Daily Archives: July 19, 2024

মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়ন চালানোর অভিযোগে ক্ষুব্ধ জাপান

জাপানে মোতায়েন মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে, যা নিয়ে জাপানের জনগণ ও সরকার ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। সম্প্রতি একাধিক অভিযোগ সামনে আসায় দেশটির বিভিন্ন মহল থেকে প্রতিবাদ ও তদন্তের দাবি উঠেছে।

জাপানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ওকিনাওয়া ও অন্যান্য অঞ্চলে মোতায়েন মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক যৌন নিপীড়নের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এই অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে ধর্ষণ, যৌন হয়রানি এবং অসদাচরণের ঘটনা।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা এক বিবৃতিতে বলেন, “এই ধরনের আচরণ সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য এবং আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা মার্কিন সরকারের সাথে যৌথভাবে এই অভিযোগগুলোর তদন্ত করছি এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ওকিনাওয়ার গভর্নর ডেনি তামাকি বলেন, “আমাদের কমিউনিটি এই ধরনের আচরণের শিকার হতে পারে না। আমরা আমাদের জনগণের সুরক্ষা ও মর্যাদা রক্ষার জন্য সব রকমের পদক্ষেপ নেব।” ওকিনাওয়ায় মার্কিন সামরিক উপস্থিতি দীর্ঘদিন ধরে বিতর্কিত এবং স্থানীয় জনগণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগও এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে তারা জানায়, “আমরা এই অভিযোগগুলোকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছি এবং জাপান সরকারের সাথে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছি। আমাদের নীতি অনুযায়ী, কোনও ধরনের অসদাচরণ ও যৌন নিপীড়নের জন্য শূন্য সহিষ্ণুতা রয়েছে।”

জাপানের সাধারণ জনগণও এই ঘটনাগুলো নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা মার্কিন বাহিনীর সদস্যদের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের জন্য দোষারোপ করে এবং তাদের দ্রুত বিচার দাবি করে।

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে জাপান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের ঘটনা দুই দেশের মধ্যে সামরিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ককে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।

বর্তমানে যৌথ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জাপান সরকার আশ্বাস দিয়েছে যে, তারা কোনও ধরনের পক্ষপাতিত্ব ছাড়া সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করবে। তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এক বছরের মধ্যে চীন-রাশিয়ার বাণিজ্যিক সম্পর্ক ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের নতুন মাইলফলক ছুঁলো

চীন ও রাশিয়ার মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক এক বছরের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মাইলফলক ছুঁয়েছে। এই উল্লেখযোগ্য অর্জন দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মজবুত ভিত্তিকে প্রতিফলিত করে।

চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত চীন ও রাশিয়ার মধ্যে মোট বাণিজ্যের পরিমাণ ১০০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। এই বৃদ্ধির পেছনে প্রধান কারণ হিসেবে দুই দেশের মধ্যে শক্তি, কৃষি, প্রযুক্তি এবং বিভিন্ন শিল্পখাতের বাণিজ্য উল্লেখ করা হয়েছে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এই অর্জনকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যে আরও ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের আশা ব্যক্ত করেছেন। এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, “এই মাইলফলক আমাদের অর্থনৈতিক সহযোগিতার দৃঢ়তা ও ভবিষ্যতের সমৃদ্ধির প্রতীক। আমরা একসাথে আরও উচ্চতায় পৌঁছানোর লক্ষ্য রাখছি।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বাণিজ্যিক সম্পর্কের মজবুত ভিত্তি দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করবে এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিতে তাদের প্রভাব বৃদ্ধি করবে। চীন ও রাশিয়া উভয়েই তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক বাজারে অবস্থান মজবুত করার লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করছে।

চীন ও রাশিয়ার বাণিজ্যিক সম্পর্কের এই অগ্রগতি আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক অঙ্গনেও আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে এই সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। তবে, চীন ও রাশিয়া তাদের স্বার্থ রক্ষায় এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

বাণিজ্য বৃদ্ধির প্রধান ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে শক্তি খাত বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। রাশিয়া চীনে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের প্রধান উৎস হিসেবে কাজ করছে, যা দুই দেশের মধ্যে শক্তি নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করছে। এছাড়া কৃষি, প্রযুক্তি এবং অন্যান্য শিল্পখাতেও উভয় দেশের মধ্যে বিনিয়োগ ও সহযোগিতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এই মাইলফলক চীন ও রাশিয়ার মধ্যে ভবিষ্যতে আরও উচ্চ পর্যায়ের বাণিজ্যিক ও কৌশলগত সম্পর্কের সূচনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

