Daily Archives: June 28, 2024

খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত সরকারের চালাকি: মির্জা ফখরুল

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা দীর্ঘায়িত করতেই সরকার সাজা স্থগিতের চালাকির আশ্রয় নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ছয় মাস ছয় মাস করে সাজা স্থগিত করছে, তার মানে সাজা কিন্তু কমছে না। সেই সাজা আবার গুনতে হবে ভবিষ্যতে যখন তাদের প্রয়োজন হবে। এটা হচ্ছে আরেকটা চালাকি। অর্থাৎ আরও বেশি দীর্ঘায়িত করা হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার এক মানববন্ধনে তিনি এই অভিযোগ করেন।

রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এই মানববন্ধন হয়। আয়োজক ফোরামের আহ্বায়ক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব নিপুণ রায় চৌধুরীর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, আবদুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, শিরিন সুলতানা, রফিকুল ইসলাম, মীর নেওয়াজ আলী, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, শফিকুল ইসলাম মিল্টন, ফরিদা ইয়াসমিন, যুবদলের গোলাম মাওলা শাহিন প্রমুখ বক্তব্য দেন। এ সময় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা তাইফুল ইসলাম টিপুসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। আশপাশের এলাকায় পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতিও ছিল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক ভারত সফর প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে। যেসব চুক্তি করা হচ্ছে, তার কোনোটাই বাংলাদেশের পক্ষে নয়৷ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের সবক দেন, চুক্তি ও সমঝোতার পার্থক্য নাকি বুঝি না৷ শুধু একটা কথা বলব, দেশের সঙ্গে বেইমানি করবেন না৷ এমন চুক্তি ও সমঝোতায় স্বাক্ষর করবেন না, যেটা জনগণের স্বার্থবিরোধী।’

এবার ভারত সফর থেকে সরকার কী এনেছে—জানতে চেয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সীমান্ত হত্যা নিয়ে কোনো কথা নেই৷ ভারত নাকি আমাদের কাছের বন্ধু। এত কাছের বন্ধু কিন্তু সীমান্তে গুলি করে নাগরিক হত্যা করে। এমন নজির বিশ্বে কোথাও নেই৷ সরকার আত্মরক্ষার্থে যেসব কথা বলছে, তাতে জনগণকে বিভ্রান্ত করা যাবে না।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় যেতে চাই না। অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই৷ যারা আসবে, তাদের বরণ করে নেব৷ কিন্তু নিজেরা ক্ষমতায় থাকতে পুরো নির্বাচনব্যবস্থাকে দখল করে নেবেন, সেটা হতে দেব না৷ ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিএনপির এজিএমে খালেদা জিয়া বলেছিলেন, “আদালতের রায়ের পরে কোথায় থাকব জানি না৷ আপনারা গণতন্ত্রের আন্দোলনে কখনো পিছপা হবেন না।”’

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান৷ তিনি বলেন, সরকার তাদের ময়ূরসিংহাসন বজায় রাখতে সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে। খালেদা জিয়া মুক্ত থাকলে তাদের সিংহাসন থাকবে না। সরকার বাংলাদেশকে অন্য দেশের দাসে পরিণত করেছে৷ শুধু স্লোগানে আটকে না থেকে রাজপথে নামতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে। যেসব চুক্তি ও সমঝোতা করা হয়েছে সেগুলো বাংলাদেশের পক্ষে নয়। আমরা নাকি চুক্তি আর সমঝোতার মধ্যে পার্থক্য বুঝি না। আমি শুধু বলব, মানুষকে বোকা বানিয়ে, ভুল বুঝিয়ে এমন চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক সই করবেন না যেটা আমার দেশের আমার জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে। তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি না হওয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, তিস্তার পানি যে সমস্যা, সেটা আপনি বাতিল করে দিলেন, অভিন্ন নদীগুলোর পানি বণ্টনের সমস্যার সমাধান হলো না, সমস্যাই রয়ে গেল। এবার আপনারা দেশকে পুরোপুরি জিম্মি করে দিচ্ছেন। সীমান্তে হত্যা হচ্ছে প্রতিদিন। এ বিষয়ে একটা কথা বলেননি ওই সফরে।

সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের আহ্বায়ক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, সারা দেশে দেশের মানুষ খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ফুঁসে উঠেছে। খালেদা জিয়া আজকে মৃত্যুশয্যায়। তিনি মিথ্যা মামলায় কারাগারে জর্জরিত। তাকে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না।

পুরস্কার হিসেবে ভারতকে সব উজাড় করে দেওয়া হয়েছে: গণ অধিকার পরিষদ

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক ভারত সফরের প্রতিক্রিয়া জানাতে আজ বুধবার বিকেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে গণ অধিকার পরিষদ। অভিযোগে উঠে আসে,তিস্তাসহ অভিন্ন নদীগুলোর পানিবণ্টনের চুক্তি ও সীমান্তে হত্যা বন্ধের মতো বিষয়ে ভারতের সঙ্গে চুক্তি করতে আওয়ামী লীগ সরকার বারবার ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে গণ অধিকার পরিষদ। দলটির নেতাদের অভিযোগ, বিগত চার জাতীয় নির্বাচনে একতরফাভাবে ভারতের সহযোগিতা পাওয়ার পুরস্কার হিসেবে দেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করে ভারত যা চায়, সবকিছু উজাড় করে তাদের দেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। এতে বলা হয়, সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে ১০টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। জনগণের সম্মতি ছাড়া দেশবিরোধী এসব চুক্তি প্রত্যাখ্যান করছে গণ অধিকার পরিষদ। এই চুক্তির মাধ্যমে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে দলটি।

সংবাদ সম্মেলনে গণ অধিকার পরিষদের নেতারা অভিযোগ করেছেন, কানেকটিভিটির নামে বাংলাদেশ দিয়ে ভারতের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত পর্যন্ত রেল যোগাযোগ, ডাক ও টেলিযোগাযোগের সমঝোতা, কৌশলগত ও অপারেশনাল খাতে সামরিক শিক্ষাসংক্রান্ত সহযোগিতা, ওষুধসংক্রান্ত সমঝোতা, বাংলাদেশের জলসীমায় ভারতের অবাধ বিচরণ, ভারতের ইনস্পেস, বাংলাদেশের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা, রেল মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা, সমুদ্রবিষয়ক গবেষণায় দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা ইত্যাদি সমঝোতা ব্যাপকভাবে বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করেছে।

লিখিত বক্তব্যে গণ অধিকার পরিষদ আরও অভিযোগ করে, ভারতকে সব ধরনের সুবিধা দেওয়ার বিনিময়ে কিছু অর্জন করতে না পারা ‘ডামি সরকারের ব্যর্থ ও নতজানু পররাষ্ট্রনীতির বহিঃপ্রকাশ’।

গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক, উচ্চতর পরিষদের সদস্য শাকিল উজ্জামান, শহিদুল ইসলাম, আবদুজ জাহের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান খান, আনিসুর রহমান, বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

করাচিতে অজানা মৃতদেহের রহস্যময় মৃত্যু, শহরে সতর্কতা জারি

করাচি শহরে অজানা মৃতদেহের সংখ্যা বেড়ে ২২, যা একটি রহস্যময় এবং উদ্বেগজনক প্রবণতা। বুধবার জিও নিউজ জানায়, পাকিস্তানের অ-লাভজনক কল্যাণ সংস্থার স্বেচ্ছাসেবকরা মৃতদেহগুলো খুঁজে পেয়েছেন, তবে কোনো মৃতদেহের পরিচয় সনাক্ত করা যায়নি।

মঙ্গলবার পাঁচটি নতুন মৃতদেহ পাওয়া গেছে, যা অজানা মৃত্যুর তালিকায় যোগ হয়েছে। চিপা ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র জানান, করাচির বিভিন্ন এলাকায় পাওয়া তিনটি মৃতদেহ মাদকাসক্তদের ছিল। এখন পর্যন্ত কোনো মৃতদেহের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

