্যুতে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ রাজপথে

ওয়াশিংটন, ২৬ জুলাই ২০২৪ – ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু মার্কিন কংগ্রেসে তাঁর ভাষণের সময় স্ট্যান্ডিং ওবেশন পান। তাঁর বক্তৃতায় মধ্যপ্রাচ্যে ইজরায়েলের নিরাপত্তা ও শান্তির গুরুত্বের ওপর জোর দেন এবং ইজরায়েলের সামরিক শক্তি ও কৌশলগত অংশীদারিত্বের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

তবে, কংগ্রেসের বাইরের চিত্র ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। গাজা ইস্যুতে নেতানিয়াহুর কড়া সমালোচনা করতে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রাজপথে নেমে আসে। বিক্ষোভকারীরা গাজায় ইজরায়েলি সামরিক অভিযানের প্রতিবাদ জানিয়ে নেতানিয়াহুর পদত্যাগ দাবি করে। তাঁদের দাবি, গাজায় ইজরায়েলের সামরিক পদক্ষেপের ফলে বহু নিরীহ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এবং অসংখ্য মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা নেতানিয়াহুর ভাষণের সময় প্ল্যাকার্ড এবং ব্যানার নিয়ে স্লোগান দিতে থাকে। পুলিশের সাথে কিছু সময় বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষও ঘটে, তবে কোন বড় ধরনের হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেনি।

নেতানিয়াহু তাঁর বক্তৃতায় গাজা পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বলেন, “ইজরায়েল নিজেকে রক্ষা করার অধিকার রাখে এবং আমরা শান্তি চাই। তবে আমাদের জনগণের সুরক্ষা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।”

কংগ্রেসের ভেতরে স্ট্যান্ডিং ওবেশন পাওয়া সত্ত্বেও, বাইরের বিক্ষোভ নেতানিয়াহুর জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, গাজা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ এবং অভ্যন্তরীণ বিক্ষোভ নেতানিয়াহুর নেতৃত্বকে ভবিষ্যতে প্রভাবিত করতে পারে।

ডিআরডিও সফলভাবে ফ্লাইট-টেস্ট করেছে ফেজ-টু ব্যালিস্টিক মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম

ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও) ২৪ জুলাই, ২০২৪ তারিখে সফলভাবে ফ্লাইট-টেস্ট করেছে ফেজ-টু ব্যালিস্টিক মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম। লক্ষ্য মিসাইলটি ১৬:২০ টায় ধামরা থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়, যা শত্রু ব্যালিস্টিক মিসাইলের অনুকরণ করে। এটি স্থল এবং সমুদ্রে স্থাপিত অস্ত্র সিস্টেম রাডার দ্বারা শনাক্ত করা হয় এবং এডি ইন্টারসেপ্টর সিস্টেম সক্রিয় করে।

ফেজ-টু এডি এন্ডো-অ্যাটমোস্ফেরিক মিসাইলটি ১৬:২৪ টায় চাঁদিপুরের আইটিআর এলসি-তিন থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়। ফ্লাইট টেস্টটি সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক কেন্দ্রিক যুদ্ধ অস্ত্র সিস্টেম, যা দীর্ঘ রেঞ্জের সেন্সর, নিম্ন লেটেন্সি যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং এমসিসি এবং উন্নত ইন্টারসেপ্টর মিসাইলের সমন্বয়ে গঠিত, এর সকল ট্রায়াল লক্ষ্য পূরণ করে।

পরীক্ষাটি দেশের ৫০০০ কিমি শ্রেণির ব্যালিস্টিক মিসাইলের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা করার স্বদেশী সক্ষমতা প্রদর্শন করেছে। মিসাইলের কার্যকারিতা ফ্লাইট ডেটা দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা হয়, যা বৈদ্যুতিন-অপটিক্যাল সিস্টেম, রাডার এবং টেলিমেট্রি স্টেশন সহ আইটিআর, চাঁদিপুর দ্বারা বিভিন্ন স্থানে এবং জাহাজে স্থাপিত রেঞ্জ ট্র্যাকিং সরঞ্জাম দ্বারা সংগ্রহ করা হয়।