কোটা সংস্কারের দাবিতে বাংলাদেশে উত্তপ্ত ছাত্রমহল, পরিস্থিতি হাতের বাইরে ! মৃত ৬৪ , আহত প্রায় ৫০০

অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশের পরিস্থিতি যত সময় গড়াচ্ছে ততই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরেই কোটা সংস্কারের দাবি নিয়ে উত্তপ্ত বাংলাদেশ ছাত্রমহল। মৃত প্রায় ৬৪ জন এবং আহতের সংখ্যা প্রায় ৫০০ পেরিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আন্দোলনকারীদের উপর লাঠি, গুলি, প্লাস্টিক বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করেন পুলিশ। এবং পাল্টা জবাবে আন্দোলনকারীরাও ইটপাটকেল ও ককটেল নিক্ষেপ করে পুলিশর দিকে। বাংলাদেশে টেলিভিশন নিউজ চ্যানেলগুলি বন্ধ ছিল, টেলিযোগাযোগ ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়েছে এবং অনেক সংবাদপত্রের ওয়েবসাইট এবং সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলি নিষ্ক্রিয় ছিল। মঙ্গলবার ছাত্র মৃত্যুর ঘটনা ঘটার পর থেকেই পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে ওঠে। আশঙ্কা করা হচ্ছে যে সময়ের সাথে  সাথে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে ।

আজ সকাল থেকেই রাজধানীর বাড্ডা, রামপুরা, যাত্রাবাড়ী, পল্টন, প্রেসক্লাব, সেগুনবাগিচা, উত্তরা, মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টির ঘটনা ঘটেছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। আন্দোলনকারীদের দ্বারা বাংলাদেশের নানান প্রান্তে বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়েছে। বাংলাদেশের টেলিভিশন দপ্তরে ঢুকে ভাঙচুর করে এবং আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ফলে স্টেশনের সম্প্রচার বন্ধ করা হয় । মেট্রো স্টেশনেও একই ঘটনা দেখা যায়, যার জন্য মেট্রো পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ হয়েছে ইন্টারনেট ব্যবস্থা। আশঙ্কা করা হচ্ছে যে সময়ের সাথে  সাথে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে ।

 সারা দেশে কমপ্লিট শাটডাউন বা সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি চলবে বলে আগেই জানিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ।

পরিস্থিতি আরও গুরুতর হয়ে ওঠে যখন মসজিদের মাইকে লড়াইয়ে নামার ডাক দেওয়া হয়। দেশজুড়ে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত এবং গোটা দেশ কার্যত স্তব্ধ হয়ে পড়েছে। আহতের সংখ্যা অনেক এবং তাদের মধ্যে বেশিরভাগের অবস্থাই গুরুতর। সরকারের পক্ষ থেকে শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালানো হলেও পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণের বাইরে।

জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক এবং উদ্বেগ বাড়ছে এবং অনেকেই নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নিচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তবে পরিস্থিতি কখন স্বাভাবিক হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।

বাংলাদেশের নরসিংদীতে একটি কারাগারে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। কারাগারের একাংশে এই অগ্নিকাণ্ডের ফলে বেশ কয়েকজন কয়েদি পালিয়ে গেছে বলে জানা গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সন্ধ্যায়, যখন বিক্ষোভকারীদের একটি দল কারাগারের দিকে মিছিল করে আসছিল।নরসিংদী কারাগারের এক কর্মকর্তা জানান, পরিস্থিতি হঠাৎ করেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যখন বিক্ষোভকারীরা কারাগারের প্রধান গেট ভেঙে ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা করে। তারা অগ্নি সংযোগ করে কারাগারের একাংশে, যা দ্রুত পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও ততক্ষণে বেশ কয়েকজন কয়েদি পালিয়ে গেছে।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে এবং পলাতক কয়েদিদের ধরতে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে। নরসিংদীর স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত কারাগারের পুনর্নির্মাণ ও নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য অতিরিক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বাংলাদেশে চলমান সংঘর্ষ ও অস্থিরতার পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক গভীর নজর রাখছে। মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ভারতের সীমান্তবর্তী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরও বলেন, ভারতের সরকার বাংলাদেশে শান্তি ও সুরক্ষা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য সমস্ত ধরণের সহায়তা দিতে প্রস্তুত।