চিপা করাচিতে অ্যাম্বুলেন্সের একটি নেটওয়ার্ক পরিচালনা করে এবং নিশ্চিত করেছে যে অজানা মৃতদেহের সংখ্যা ২২-এ পৌঁছেছে। মৃত ব্যক্তিদের কোনো আত্মীয় তাদের সনাক্ত করতে আসেনি।

করাচির এধি ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা আজিম খান জানান, মৃতদের অধিকাংশই মাদকাসক্ত যারা প্রচণ্ড গরমের কারণে মারা গেছেন। করাচি বর্তমানে তীব্র গরমের মধ্যে রয়েছে, যা মাদকাসক্তদের মৃত্যুর কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

করাচির এক প্রবীণ নাগরিক মাদকাসক্তদের দ্বারা মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়েছিলেন যখন তিনি তাদের তার বাড়ির বাইরে মাদক সেবন করার জন্য বাধা দেন। এই ঘটনা পাকিস্তানে মাদকাসক্তির সমস্যা বৃদ্ধির একটি উদাহরণ।

‘আইস’ বা ক্রিস্টাল মেথামফেটামিনের সহজলভ্যতা এবং এর তুলনামূলকভাবে কম মূল্য তরুণ পাকিস্তানিদের মধ্যে এর জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে দিয়েছে।

অজ্ঞাত মৃতদেহের বৃদ্ধি এবং মাদকাসক্তির সমস্যার প্রেক্ষিতে, করাচির নাগরিকরা গরমে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতলে ভর্তি হচ্ছেন। শহরের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক এবং কর্তৃপক্ষকে সতর্ক থাকতে বাধ্য করছে।

মৃতদেহের সনাক্তকরণ এবং মাদকাসক্তি সমস্যার সমাধানে করাচির নাগরিকদের সহায়তার প্রয়োজন।

বলিভিয়ায় সেনা অভ্যুত্থানের প্রচেষ্টা ব্যর্থ, নতুন সংকটের মুখোমুখি দেশ

বলিভিয়ায় বুধবার একটি অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। দেশটির সরকারী প্রাসাদে সাঁজোয়া যান ঢুকে পড়ে, যা প্রেসিডেন্ট লুইস আর্সের মতে, একটি অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা ছিল। তবে, সেনারা দ্রুত পিছু হটে। এই ঘটনা ঘটে দেশের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে।

শীঘ্রই, বলিভিয়ার সেনাবাহিনী সরকার নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করলেও, প্রেসিডেন্ট আর্সে দৃঢ়ভাবে প্রতিরোধ করে এবং নতুন সেনাপ্রধান নিয়োগ করেন, যিনি অবিলম্বে সেনাদের পিছু হটানোর নির্দেশ দেন। এরপরে, শত শত আর্সে সমর্থকরা বলিভিয়ার পতাকা নিয়ে প্রাসাদের বাইরে জড়ো হয় এবং জাতীয় সঙ্গীত গায়।

সেনাপ্রধান জেনারেল জুয়ান জোসে জুনিগাকে গ্রেফতার করা হয় এবং সাবেক নৌবাহিনীর ভাইস অ্যাডমিরাল জুয়ান আর্নেজ সালভাদরকেও আটক করা হয়। সরকারের মন্ত্রী এডুয়ার্ডো দেল কাস্তিলো জানান, এই দলটি গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত কর্তৃপক্ষকে উৎখাত করার চেষ্টা করছিল।

দেশটি কয়েক মাস ধরে প্রেসিডেন্ট আর্সে ও তার একসময়ের মিত্র সাবেক প্রেসিডেন্ট এভো মোরালেসের মধ্যে রাজনৈতিক লড়াইয়ের মুখোমুখি হয়েছে। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় সরকারের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।

অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার আগে জুনিগা সাংবাদিকদের জানান যে, সেনাবাহিনী রাজনৈতিক লড়াইয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে এবং “গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার” করতে চায়। তবে, তার এই দাবি অস্বীকার করেন বিচার মন্ত্রী ইভান লিমা এবং জানান যে, জুনিগার জন্য ১৫-২০ বছরের কারাদণ্ডের ব্যবস্থা করা হবে।

এই ঘটনা বলিভিয়ার মানুষকে হতবাক করেছে, যারা ইতোমধ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতার সাথে পরিচিত। ২০১৯ সালে মোরালেসকেও রাজনৈতিক সংকটের পর অপসারিত করা হয়েছিল।

উপ-রাষ্ট্রপতি ডেভিড চোকেহুয়াঙ্কা জানান, “আর কখনও বলিভিয়ার জনগণ অভ্যুত্থান প্রচেষ্টাকে সহ্য করবে না।”

গাজায় ছড়িয়ে পড়েছে দুর্ভিক্ষ, বাড়ছে শিশুমৃত্যু

গাজা অঞ্চলে চলমান যুদ্ধ ও আক্রমণের ফলে ক্ষুধা ও পুষ্টিহীনতার সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। ৯ বছরের প্যালেস্টাইন বালক ইউনিস খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে শুয়ে আছে। তার মায়ের কোলে থাকা শিশুটি চরম পুষ্টিহীনতা ও জল শূন্যতার শিকার। এ অবস্থার কারণে তার মা গনিমা জুমা সিএনএন-কে জানান, “আমি আমার সন্তানকে চোখের সামনে হারাতে বসেছি।”

ইসরায়েলের আক্রমণে গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, চিকিৎসকরা শিশুদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে পারছেন না। খাদ্য ও পানির ঘাটতি এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে অনেক পরিবার তাদের সন্তানদের মৃত্যুর মুখে দেখতে বাধ্য হচ্ছে। আট মাসের বোমাবর্ষণে অবকাঠামো ধ্বংস, কমিউনিটি নিশ্চিহ্ন এবং বিশুদ্ধ পানির অভাবের কারণে পুষ্টিহীনতা বাড়ছে।

ইনটিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) রিপোর্ট অনুযায়ী, আগামী তিন মাসের মধ্যে গাজার প্রায় সব অঞ্চল দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হতে পারে। জাতিসংঘের ফুড এজেন্সি সতর্ক করেছে যে, দক্ষিণ গাজায় উত্তরাঞ্চলের মতোই “বিপর্যয়কর ক্ষুধা” দেখা দিতে পারে।

২২ জুন পর্যন্ত, গাজায় ৩৪ জন শিশু পুষ্টিহীনতায় মারা গেছে এবং ৫০,০০০-এরও বেশি শিশুকে তীব্র পুষ্টিহীনতার চিকিৎসা প্রয়োজন। ইসরায়েলের আক্রমণে ৩৭,৬৫৮ জন প্যালেস্টাইনির মৃত্যু হয়েছে এবং আরও ৮৬,২৩৭ জন আহত হয়েছে।

যখন ইসরায়েল গাজায় অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছে , সাহায্যকারী গোষ্ঠীগুলিকে পর্যাপ্ত খাবার দিতে বাধা দিচ্ছে, অভিভাবকরা বলছেন যে তাদের সন্তানদের অনাহারে মরতে দেখা ছাড়া তাদের আর কোন উপায় নেই। আট মাসেরও বেশি বোমাবর্ষণ অবকাঠামোকে ছিন্নভিন্ন করেছে, সম্প্রদায়গুলিকে নিশ্চিহ্ন করেছে এবং পুরো আশেপাশের এলাকাগুলিকে ধ্বংস করেছে৷ স্যানিটেশন সিস্টেমগুলি – ইতিমধ্যেই প্রচণ্ড তাপ থেকে জলের ঘাটতির কারণে চাপ দেওয়া হয়েছে – জাতিসংঘের মতে  , বিশুদ্ধ জলের অ্যাক্সেস হ্রাস পাচ্ছে  ব্যাপকভাবে।জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের বাসিন্দারা খাদ্য ও জলের জন্য লাইন দিচ্ছে। এলাকায় জল ও স্যানিটেশন সুবিধা ধ্বংস হয়েছে। গাজার ৬৭% জলের অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জাতিসংঘের অফিস ফর দ্য কোঅর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ওসিএইচএ) জানিয়েছে যে,  ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ উত্তর গাজায় মানবিক সহায়তার পথ বাধা দিচ্ছে।