ফেজ-টু এডি এন্ডো-অ্যাটমোস্ফেরিক মিসাইলটি একটি স্বদেশে উন্নত দুটি স্তরের সলিড প্রপেলড গ্রাউন্ড লঞ্চড মিসাইল সিস্টেম, যা এন্ডো থেকে নিম্ন এক্সো-অ্যাটমোস্ফেরিক অঞ্চলের উচ্চতায় বিভিন্ন ধরনের শত্রু ব্যালিস্টিক মিসাইল হুমকি নিষ্ক্রিয় করার জন্য নির্মিত হয়েছে। বিভিন্ন ডিআরডিও ল্যাবরেটরি দ্বারা উন্নত একাধিক অত্যাধুনিক স্বদেশী প্রযুক্তি মিসাইল সিস্টেমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

রক্ষা মন্ত্রী শ্রী রাজনাথ সিং আজকের সফল ফ্লাইট টেস্টের জন্য ডিআরডিওকে অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং উল্লেখ করেছেন যে এটি আবারও ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রতিরক্ষা সক্ষমতা প্রদর্শন করেছে।

প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের সচিব এবং ডিআরডিওর চেয়ারম্যান ডাঃ সমীর ভি কামাত পুরো ডিআরডিও দলকে তাদের নিরলস প্রচেষ্টা এবং আজকের সফল ফ্লাইট টেস্টে অবদান রাখার জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন।

কারগিল যুদ্ধে সৈন্যদের ত্যাগ বৃথা যাবে না: প্রতিরক্ষা প্রধান জেনারেল অনিল চৌহান

কারগিল যুদ্ধের সঠিক শিক্ষাগুলি পুনরায় সুপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে”

প্রতিরক্ষা প্রধান জেনারেল অনিল চৌহান কারগিল যুদ্ধের ২৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে সশস্ত্র বাহিনীর সকল সদস্যদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।

তার বার্তায়, প্রতিরক্ষা প্রধান উল্লেখ করেছেন যে, কারগিল যুদ্ধে সাহসী যোদ্ধাদের যে সর্বোচ্চ ত্যাগ, তা বৃথা যাবে না। তিনি বলেন, “এই ত্যাগ কেবলমাত্র সৈন্যদের নয়, বরং জাতির যুবসমাজকেও ভবিষ্যতে অনুপ্রাণিত ও উদ্দীপ্ত করবে।

“কারগিল যুদ্ধের বিশেষত্বের ওপর আলোকপাত করে প্রতিরক্ষা প্রধান বলেন, এই যুদ্ধে কেবলমাত্র সামরিক বাহিনীর নয়, বরং জাতীয় নিরাপত্তার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য শিক্ষা রয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, যে রক্ত ঝরিয়ে পাওয়া শিক্ষাগুলি ভুলে গেলে চলবে না, ভুলগুলি পুনরায় করা উচিত নয় এবং সঠিক শিক্ষাগুলি পুনরায় সুপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

সশস্ত্র বাহিনীতে চলমান সংস্কার প্রসঙ্গে, জেনারেল অনিল চৌহান উল্লেখ করেছেন যে ত্রিমাত্রিক বাহিনী (ত্রি-সার্ভিসেস) একটি বড় সংস্কারের প্রান্তে রয়েছে, যা সাংগঠনিক, কাঠামোগত, ধারণাগত এবং সাংস্কৃতিক থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিস্তৃত। তিনি বলেন, “এই সংস্কারের মূল লক্ষ্য হলো যুদ্ধ দক্ষতা বৃদ্ধি করা এবং সশস্ত্র বাহিনীকে সর্বদা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত রাখা। আমাদের অবশ্যই পুরোনো পদ্ধতিগুলি পরিত্যাগ করতে এবং নতুন পদ্ধতিগুলি গ্রহণ করতে প্রস্তুত থাকতে হবে। সংস্কারের রূপ এবং কাঠামো অবশ্যই ভারতীয় পরিবেশ ও চ্যালেঞ্জগুলির অনন্যতাকে প্রতিফলিত করতে হবে।”

এ উপলক্ষে, প্রতিরক্ষা প্রধান জনগণকে আশ্বস্ত করেছেন যে, সশস্ত্র বাহিনী নতুন উদ্যমে উজ্জীবিত এবং দেশ ‘অমৃতকাল’ এ প্রবেশের সাথে সাথে ‘বিকশিত ভারত’ গড়ার লক্ষ্যে দেশের অন্যান্য অংশের সাথে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যেতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