ভারতের তরফ থেকে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং সম্ভাব্য সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা চলছে। পরিস্থিতি সম্পর্কে জয়সওয়াল বলেন, “আমরা বাংলাদেশের মানুষের সাথে আছি এবং এই কঠিন সময়ে তাদের পাশে থাকব।”

অন্যদিকে, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলি সমাধানের চেষ্টা চলছে এবং আন্তর্জাতিক সহায়তার প্রয়োজন হলে তা গ্রহণ করা হবে।

বিক্ষোভের এই পরিস্থিতি বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনার একটি অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। দেশজুড়ে বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও হরতাল চলছে, যার ফলে সেখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

দর্শনা দিয়ে দেশে ফিরলেন ভারত ও নেপালের ৪৯ শিক্ষার্থী, অপেক্ষায় আরও অনেকে। প্রায় ২৪৫ ভারতীয় ছাত্র পশ্চিমবঙ্গ সীমান্ত দিয়ে বাড়ি ফিরছে।

“শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৫ টার মধ্যে প্রায় ৯৬ জন শিক্ষার্থী গেদে দর্শনায় সীমান্ত অতিক্রম করেছিল।প্রায় ১৫০ জন ছাত্রের আরেকটি ব্যাচ রাতের মধ্যে ভারতে প্রবেশ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।” একটি সূত্র জানিয়েছে।

বাংলাদেশের পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিবও। বাংলাদেশের ঘটনা নিয়ে তিনি খুবই উদ্বিগ্ন বলেও জানিয়েছেন তাঁর মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক। তিনি জানান, রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব ঢাকা কর্তৃপক্ষকে দেশের তরুণ জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কাজ করতে এবং চলমান চ্যালেঞ্জের সমাধান খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন।

ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের ভবিষ্যৎ নিয়ে ইরানের ভারপ্রাপ্ত বিদেশমন্ত্রী আলি বাকেরির বক্তব্য

ইরানের ভারপ্রাপ্ত বিদেশমন্ত্রী আলি বাকেরি ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের ভবিষ্যৎ নিয়ে তার দৃঢ় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি ফিলিস্তিনিদের অধিকার ও স্বাধীনতার পক্ষে ইরানের অব্যাহত সমর্থন ঘোষণা করেন এবং ইসরাইলের নীতির কঠোর সমালোচনা করেন।

এক বিবৃতিতে আলি বাকেরি বলেন, “ফিলিস্তিনিদের সংগ্রাম ন্যায়সঙ্গত এবং ইরান সবসময় তাদের পাশে থাকবে। ইসরাইলের আগ্রাসন ও দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধের অধিকার আছে। আমরা ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বের জন্য সমর্থন অব্যাহত রাখব।”

তিনি আরও বলেন, “ইসরাইল একটি অবৈধ রাষ্ট্র এবং তার দখলদারিত্বের নীতি অব্যাহত থাকলে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা অর্জন করা সম্ভব নয়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত ইসরাইলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করা এবং ফিলিস্তিনিদের অধিকারের প্রতি সমর্থন জানানো।”

আলি বাকেরি আরও উল্লেখ করেন, “ফিলিস্তিন সমস্যা সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একতাবদ্ধ হতে হবে এবং ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। একমাত্র একটি স্বাধীন এবং সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরে আসতে পারে।”

ইরানের এই বক্তব্যের পর মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। ইসরাইলের পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া না এলেও, এই বক্তব্য যে ইসরাইল-ইরান সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলবে তা স্পষ্ট।

ফিলিস্তিনের পক্ষ থেকেও ইরানের এই সমর্থনের প্রশংসা করা হয়েছে। ফিলিস্তিনি নেতারা আলি বাকেরির বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “ইরানের এই সমর্থন আমাদের ন্যায্য অধিকারের জন্য লড়াইয়ে নতুন উদ্দীপনা যোগাবে।”

বর্তমান পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যে সংঘর্ষ ও উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই সমস্যা সমাধানে নতুন কৌশল খুঁজছে। আলি বাকেরির এই বক্তব্যে এই অঞ্চলে আরও রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মনোনয়ন গ্রহণ করলেন ট্রাম্প, ঐক্যের কথা বললেও কণ্ঠে পুরোনো আক্রমণাত্মক সুর

ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও রিপাবলিকান দলের মনোনয়ন গ্রহণ করেছেন, তবে তার বক্তৃতায় ঐক্যের আহ্বান জানানো সত্ত্বেও পুরোনো আক্রমণাত্মক সুর বজায় ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এই প্রেসিডেন্ট তার নির্বাচনী প্রচারণায় রাজনৈতিক বিভাজনের কথা তুলে ধরেন এবং ডেমোক্র্যাটদের কড়া সমালোচনা করেন।

মনোনয়ন গ্রহণের অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন, “এই দেশকে আবারও মহান করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।” তবে তার বক্তব্যের বেশিরভাগ অংশজুড়ে ছিল বর্তমান প্রশাসনের কঠোর সমালোচনা এবং ডেমোক্র্যাটদের বিরুদ্ধে পুরোনো অভিযোগগুলো পুনর্ব্যক্ত করা।

তিনি বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনকে দুর্বল নেতৃত্বের জন্য দোষারোপ করেন এবং বলেন, “আমাদের দেশ আজ এমন এক অবস্থায় রয়েছে যেখানে আমাদের স্বাধীনতা, নিরাপত্তা এবং অর্থনীতি বিপন্ন।

” ট্রাম্প আরও বলেন, “বাইডেন প্রশাসনের অধীনে আমরা আমাদের মূল্যবোধ হারাচ্ছি এবং বিদেশি শক্তিগুলোর সামনে দুর্বল হয়ে পড়ছি।” তার বক্তৃতায় অভিবাসন, অর্থনীতি, এবং পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রে ডেমোক্র্যাটদের পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা ছিল।

ট্রাম্পের বক্তৃতায় তার সমর্থকদের উজ্জীবিত করার প্রচেষ্টা ছিল স্পষ্ট। তিনি বলেন, “আমি আপনাদের পাশে আছি এবং আমরা একসাথে এই দেশকে আবারও মহান করে তুলব।” তবে তার বক্তৃতার মধ্যে থাকা আক্রমণাত্মক সুর তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের সঙ্গে তার বিভেদকে আরও বাড়িয়ে তুলবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

ট্রাম্পের মনোনয়ন গ্রহণের পর থেকে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা বেড়েছে এবং নির্বাচনী প্রচারণা আরও তীব্র হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রিপাবলিকান দলের ভেতরেও বিভিন্ন মতবিরোধ থাকা সত্ত্বেও ট্রাম্পের দৃঢ় নেতৃত্ব তাকে পুনরায় মনোনয়ন পেতে সাহায্য করেছে।

আগামী নির্বাচনে ট্রাম্পের এই মনোনয়ন কতটা প্রভাব ফেলবে এবং তিনি কতটা সফল হবেন, তা সময়ই বলে দেবে। তবে এক জিনিস স্পষ্ট, ট্রাম্প তার পুরোনো আক্রমণাত্মক সুর ধরে রেখেছেন এবং তার সমর্থকদের সমর্থন ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন।

ছাত্র আন্দোলনের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানাল জামায়াত

বাংলাদেশের কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রদের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়া এই আন্দোলনকে জামায়াত নেতারা “ন্যায়সঙ্গত” বলে অভিহিত করেছেন এবং ছাত্রদের দাবিকে সমর্থন করেছেন।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ছাত্রদের এই আন্দোলন সম্পূর্ণ যৌক্তিক এবং আমরা তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছি। বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি মেধাবীদের প্রতি অবিচার করছে এবং এটি অবিলম্বে সংস্কার করা উচিত।

” বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “সরকার যদি ছাত্রদের দাবির প্রতি উদাসীন থাকে এবং এই আন্দোলন দমন করার চেষ্টা করে, তাহলে আমরা ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের অধিকার আদায়ের জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেব।

“জামায়াতে ইসলামী আরও জানায়, “ছাত্রদের এই আন্দোলন শুধুমাত্র তাদের নিজস্ব স্বার্থের জন্য নয়, বরং জাতীয় স্বার্থের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। কোটা পদ্ধতির সংস্কার না হলে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মেধা ও প্রতিভার যথাযথ মূল্যায়ন হবে না।

“অন্যদিকে, ছাত্র আন্দোলনকারীরা জামায়াতের এই সমর্থনকে স্বাগত জানিয়েছে। আন্দোলনের একজন নেতা বলেন, “আমাদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে জামায়াত যে অবস্থান নিয়েছে, তা আমাদের জন্য উৎসাহব্যঞ্জক। আমরা আশা করি অন্যান্য রাজনৈতিক দল এবং সংগঠনও আমাদের ন্যায্য দাবির প্রতি সমর্থন জানাবে।

