Daily Archives: July 18, 2024

তিব্বতের দুইটি বৌদ্ধ মঠের স্কুল বন্ধ করে শিক্ষার্থীদের সরকারি বোর্ডিং স্কুলে পাঠিয়েছে চীন

চীনের সরকার তিব্বতের দুটি বৌদ্ধ মঠের স্কুল বন্ধ করে দিয়েছে এবং সেখানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের সরকারি বোর্ডিং স্কুলে পাঠিয়েছে। এই পদক্ষেপটি চীনা কর্তৃপক্ষের তিব্বতি সংস্কৃতি ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলির উপর ক্রমবর্ধমান কঠোর নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ঘটনাস্থল:তিব্বতের দুটি প্রধান মঠের স্কুল বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্তের ফলে সেখানকার শিক্ষার্থীদের পাঠ্যক্রম এবং আবাসস্থল পরিবর্তিত হয়েছে। এসব শিক্ষার্থীদের তিব্বত থেকে দূরে চীনের মূল ভূখণ্ডের সরকারি বোর্ডিং স্কুলে স্থানান্তর করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া:তিব্বতিরা এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এবং মঠের অনুসারীরা এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ ও উদ্বিগ্ন। তাদের মতে, এটি তিব্বতি ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উপর আঘাত এবং শিক্ষার্থীদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও বিশ্বাস থেকে বিচ্ছিন্ন করার প্রচেষ্টা।

চীনা সরকারের বক্তব্য:চীনা সরকার তাদের এই সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছে যে, এটি শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য এবং শিক্ষার্থীদের জন্য আরও ভালো সুযোগ সৃষ্টি করতে করা হয়েছে। তারা দাবি করেছে যে, এই পদক্ষেপ শিক্ষার্থীদের একটি আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে পরিচিত করবে এবং তাদের ভবিষ্যত উন্নয়নে সহায়তা করবে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া:আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো চীনের এই পদক্ষেপকে তিব্বতি সংস্কৃতির উপর আক্রমণ হিসেবে দেখছে এবং বলছে এটি তিব্বতিদের অধিকার ও স্বাধীনতার লঙ্ঘন। অনেকেই মনে করছেন, চীনের এই পদক্ষেপ তিব্বতের স্বায়ত্তশাসন এবং সাংস্কৃতিক স্বাধীনতার প্রতি আরও একটি আঘাত।

ভবিষ্যৎ প্রতিক্রিয়া:এই ঘটনার ফলে তিব্বতের স্থানীয় জনগণের মধ্যে চীনা সরকারের প্রতি বিদ্রোহ ও অসন্তোষ বাড়তে পারে। তিব্বতিরা তাদের সংস্কৃতি ও ধর্মীয় ঐতিহ্য রক্ষার জন্য বিভিন্ন প্রতিবাদ ও আন্দোলন করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।চীনের এই সিদ্ধান্ত তিব্বতিদের সংস্কৃতি, ধর্ম এবং শিক্ষা ব্যবস্থার উপর কী প্রভাব ফেলে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কিভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়, তা এখন দেখার বিষয়।

দক্ষিণ চীন সাগরে বিস্তৃত মহীসোপানের দাবিতে জাতিসংঘে আবেদন ভিয়েতনামের

খবর:দক্ষিণ চীন সাগরের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে বিস্তৃত মহীসোপানের দাবিতে জাতিসংঘে আবেদন করেছে ভিয়েতনাম। এটি ফিলিপাইনের অনুরূপ দাবির এক মাস পর করা হয়েছে। এই অঞ্চলে মহীসোপান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই নানা দেশের মধ্যে বিরোধ চলছে।দক্ষিণ চীন সাগর অঞ্চলে মহীসোপান এবং সমুদ্র সম্পদ নিয়ে চীন, ফিলিপাইন, ভিয়েতনামসহ আরও কয়েকটি দেশের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী বিরোধ রয়েছে। আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক আইন অনুযায়ী, দেশগুলো তাদের মহীসোপানের সীমা বাড়ানোর দাবি করতে পারে।ভিয়েতনামের এই পদক্ষেপের ফলে দক্ষিণ চীন সাগরে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফিলিপাইনও সম্প্রতি একই ধরনের দাবি জানিয়েছে, যা এই অঞ্চলে নতুন করে বিরোধ উসকে দিয়েছে।বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক পথ হিসেবে পরিচিত এই সাগরে বিভিন্ন দেশ তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। ফলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি এখন এই অঞ্চলের দিকে, এবং জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত এই বিরোধের সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশে কোটা আন্দোলন যে কারণে হিংস্র রূপ নিল

বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে যুক্ত ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাজধানী ঢাকায় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করার পর, দুই সপ্তাহব্যাপী চলা কোটা বিরোধী বিক্ষোভ সহিংস রূপ নিয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে ক্রমবর্ধমান বেকারত্বের মধ্যে সরকারি চাকরির কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলনকারীদের ওপর হামলায় সোমবার ও মঙ্গলবার ৪০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। এই বছরের ১ জুলাই থেকে এ ঘটনা শুরু হয়। বর্তমান বিক্ষোভের সূত্রপাত কী এবং কেন কোটা ব্যবস্থা বিরোধিতার মুখে পড়েছে?

বাংলাদেশে চাকরির কোটার বিরুদ্ধে কারা আন্দোলন করছে?সারা বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রচলিত চাকরির কোটা পদ্ধতির সংস্কার দাবি করছে, যার অধীনে অর্ধেকেরও বেশি সরকারি চাকরি সংরক্ষিত রয়েছে। বিক্ষোভকারীরা বলছেন যে, তারা কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে জোটবদ্ধ নন এবং তারা একটি যোগ্যতা-ভিত্তিক ব্যবস্থা চান যা সবার জন্য ন্যায্য। বিক্ষোভকারী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ফাহিম ফারুকী বলেন, শিক্ষার্থীরা একটি ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে বিক্ষোভের আয়োজন করেছিল এবং এর পেছনে কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সমর্থন ছিল না। প্রতিবাদ আন্দোলনটি ‘বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলন’ নামে পরিচিতি পেয়েছে। কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে রাজধানীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষার্থী অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে।

সাম্প্রতিক বিক্ষোভের সূত্রপাত কিভাবে?২০১৮ সালের কোটা বিলুপ্তি অবৈধ বলে গণ্য করে ৫ জুন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। তুমুল আন্দোলনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা পদ্ধতি বাতিল করেন। বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শাহবাগ চত্বর অবরোধ করে। রেলপথ অবরোধ করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

বাংলাদেশে কোটা পদ্ধতি কি?১৯৭২ সালে দেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের সাথে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে যারা লড়াই করেছিলেন তাদের সন্তান এবং নাতি-নাতনিদের জন্য সরকারি চাকরির একটি শতাংশ সংরক্ষণ করে একটি কোটা ব্যবস্থা চালু করেছিলেন। সিস্টেমের অধীনে, ৪৪ শতাংশ প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণীর সরকারি চাকরিতে নিয়োগ ‘মেধা’ ভিত্তিক। অবশিষ্ট ৫৬ শতাংশ নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষিত:

প্রথম শ্রেণীর সরকারি চাকরিতে কোটা:- মুক্তিযোদ্ধা কোটা: ৩০ শতাংশ- জেলা কোটা: ১০ শতাংশ- নারী কোটা: ১০ শতাংশ- উপজাতি কোটা: ৫ শতাংশ- প্রতিবন্ধী কোটা: ১ শতাংশ

কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা কী চায়?মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন কোটাবিরোধীরা। তারা জাতিগত সংখ্যালঘু এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য চাকরি সংরক্ষণের বিষয়টি সমর্থন করে। ফারুকী বলছেন- ‘আমাদের প্রতিবাদ কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে নয়। বরং এই ব্যবস্থার সংস্কারের উদ্দেশ্যে।’ আরেক প্রতিবাদকারী, অয়ন (২৩) যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্র, তিনি একমত হয়ে বলেছেন যে তারা কোটা পদ্ধতি সম্পূর্ণভাবে বিলুপ্ত করতে চান না তবে সংরক্ষিত চাকরির শতাংশ কমাতে চান।