বিক্ষোভ দমনে কী করা হয়েছে, দ্রুত প্রকাশের দাবি জাতিসংঘ মানবাধিকারপ্রধানের

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি কোটাবিরোধীদের বিক্ষোভ দমনে কী কী ঘটেছে তা জানতে চেয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ফলকার টুর্ক বাংলাদেশ সরকারের প্রতি এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, সরকারি নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নামেন শিক্ষার্থী ও তরুণরা। এ আন্দোলনে ১৭০ জনের বেশি নিহত এবং ১ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। এ বিক্ষোভ দমনে কী করা হয়েছে তা যেন সরকার দ্রুত বিস্তারিত প্রকাশ করে।

তিনি দাবি করেন, সর্বশেষ খবর অনুযায়ী বিক্ষোভে অংশ নেওয়া অনেকে এখনো নিখোঁজ। বহু গ্রেপ্তার হয়েছেন। এমনকি আহত ব্যক্তিদের কাউকে কাউকে চিকিৎসা নিতে দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া হামলার শিকার হওয়া সাধারণ মানুষদের রক্ষায় কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তাও জানতে চান তিনি।

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ সময়ের জন্য ইন্টারনেট বন্ধ রাখা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। মতপ্রকাশের স্বাধীনতাসহ অন্যান্য মানবাধিকার রক্ষায় এ ধরনের পদক্ষেপ বিষয়ে সরকারকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকারবিষয়ক রীতিনীতি ও মানদণ্ড মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি।

সরকারের প্রতি আন্তর্জাতিক আইন মেনে সাংবাদিক ও গণমাধ্যমসহ সবার জন্য পরিপূর্ণভাবে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ এবং স্বাধীনভাবে যোগাযোগ করতে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ফলকার টুর্ক। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ সময়ের জন্য ইন্টারনেট বন্ধ রাখার মতো পদক্ষেপগুলোতে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন, জনগণের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের প্রতি সম্মান জানানোর রাষ্ট্রের বাধ্যবাধকতা প্রতিপালন ব্যাহত হয়। পাশাপাশি এতে নাগরিকদের সমবেত হওয়া ও চলাচল, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের স্বাধীনতাসহ নানা স্বাধীনতা লঙ্ঘিত হয়।’

বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যেসব অভিযোগ উঠেছে তার সবগুলোর নিরপেক্ষ, স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্ত চেয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার। এই প্রক্রিয়ায় তাঁর দপ্তরের পক্ষ থেকে সহায়তা দেওয়ারও প্রস্তাব করেছেন তিনি।

গ্রেপ্তার সাড়ে ৫ হাজার, মামলা পাঁচ শতাধিক

কোটা সংস্কার আন্দোলনে উত্তপ্ত বাংলাদেশ। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ, হামলা, ভাঙচুর, সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গ্রেপ্তার অভিযান এখনো চলছে। বিভিন্ন জায়গায় নতুন করে মামলাও হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ঢাকাসহ ৫১টি মহানগর-জেলায় ৫২৫টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। গত ৯ দিনে (১৭-২৫ জুলাই) সারা দেশে মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা সাড়ে পাঁচ হাজার ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে বুধবার রাত থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত সারা দেশে গ্রেপ্তার করা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ১০০ জনকে। রাজধানীতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪৫১ জনকে।বিভিন্ন মহানগর, জেলা ও থানা-পুলিশ সূত্রে মামলা ও গ্রেপ্তারের এসব তথ্য জানা গেছে। অবশ্য এর মধ্যে কয়েকটি জেলায় পুরোনো মামলায়ও গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

যাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের অনেকে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী এবং দল দুটির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী। পাশাপাশি বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলোর নেতা-কর্মীদেরও গ্রেপ্তার করছে পুলিশ।

গতকাল বিকেলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। বিএনপির যুববিষয়ক সহসম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক সাদ মোরশেদ, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সহসভাপতি কামরুল হাসানকে বুধবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয় বলে বিএনপি জানিয়েছে।