“সরকারের পক্ষ থেকে এখনও এই সমর্থনের বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে, রাজনৈতিক অঙ্গনে জামায়াতের এই সমর্থন ছাত্র আন্দোলনকে নতুন মাত্রা দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। কোটা পদ্ধতির সংস্কারের দাবিতে দেশব্যাপী বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিংপিংয়ের স্ট্রোক নিয়ে ভুয়ো খবর, উত্তাল ইন্টারনেট

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিংপিংয়ের স্ট্রোক নিয়ে একটি ভুয়ো খবর ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। এই ভুয়ো খবরটি দ্রুত ভাইরাল হওয়ায় জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক গুজবে দাবি করা হয় যে, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিংপিং স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এই খবরটি বিনা যাচাই-বাছাইয়ে প্রচার হওয়ায় চীনা জনগণসহ বিশ্বের নানা প্রান্তে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। তবে চীনা সরকারি মাধ্যম এবং প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে এ ধরনের কোনও খবরের সত্যতা নিশ্চিত করা হয়নি।

চীনের সরকারি সংবাদমাধ্যম থেকে জানানো হয়েছে, প্রেসিডেন্ট শি জিংপিং সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন এবং স্বাভাবিকভাবে তার দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। এছাড়া, গুজব ছড়ানোর সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং ভুয়ো খবর প্রচারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

ইন্টারনেটে ভুয়ো খবর ছড়ানো নতুন কোনও ঘটনা নয়, তবে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের স্বাস্থ্যের বিষয়ে এ ধরনের ভুয়ো খবর জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের গুজব ছড়িয়ে পড়ার কারণ হলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অতিমাত্রায় ব্যবহার এবং যাচাই-বাছাই ছাড়াই খবর শেয়ার করা।

চীনের সাইবার নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষও ভুয়ো খবর প্রচারের বিরুদ্ধে সতর্কতা জারি করেছে এবং জনগণকে অনুরোধ করেছে যে, তারা যেন যাচাই-বাছাই ছাড়া কোনও তথ্য শেয়ার না করে। কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে যে, যারা ভুয়ো খবর ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহারকারীদেরকে আরও সচেতন হতে হবে এবং ভুয়ো খবরের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। বাস্তব তথ্য যাচাই করার জন্য নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে খবর সংগ্রহ করা অত্যন্ত জরুরি।

পাকিস্তানকে সাহায্য করতে ভারতকে অস্ত্র রফতানি করবে না তুরস্ক, সংসদে নেওয়া গোপন সিদ্ধান্ত ফাঁস

তুর্কি সরকার এটি নিয়ে বড় কোনও ঘোষণা দেয়নি; বরং সিদ্ধান্তটি তুর্কি পার্লামেন্টের একটি বন্ধ দরজার বৈঠকে নেওয়া হয়েছিল।

২০২৪ সালের ১০ জুলাই তুরস্কের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটিতে আলোচনার সময়, তুরস্কের শীর্ষ অস্ত্র প্রাপ্তি সংস্থা ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রি প্রেসিডেন্সির (এসএসবি) উপ-চেয়ারম্যান মুস্তাফা মুরাত শেকার ভারতের বিরুদ্ধে সরকারের গোপন নীতি অসাবধানতাবশত প্রকাশ করেছিলেন।

এই পদক্ষেপটি আশ্চর্যের কিছু নয় কারণ ভূ-রাজনৈতিক বিষয়ে তুরস্ক এবং ভারত প্রায়শই বিপরীত দিক নিয়ে থাকে। তুরস্ক এবং পাকিস্তানের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে, ভারত আন্তর্জাতিক বিষয়গুলিতে তুরস্কের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে। আর্মেনিয়া-আজারবাইজান সংঘর্ষে ভারতের অবস্থানের পর, এজিয়ান সাগরে তুরস্ক এবং গ্রিসের মধ্যে সংঘর্ষে গ্রিসের পক্ষে থাকা ভারতের অবস্থান স্পষ্ট হয়েছে।

