নরেন্দ্র মোদি তৃতীয়বার ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জয়ী হয়ে দেশের আন্তর্জাতিক মর্যাদা বাড়ানোর পথে এগিয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে ভারত বিশ্ব মঞ্চে একটি প্রধান অংশীদার হিসেবে উঠে এসেছে, বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তন ও উন্নয়নে। তবে, সম্প্রতি নির্বাচনে বিজেপি প্রত্যাশিত সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেয়ে জোট সরকার গঠনে বাধ্য হয়েছে, যা মোদির জন্য একটি অপ্রত্যাশিত পরাজয়। এখন তাঁর সামনে চ্যালেঞ্জ হল বিভিন্ন এজেন্ডা নিয়ে জোট অংশীদারদের সাথে সরকারকে সংহত রাখা।
নরেন্দ্র মোদির তৃতীয় মেয়াদে ভারতের আন্তর্জাতিক মহত্বাকাঙ্ক্ষা অপরিবর্তিত থাকবে, বিশেষ করে ওয়াশিংটনের সাথে সম্পর্ক। ভারত কোয়াড নিরাপত্তা জোটের একটি স্তম্ভ হিসেবে উঠে এসেছে, এবং চীনের বাড়তি আগ্রাসনের মুখে উচ্চ প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াচ্ছে। বিশেষকদের মতে মোদী এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডিনের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো শক্তিশালী হবে এবং ভারত মার্কিন বন্ধুত্ব ভবিষ্যতে জন্য আরও উন্মুক্ত।
ভারত তার নীতি অনুযায়ী রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক বজায় রেখেছে, যদিও মার্কিন চাপ ছিল যুদ্ধরত দেশের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার। মোদির নেতৃত্বে নাগরিক স্বাধীনতার অবনতি এবং ভারতের মুসলিম সংখ্যালঘুদের প্রান্তিকীকরণের অভিযোগ আমেরিকান নীতি মহলে উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সেপ্টেম্বরে বলেছিলেন যে তার দেশ একজন কানাডিয়ান নাগরিক ও প্রখ্যাত শিখ নেতার হত্যার সাথে ভারতের সংযোগের “বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ” তদন্ত করছে। নিউ zদিল্লি তীব্রভাবে প্রতিবাদ করেছে, কানাডাকে জঙ্গিদের আশ্রয়দাতা হিসেবে অভিযুক্ত করেছে এবং অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
মার্কিন আইনজীবীরা দুই মাস পরে অভিযোগ করেছেন যে একজন ভারতীয় এজেন্ট একটি ব্যর্থ হত্যা-চুক্তির পিছনে ছিলেন, যা একজন আমেরিকান শিখ কর্মীকে লক্ষ্য করেছিল। নিউ দিল্লি এই অভিযোগের যে কোনো জড়িততা অস্বীকার করেছে এবং অভিযোগ তদন্তের জন্য একটি উচ্চ-স্তরের কমিটি গঠন করেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মোদি-র চরম জয়ের পর নতুন সরকার ভারতের দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশীদের সাথে সম্পর্কের উপর যা যা প্রভাব পড়বে তা পর্যবেক্ষণ করার বিষয়। গত দশকে হিন্দু জাতীয়তাবাদ কেবল দেশের অভ্যন্তরে বিভাজন ও সহিংসতা উস্কে দিয়েছে তাই নয়, পাকিস্তানের সাথে সম্পর্কও তীব্র প্রভাব ফেলেছে ।
বর্তমানে মোদীর বয়স এখন ৭৩বছর এবং তার হিন্দু-জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টিকে (বিজেপি) ভারতের বৈশ্বিক মর্যাদা বাড়াতে হবে এবং পারমাণবিক সশস্ত্র প্রতিবেশী চীন ও পাকিস্তানের সাথে এর বিতর্কিত সম্পর্ক এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সীমানা পরিচালনা করতে আরও পাঁচ বছর সময় পাবে মোদী সরকার।