এর আগে গতকাল সকালে রাজধানীর গুলশানের বাসা থেকে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।এ ছাড়া এবি পার্টির সদস্যসচিব মুজিবুর রহমানের খোঁজে বুধবার রাতে তাঁর বাসায়ও পুলিশ গিয়েছিল বলে দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাৎ হোসেন সেলিমের খোঁজে তাঁর উত্তরার বাসায় পুলিশ অভিযান চালায় বলে পরিবার জানিয়েছে।

কোটা সংস্কারের আন্দোলনের মধ্যে সহিংসতার ঘটনায় সাভার ও আশুলিয়া থানায় পৃথক ১১টি মামলা হয়েছে।গত কয়েকদিনে পর্যায়ক্রমে সাভার মডেল থানায় আটটি ও আশুলিয়া থানায় তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে বুধবার রাতে ঢাকা জেলা উত্তরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আব্দুল্লাহিল কাফী জানান। এ সব মামলায় প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে জানিয়ে এ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “গত দুইদিন অভিযান চালিয়ে শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।”

পুলিশ বলছে, সাভারের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি নেতা দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাবুসহ বিএনপি-জামায়াতের একাধিক নেতার নাম রয়েছে প্রত‍্যেকটি মামলায়।এর আগে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সাভারে ব্যাপক সংসহিতার ঘটনা ঘটে। ওই সময় সাভার উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস, মার্কেট, হাসপাতাল, ট্রাফিক বক্সসহ কয়েকটি যাত্রীবাহী বাস, পিকআপ ভ্যান ও ট্রাকে আগুন দেওয়া হয়। এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ বলেন, “কোটা সংস্কারের আন্দোলনের ঘটনা নিয়ে সহিংসতায় মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসার ছাত্র, ব্যবসায়ী, রিকশা চালক, শ্রমিক ও পথচারীসহ নয় জনের মৃত্যু হয়েছে।”

মোবাইল ইন্টারনেট ও ফেসবুক চালুর বিষয়ে স্পষ্ট তথ্য নেই

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু হলেও মোবাইল ফোনের ইন্টারনেট চালুর বিষয়েও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে এ বিষয়ে আজ শুক্রবার (২৬ জুলাই) মোবাইল টেলিকম অপারেটরদের সঙ্গে সভায় বসবেন বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

প্রতিমন্ত্রী গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মোবাইল ফোন অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) সঙ্গে বৈঠক করবেন আজ শুক্রবার ও আগামীকাল শনিবার। রোববার ও সোমবারের মধ্যে মোবাইল ফোনের ফোর-জি ইন্টারনেট চালুর চেষ্টা চলবে।

বিটিআরসি ও আইআইজি সূত্র জানায়, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু হলেও তা আগের মতো অবস্থায় নেই। পাঁচ থেকে সাত দিন যদি ব্যান্ডউইথ না থাকে, তখন কনটেন্ট ডেলিভারি নেটওয়ার্ক (সিডিএন) সমৃদ্ধ হতে বা আগের অবস্থায় ফিরতে অন্তত ৪৮ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় নেয়। সে কারণে এখন ইন্টারনেটের গতি ধীর পাওয়া যাচ্ছে। এটা দু–এক দিনের মধ্যেই স্বাভাবিক অবস্থায় চলে আসবে।

অন্যদিকে সরকার এখনই ফেসবুক ও টিকটক চালু করছে না। গত বুধবার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক সাংবাদিকদের বলেন, ফেসবুক, ইউটিউব ও টিকটকের কোনো জবাবদিহি নেই। তারা একেক দেশে একেক ধরনের আচরণ করে। বুস্টিংয়ের মাধ্যমে তারা ঠিকই বাংলাদেশে ব্যবসা করছে; কিন্তু দেশের নিয়ম মানছে না। বাংলাদেশের নিয়ম মানতে তাদের চিঠি দেবে সরকার। এর জবাব দিতে এসব প্রতিষ্ঠানকে হাজির হতে বলা হবে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবস্থাপনার পোল্যান্ডভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম নেপোলিয়নক্যাটের তথ্য বলছে, বাংলাদেশে গত জুন পর্যন্ত ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা সাড়ে ছয় কোটির বেশি। এ ছাড়া ডাটাপোর্টালের তথ্য অনুযায়ী চলতি বছরের প্রথম দিকে বাংলাদেশে টিকটক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩৭ দশমিক ৩৬ মিলিয়ন।