এপ্রিল মাসে, ভারত একটি জাহাজ নির্মাণ প্রকল্পে তুর্কি কোম্পানির সাথে চুক্তি বাতিল করে এবং হেলেনিক ন্যাশনাল ডিফেন্স জেনারেল স্টাফের প্রধানকে একটি যোদ্ধা ঘাঁটিতে আমন্ত্রণ জানায়।

শেকার তার প্রকাশনাকে সংবেদনশীল বলে উল্লেখ করে সংসদ সদস্যদের জানান যে, যখন গ্রাহক ভারত থেকে হয় তখন কোনও সামরিক সরঞ্জামের বিক্রি সরকারের দ্বারা অনুমোদিত হয়নি।

ভারতের সাথে বিরোধের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও গোপন নিষেধাজ্ঞার তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। এই মিনিটগুলি নর্ডিক মনিটর দ্বারা প্রাপ্ত হয়েছে।“ভারত, উদাহরণস্বরূপ, বিশ্বের শীর্ষ পাঁচটি অস্ত্র আমদানিকারক দেশের মধ্যে একটি, একটি বিশাল বাজার, যা প্রায় $১০০ বিলিয়ন আমদানি করে। তবে, আমাদের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং পাকিস্তানের সাথে আমাদের বন্ধুত্বের কারণে, আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতকে কোনও পণ্য রপ্তানি করার বিষয়ে আমাদের ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেয় না এবং ফলস্বরূপ, আমরা এই বিষয়ে আমাদের কোম্পানিগুলিকে কোনও অনুমতি দিই না,” তিনি বলেন।

তুর্কি সামরিক সরঞ্জামের বিদেশে বিক্রি তুর্কি সামরিক, এসএসবি এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব অনুমোদন প্রয়োজন। নিষেধাজ্ঞাটি ভারতকে একটি কালো তালিকায় রেখেছে যে দেশগুলিতে আঙ্কারা সামরিক ও প্রতিরক্ষা পণ্য সরবরাহ করবে না।

কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তান থেকে নিজেকে আলাদা করতে অস্বীকার করার কারণে ভারত এবং তুরস্কের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হচ্ছে। ২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীরে অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিলের পর থেকে, তুরস্ক আন্তর্জাতিক ফোরামে এই ইস্যুটি তুলে ধরার কোনও সুযোগ ছাড়েনি।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ, জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ এবং ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সসহ সকল কূটনৈতিক ফোরামে পাকিস্তানকে সমর্থন করেছেন।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনে এরদোয়ান তার বক্তৃতায় ঘোষণা করেন, “কাশ্মীর এখনও অবরুদ্ধ, এবং আট মিলিয়ন মানুষ কাশ্মীরে আটকা পড়েছে।” এর পাশাপাশি, এরদোয়ান ব্যাখ্যা করেন যে “বিশ্বকে কাশ্মীরের দুর্ভোগ সম্পর্কে জানতে হবে,” তিনি কাশ্মীর এবং ফিলিস্তিনের মধ্যে তুলনা করেন এবং কাশ্মীরকে একটি উন্মুক্ত কারাগার বলে উল্লেখ করেন।

ভারত সরকার আর্মেনিয়া, সাইপ্রাস এবং গ্রিসের নেতাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করে প্রতিক্রিয়া জানায়—তিনটি দেশই তুরস্কের সাথে বিরোধে জড়িত। ২০১৯ সালে, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তুরস্ক এবং সৌদি আরব সফর করার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু তুরস্ক সফর বাতিল করা হয় এবং প্রধানমন্ত্রী শুধুমাত্র সৌদি আরব সফর করেন, আঙ্কারাকে ভারতের কূটনৈতিক পছন্দ সম্পর্কে একটি বার্তা পাঠান।

এপ্রিল মাসে, ভারতের হিন্দুস্তান শিপইয়ার্ড লিমিটেড (এইচএসএল) ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য পাঁচটি সহায়তা জাহাজ নির্মাণের জন্য তুর্কি কোম্পানির সাথে সমস্ত চুক্তি বাতিল করে এবং নিজেই নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়।

কোটা আন্দোলনের জেরে দেশের সব স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৯

বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে সরকার দেশের সব স্কুল ও কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে। কোটা পদ্ধতির সংস্কার চেয়ে শুরু হওয়া ছাত্র আন্দোলনে এখনও পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং বহু ছাত্র-ছাত্রী ও নিরাপত্তাকর্মী আহত হয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের নেতৃত্বে শুরু হওয়া এই আন্দোলন ক্রমশ দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি সংস্কার করে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। আন্দোলনকারীরা মনে করেন যে বর্তমান কোটা ব্যবস্থা মেধাবীদের প্রতি অবিচার করছে এবং এতে মেধা ভিত্তিক প্রতিযোগিতার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।