সরকার কিভাবে সাড়া দিয়েছে?সরকার দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করেছে যারা মঙ্গলবার বিক্ষোভকারী এবং সরকার সমর্থিত ছাত্র গোষ্ঠীর মধ্যে সহিংস সংঘর্ষের সময় টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ এবং লাঠিচার্জ করেছে। উত্তেজনার মধ্যে বেশ কয়েকটি জেলা জুড়ে আধা-সামরিক বাহিনীও মোতায়েন করা হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, পুলিশ গুলি চালালে ঢাকার দক্ষিণ-পূর্বে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিক্ষোভকারীরা পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এর ফলে ছাত্র ও তিন পুলিশ সদস্যসহ ২০ জন আহত হয়েছে বলে খবর। ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনার একটি মন্তব্যের পর ক্ষমতাসিন দলের নেতা ও মন্ত্রীরা বিক্ষোভকারীদের দেশবিরোধী এবং সরকারবিরোধী হিসেবে প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করছেন। বাংলাদেশে, ‘রাজাকার’ একটি আপত্তিকর শব্দ যা ১৯৭১ সালের যুদ্ধে পাকিস্তানের সাথে সহযোগিতাকারী বাংলাদেশি বিশ্বাসঘাতকদের উদ্দেশে ব্যবহার করা হয়। এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি তাদের এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিরা কোটা সুবিধা না পেলে তবে কি রাজাকারদের নাতি-নাতনিরা পাবে?’ জবাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভের সময় বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিতে থাকে, “আপনি কে? আমি কে? রাজাকার, রাজাকার।” স্থানীয় একটি মিডিয়া আউটলেটে উদ্ধৃত একজন ছাত্র নেতা বলেছেন যে ছাত্ররা তাদের আন্দোলনকে অসম্মান করার সরকারি প্রচেষ্টার প্রতিক্রিয়া হিসেবে স্লোগানটি বেছে নিয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক আসিফ নজরুল আল জাজিরাকে বলেছেন যে, শিক্ষার্থীরা তাদের স্লোগানের মাধ্যমে যে বার্তা দিতে চেয়েছিল তা স্পষ্ট। তিনি বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী নিজেদের রাজাকার বলে মানতে প্রস্তুত নয়।” নজরুল সরকারের প্রতিক্রিয়ারও সমালোচনা করে বলেন, তারা বিক্ষোভ দমন করতে একটি অজুহাত খুঁজে পেয়েছে।

বিক্ষোভে কত মানুষ নিহত ও আহত হয়েছে?পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন। বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, মঙ্গলবার পর্যন্ত, ৪০০ জনেরও বেশি লোক আহত হয়েছে এবং ২৯৭ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ হয়েছে?বিক্ষোভকারীরা সহিংসতার জন্য ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে (বিসিএল) দায়ী করেছে। ফারুকী বলেন, ‘হামলার আগে ছাত্রলীগের সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসের ভেতরে ডেকে পাঠায়। তারা ভবনের উঁচু থেকে আমাদের ওপর পাথর ও ছোট ইট ছুঁড়ে মারে। অনেক ছাত্র এতে আহত হয়েছে। সশস্ত্র ছাত্রলীগের সামনে আন্দোলনকারীরা নেহাতই অসহায় ছিল। আমরা নিরস্ত্র ছিলাম। আমরা অস্ত্র পাবো কোথা থেকে?’ ফারুকীর অভিযোগ, ‘আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা হাসপাতালেও ছাত্রলীগের হাত থেকে নিরাপদ নয়। ছাত্রলীগ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভিতরে গিয়েও সেখানে হামলা চালিয়েছে।’

অয়ন তার বেশ কয়েকজন বন্ধু আহত হওয়ার পরে হাসপাতালের জরুরি ওয়ার্ডে ছিলেন এবং বলেছিলেন যে, কোনো নিরাপত্তারক্ষী বা পুলিশ ছাত্রলীগ থেকে বিক্ষোভকারীদের রক্ষা করেনি।

আনাদোলু এজেন্সির খবর মোতাবেক, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেছেন, সহিংসতায় তাদের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। হোসেন জোর দিয়ে বলেন, ‘ছাত্র সংগঠনকে উসকানি দেয়া হয়েছে।’ একটি মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি দাবি করেছেন, যারা প্রকাশ্যে ‘রাজাকার’ বলে পরিচয় দেয় তাদের পরিণতি ভোগ করতে হবে। এই ধরনের ব্যক্তিদের এই দেশে কোনো স্থান নেই, আমরা কোটা সংস্কারের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি’।