গতকাল বৃহস্পতিবার ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) অপারেটরদের এক নির্দেশনায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) জানিয়েছে, ইউটিউবসহ গুগলের সেবার ক্যাশ সার্ভারগুলো যেন আরও সক্রিয় করা হয়। পাশাপাশি ফেসবুক ও টিকটকের ক্যাশ সার্ভার যেন বন্ধ রাখা হয়।

ঢাকায় কারফিউ আজও সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত শিথিল

গতকালের মতো আজও ঢাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দেশজুড়ে চলমান কারফিউ বুধবারের মতো আজও শিথিল থাকবে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত। অপরদিকে, বেলা ১১টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত ৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে সব সরকারি-আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশে শুরু হয় সহিংসতা। এ অবস্থায় দেশের সার্বিক পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাওয়ায়, শুক্রবার রাতে জারি করা হয় কারফিউ। বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তায় সেদিন মধ্যরাতে মাঠে নামে সেনবাহিনী।

এতে রবিবার থেকে সব ধরনের অফিস ও গার্মেন্টস বন্ধ ঘোষণা করে জারি করা হয় সাধারণ ছুটি। ছুটির পর বুধবার থেকে খুলছে সরকারি বেসরকারি সব অফিস। তবে, সকাল ৯ টার পরিবর্তে অফিস শুরু হবে সকাল ১১ টা থেকে এবং বিকেল ৫ টার পরিবর্তে অফিস চলবে বিকেল ৩ টা পর্যন্ত।কারফিউ শিথিলের সময় সারাদেশে দোকানপাট ও শপিংমল খোলা। চলবে তৈরি পোশাক শিল্প কারখানার কাজ।

আজও অফিস খোলা থাকায় আগের দিনের মতোই যানবাহনের চাপ থাকবে সড়কগুলোতে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নগরজুড়ে কঠোর অবস্থানে থাকবে সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

উল্লেখ্য, এর আগে নাশকতা ও সহিংসতার কারণে গত রবিবার ও সোমবার সারা দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরদিন মঙ্গলবারও সরকারি-বেসরকারি সব অফিস নির্বাহী বিভাগের আদেশে বন্ধ ছিল। কারফিউ কতদিন নাগাদ চলবে তার সুনির্দিষ্ট দিন উল্লেখ না করে সম্প্রতি আইনমন্ত্রী বলেন, জনজীবনে যখন স্বস্তি ফিরে আসবে, তখন আমরা অবশ্যই কারফিউ প্রত্যাহার করে নেব।

ফের বিমান দুর্ঘটনা নেপালে,সব যাত্রীর মৃত্যু, আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি পাইলট

টেক অফের সময়ই বিপত্তি।বুধবার নেপালের কাঠমাণ্ডুতে ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ১৯ জন যাত্রীসহ ভেঙে পড়ে একটি বিমান। প্রশাসনের তরফে শুরু হয়েছে উদ্ধারকাজ।

টিআইএ-র তথ্য কর্মকর্তা জ্ঞানেন্দ্র বলেন, বিমানটিতে কেবল এয়ারলাইনের প্রযুক্তিগত কর্মী ছিল। বোর্ডে কোনো যাত্রী ছিল না তবে বিমানটিতে কয়েকজন প্রযুক্তিগত কর্মী ছিল। বোর্ডে কোনো যাত্রী ছিল না, তবে কয়েকজন কারিগরি কর্মী ছিল।

বিমানটি কাঠমান্ডু থেকে পোখরা যাচ্ছিল। ভেঙে পড়ার পর আগুন ধরে যায় বিমানটিতে। দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে বিমানটি। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় চারপাশ।

বাংলাদেশে বুধ ও বৃহস্পতিবার অফিস চলবে ১১টা-৩টা

অবশেষে ৩ দিন ছুটির পর বাংলাদেশে বুধ ও বৃহস্পতিবার সরকারি ও বেসরকারি অফিস খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।এই দু দিন সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত অফিস খোলা থাকবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শিবলী সাদিক।