সরকার বিক্ষোভকারীদের আশ্বাস দিলেও, তারা এতে সন্তুষ্ট হতে পারেনি। ফলে বিক্ষোভ আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেটসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভকারীরা রাস্তাঘাট অবরোধ করে রেখেছে। এর ফলে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে এবং জনজীবন স্তব্ধ হয়ে পড়েছে।

পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ফলে বেশ কিছু জায়গায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার ঢাকাসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শহরে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করেছে। এছাড়া, ইন্টারনেট সেবা সীমিত করা হয়েছে যাতে ভুল তথ্য ও গুজব ছড়িয়ে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত না হয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, “পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত দেশের সব স্কুল ও কলেজ বন্ধ থাকবে।” এ সিদ্ধান্তের ফলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে, যা নিয়ে অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন।

সরকার ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে। সরকার কোটা পদ্ধতি পুনর্বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে, তবে বিক্ষোভকারীরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যতক্ষণ না তাদের দাবি মেনে নেওয়া হয়।

বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের স্থিতিশীলতা নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। দেশবাসী শান্তিপূর্ণ সমাধানের আশায় আছে, যাতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা পুনঃস্থাপিত হয় এবং শিক্ষার্থীরা তাদের পড়াশোনায় ফিরতে পারে।

শ্রমিকের ঘাটতি মেটাতে ভারতীয় কর্মীদের নিয়ে আসতে চায় বুলগেরিয়া

শ্রমিকের ঘাটতি মেটানোর লক্ষ্যে বলকান দেশ বুলগেরিয়া ভারত থেকে আরো বেশি কর্মী নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছে। এই উদ্দেশ্যে বুলগেরিয়া ভারতের সাথে নতুন একটি চুক্তি করতে চায়। সম্প্রতি, ইনফোমাইগ্রেন্টস বেশ কয়েকজন ভারতীয় কর্মীর সাথে কথা বলেছে যারা বুলগেরিয়ায় কর্মরত আছেন।

শ্রমিকের ঘাটতি:

বুলগেরিয়া বর্তমানে শ্রমিকের সংকটে ভুগছে। বিভিন্ন শিল্প খাতে দক্ষ এবং অদক্ষ কর্মীর চাহিদা বাড়ছে। বিশেষ করে নির্মাণ, কৃষি, এবং পরিষেবা খাতে প্রচুর শ্রমিকের প্রয়োজন।

ভারতীয় কর্মীদের আগমন:

ভারত থেকে কর্মী নিয়ে আসার মাধ্যমে এই সংকট সমাধানের চেষ্টা করছে বুলগেরিয়া। ভারতীয় কর্মীরা বিভিন্ন খাতে কাজ করছেন এবং তাদের অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

চুক্তির পরিকল্পনা:

বুলগেরিয়া ও ভারতের মধ্যে একটি নতুন চুক্তি সম্পাদিত হতে যাচ্ছে, যার মাধ্যমে ভারত থেকে আরো বেশি কর্মী আনা হবে। এই চুক্তির মাধ্যমে শ্রমিকদের ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করা এবং তাদের কর্মস্থলের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ভারতীয় কর্মীদের অভিজ্ঞতা:

ইনফোমাইগ্রেন্টস সম্প্রতি বুলগেরিয়ায় কর্মরত বেশ কয়েকজন ভারতীয় কর্মীর সাথে কথা বলেছে। তারা জানিয়েছেন যে বুলগেরিয়ায় কাজের পরিবেশ ও সুযোগ সুবিধা ভালো হলেও কিছু ক্ষেত্রে ভাষা ও সংস্কৃতিগত সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। একজন কর্মী বলেন, “আমরা এখানে কাজ করতে পেরে খুশি, কিন্তু ভাষা সমস্যার কারণে প্রথমদিকে কিছুটা অসুবিধা হয়েছিল।”

উপসংহার:

ভারত থেকে কর্মী নিয়ে আসার মাধ্যমে বুলগেরিয়া তার শ্রমিক সংকট নিরসনের চেষ্টা করছে। এই চুক্তির ফলে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে এবং উভয় দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তবে, কর্মীদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে তারা স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে পারেন।

error: Content is protected !!