বিক্ষোভ অব্যাহত থাকায় ঢাকায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এরমধ্যেই অয়ন স্পষ্ট করে দিয়েছেন, “আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা বিক্ষোভ থেকে সরছি না।”

বাংলাদেশে কোটা আন্দোলন রুখতে সরকারের ভূমিকা নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের

বাংলাদেশে কোটা আন্দোলন রুখতে সরকারের ভূমিকা নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংস্থাটি সরকারের পদক্ষেপকে গণতান্ত্রিক অধিকার ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছে।

কোটা আন্দোলনের পটভূমি:বাংলাদেশে সরকারি চাকরির কোটা পদ্ধতির সংস্কারের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলছে। শিক্ষার্থীরা এবং চাকরিপ্রত্যাশীরা মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য আন্দোলন করছে। তবে, এই আন্দোলন বিভিন্ন সময়ে দমন-পীড়নের সম্মুখীন হয়েছে।

সরকারের ভূমিকা:কোটা আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। পুলিশের সাথে সংঘর্ষ, বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতার, এবং আন্দোলনকারীদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। সরকারের এই কঠোর ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিক্রিয়া:অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, “কোটা আন্দোলনকারীদের উপর সরকারের দমন-পীড়ন মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। সরকারকে অবিলম্বে সকল প্রকার দমনমূলক পদক্ষেপ বন্ধ করতে হবে এবং আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।”

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আরো জানিয়েছে যে তারা আন্তর্জাতিক মহলে বিষয়টি তুলে ধরবে এবং বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাবে। তারা আন্দোলনকারীদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

উপসংহার:কোটা আন্দোলন নিয়ে বাংলাদেশে সরকারের ভূমিকা আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের কড়া প্রতিক্রিয়া প্রমাণ করে যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সতর্ক রয়েছে। এখন দেখার বিষয়, সরকার এই সমালোচনার পর কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

চীনের সিনথেটিক ড্রাগ চোরাপথে মেক্সিকো হয়ে পৌঁছে যাচ্ছে আমেরিকায়, মহামারী আকার নিচ্ছে জোম্বি ড্রাগ

ভূমিকা

চীন থেকে সিনথেটিক ড্রাগের অবৈধ আমদানি একটি বড় সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এই ড্রাগগুলো মেক্সিকো হয়ে অবৈধ পথে আমেরিকায় প্রবেশ করছে এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি বড় হুমকি সৃষ্টি করছে। বিশেষ করে, একটি নতুন ধরনের ড্রাগ, যা “জোম্বি ড্রাগ” নামে পরিচিত, মহামারী আকার ধারণ করছে।

চীনের ড্রাগ উৎপাদন ও পাচার

চীন বিশ্বব্যাপী সিনথেটিক ড্রাগ উৎপাদনের জন্য পরিচিত। এই ড্রাগগুলি সহজেই উৎপাদন করা যায় এবং কম খরচে বিক্রি করা যায়। চোরাকারবারীরা এই সুবিধার সুযোগ নিয়ে ড্রাগগুলো মেক্সিকোতে পাঠিয়ে দেয়, যেখানে মাদক পাচারকারী কার্টেলগুলি তা আমেরিকায় পাঠায়।

মেক্সিকোর মাধ্যমে আমেরিকায় প্রবেশ

মেক্সিকোতে ড্রাগ কার্টেলগুলি শক্তিশালী ও সুসংগঠিত। তারা বিভিন্ন চোরাপথ ব্যবহার করে ড্রাগগুলোকে আমেরিকায় প্রবেশ করায়। এই চোরাপথগুলো সাধারণত সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত, যা মাদক পাচারের জন্য বিশেষভাবে উপযুক্ত।