কারফিউ শিথিলের সময়ে আজ বেলা ১১টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত বিভিন্ন অফিস খোলা থাকছে।গণপরিবহন না পাওয়ায় এবং যানজটের কারণে অফিসগামী যাত্রীরা বিপদে পড়েছেন।যানবাহন পেতে দেরি হওয়ায় এবং যানজটে পড়ে অনেকে সময়মতো কর্মস্থলে পৌঁছাতে পারছেন না।বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মজীবীরা বাস, মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশায় করে অফিসে গেছেন। ঢাকার বাইরে থেকেও লোকজনকে অফিস করতে আসতে দেখা গেছে।

মো. ইয়াকুব আলী মোল্লা রাজধানীর মতিঝিলে অবস্থিত একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। কর্মস্থলে যাওয়ার পথে রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকায় তাঁর সঙ্গে প্রথম আলোর কথা হয়।

ইয়াকুব আলী বলে, গত বৃহস্পতিবার তিনি তাঁর গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ীতে চলে গিয়েছিলেন। কারফিউ থাকায় তিনি আর ঢাকায় ফেরেননি। গতকাল জানতে পারেন, আজ অফিস খোলা। তাই আজ সকালে রাজবাড়ী থেকে ঢাকায় এসেছেন।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সায়েদাবাদ এলাকায় দেখা যায়, সড়কে বাস, মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশা চলছে। লোকজন এসব যানবাহনে করে অফিসে যাচ্ছেন। বাসে যাত্রীদের গাদাগাদি করে যেতে দেখা যায়।

অবশেষে খুললো সরকারি ও বেসরকারি অফিস,ঢাকার রাস্তায় প্রচণ্ড যানজট

অবশেষে বুধবার সরকারি ও বেসরকারি অফিস খুলছে ঢাকায়। সকাল থেকেই ঢাকার রাস্তায় তীব্র যানজট। বাংলাদেশের রাজধানীর ফার্মগেট, মিরপুর, সায়েদাবাদ, মতিঝিল, কল্যাণপুর, বনানী, তেজগাঁও, মহাখালীসহ বিভিন্ন রাস্তায় প্রচণ্ড যানজট চলছে।

কারফিউ শিথিলের সময়ে আজ বেলা ১১টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত বিভিন্ন অফিস খোলা থাকছে।গণপরিবহন না পাওয়ায় এবং যানজটের কারণে অফিসগামী যাত্রীরা বিপদে পড়েছেন।যানবাহন পেতে দেরি হওয়ায় এবং যানজটে পড়ে অনেকে সময়মতো কর্মস্থলে পৌঁছাতে পারছেন না।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাসস্ট্যান্ডে শত শত মানুষকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে । কিন্তু বাসের সংখ্যা কম ছিল। সিএনজিচালিত অটোরিকশা যা আসছে, ফাঁকা নেই। শুধু কল্যাণপুর নয়, আশপাশে শ্যামলী, শিশুমেলার দিকেও একই অবস্থা। অনেকক্ষণ দাঁড়ানোর পর এই প্রতিবেদক বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সংস্থার (বিআরটিসি) একটি বাসে করে প্রেসক্লাবের উদ্দেশে রওনা হন। তবে পথে প্রচণ্ড যানজট। বাসটি কল্যাণপুর থেকে জাতীয় কিডনি রোগ ও ইউরোলজি ইনস্টিটিউট পর্যন্ত আসতে এক ঘণ্টা সময় লেগেছে। বাসে থাকা যাত্রীদের অনেকের কাছে কর্মস্থল থেকে ফোন আসছে। বিআরটিসির বাসেই এক যাত্রীকে ফোনে বলতে শোনা গেল, ‘বাস ১০ সেকেন্ড চলে তো ১০ মিনিট থেমে থাকে।’কল্যাণপুর থেকে কলেজ গেট পর্যন্ত রাস্তায় যানবাহন আটকে থাকতে দেখা গেছে।

সায়েদাবাদে হানিফ ফ্লাইওভারের নিচের রাস্তায় বেলা ১১টা ২০ মিনিটের দিকে রিকশা, অটোরিকশা, বাস সবকিছু আটকে থাকতে দেখেছেন প্রথম আলোর আরেক প্রতিবেদক। সেখানে পিকআপ চালক মো. ইউসুফ বলেন, যাত্রাবাড়ী থেকে সায়েদাবাদ পর্যন্ত পুরোটাই যানজট দেখেছেন তিনি। এই রাস্তায় সবগুলো লোকাল বাস যাত্রীতে ঠাসা ছিল।

error: Content is protected !!