জোম্বি ড্রাগের প্রকৃতি ও প্রভাব

জোম্বি ড্রাগ, যাকে Xylazine বা “tranq” বলা হয়, একটি শক্তিশালী সিনথেটিক ড্রাগ যা মানুষের উপর ভয়ানক প্রভাব ফেলে। এটি গ্রহণের পর মানুষ আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে অচেতন হয়ে পড়ে এবং “জোম্বি” আচরণ প্রদর্শন করে। এই ড্রাগটি শরীরে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি করে এবং মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায়।

জনস্বাস্থ্যে প্রভাব

জোম্বি ড্রাগের ব্যাপক প্রসার জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। বহু মানুষ এই ড্রাগের কারণে মৃত্যুবরণ করছে বা চিরস্থায়ী শারীরিক ও মানসিক সমস্যায় ভুগছে। চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলো এই নতুন ধরনের ড্রাগের মোকাবেলায় হিমশিম খাচ্ছে।

উপসংহার

চীনের সিনথেটিক ড্রাগের চোরাপথে মেক্সিকো হয়ে আমেরিকায় প্রবেশ জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি বড় সমস্যা। বিশেষ করে জোম্বি ড্রাগের মহামারী আকার ধারণ করা চিন্তার বিষয়। এর মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন, যাতে এই মহামারীকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়।

চীনের ঋণের ফাঁদে নেপাল: শ্রীলঙ্কার মতো দেউলিয়া হওয়ার পথে

প্রেক্ষাপট

বর্তমান বিশ্বে চীনের প্রভাবশালী অর্থনৈতিক ও কৌশলগত উদ্যোগগুলির মধ্যে অন্যতম হলো বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (BRI)। এই প্রকল্পের মাধ্যমে চীন বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশে বড় মাপের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করছে, যা মূলত ঋণ সহায়তার মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। এই উদ্যোগের ফলে অনেক দেশই চীনের ঋণের ফাঁদে পড়েছে, যার মধ্যে শ্রীলঙ্কা অন্যতম। বর্তমান পরিস্থিতিতে নেপালও শ্রীলঙ্কার মতো চীনের ঋণের ফাঁদে পড়ে দেউলিয়া হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

নেপালের ঋণের বর্তমান অবস্থা

নেপাল বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে যোগ দিয়েছে এবং চীনের কাছ থেকে বড় অঙ্কের ঋণ গ্রহণ করেছে। এসব ঋণ মূলত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় করা হয়েছে, যেমন রাস্তা, ব্রিজ, এবং শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ। কিন্তু এই প্রকল্পগুলির অনেকগুলিই আর্থিকভাবে লাভজনক নয় এবং ঋণের বোঝা ক্রমশ বাড়ছে।

শ্রীলঙ্কার উদাহরণ

শ্রীলঙ্কার উদাহরণ উল্লেখ না করলেই নয়। শ্রীলঙ্কা চীনের কাছ থেকে বিশাল অঙ্কের ঋণ গ্রহণ করে হাম্বানটোটার মতো বড় প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছে। কিন্তু প্রকল্পগুলির লাভজনকতা না থাকায় শ্রীলঙ্কা সেই ঋণ শোধ করতে পারছে না এবং শেষমেষ হাম্বানটোটা বন্দরটি ৯৯ বছরের জন্য চীনের কাছে ইজারা দিতে বাধ্য হয়েছে। এই ধরনের পরিস্থিতির কারণে শ্রীলঙ্কা আজ দেউলিয়া হওয়ার পথে।

নেপালের সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ

নেপালের অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন যে, চীনের ঋণের বোঝা বাড়তে থাকলে নেপালের অর্থনৈতিক অবস্থাও শ্রীলঙ্কার মতো হতে পারে। ইতিমধ্যে নেপালের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে চলেছে। এছাড়া, নেপালের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং দুর্নীতিও অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

উপসংহার

নেপাল যদি চীনের ঋণের ফাঁদ থেকে বের হতে না পারে, তাহলে শ্রীলঙ্কার মতোই তাদেরও দেউলিয়া হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এজন্য নেপালের উচিত তাদের অর্থনৈতিক নীতি পুনর্বিবেচনা করা এবং বিকল্প অর্থায়ন উৎস খোঁজা। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক মহলেরও উচিত উন্নয়নশীল দেশগুলিকে চীনের ঋণের ফাঁদ থেকে রক্ষা করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

error: Content is protected !!