কামাল আদওয়ান হাসপাতালের শিশুদের মৃত্যু বাড়ছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন যে, পুষ্টিহীনতা ও জলশূন্যতার কারণে শিশুরা বেঁচে থাকার লড়াইয়ে হার মানছে।

চিকিত্সকরা বলছেন যে, তারা যে সমস্ত  অপুষ্টির লক্ষণগুলি দেখচ্ছে শিশুদের মধ্যে ,সেগুলির  চিকিত্সা করতে তারা অক্ষম, যার মধ্যে রয়েছে শ্বাসকষ্ট, বুকে সংক্রমণ এবং মারাত্মক ডিহাইড্রেশন। দীর্ঘস্থায়ী বা সংক্রামক অসুস্থতায় অপুষ্টিতে আক্রান্ত রোগীদের পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা কম, একজন স্থানীয় শিশু বিশেষজ্ঞ সিএনএনকে বলেছেন,   স্থানচ্যুতি আশ্রয়কেন্দ্রে রোগের বিস্তারের কারণে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের মতে, ৭ই অক্টোবর থেকে গাজা কর্তৃপক্ষ ১.৪ মিলিয়নেরও বেশি সংক্রামক রোগের ঘটনা রেকর্ড করেছে।গাজায় শিশুরা খাদ্য সহায়তার জন্য শিবিরে লাইনে দাঁড়াচ্ছে। জাতিসংঘের একাধিক সংস্থা জমি ক্রসিং খোলার আহ্বান জানিয়েছে, যা গাজায় সহায়তা পৌঁছানোর সবচেয়ে কার্যকর উপায়। বর্তমান পরিস্থিতিতে, অনেক শিশুর জীবন সংকটে রয়েছে এবং অবিলম্বে সহায়তার প্রয়োজন।

মা গনিমা জুমা সিএনএন-কে বলেছেন, “আমার সন্তানকে বাঁচাতে  স্বাস্থ্যসেবা প্রয়োজন।” তবুও, খাদ্য, জল এবং চিকিৎসার অভাবে তারা বেঁচে থাকার লড়াইয়ে পরাজিত হচ্ছে।

সিঙ্গাপুরের ক্যাসিনোতে ৪৭ কোটি টাকা জেতা ব্যক্তি হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত

সিঙ্গাপুরের মেরিনা বে স্যান্ডস রিসোর্টের ক্যাসিনোতে ঘটে গেল এক নাটকীয় ঘটনা।প্রতিদিনের মতো সেদিনও বিলাসবহুল এই রিসোর্টের ক্যাসিনো ছিল জুয়াড়িদের হাঁকডাকে সরগরম । ক্যাসিনোর প্রতিটি টেবিলে যখন উত্তেজনা ঠিক তখনই ঘটে গেল এই ঘটনা। ২২ জুন নিয়মিত এক জুয়াড়ি একটি বাজিতে জিতে নেন ৩২ লাখ পাউন্ড, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪৭ কোটি ৫২ লাখ টাকারও বেশি। এই বিজয়ে উচ্ছ্বাসিত হয়ে তিনি আনন্দ উদ্‌যাপন করার সময় আচমকা মেঝেতে পড়ে যান এবং অজ্ঞান হয়ে যান। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলে জানা যায়, তিনি হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।

ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, আতঙ্কিত দর্শকদের মাঝে ক্যাসিনোর মেঝেতে পড়ে আছেন ওই ব্যক্তি। তাকে সাহায্য করার চেষ্টা করছেন এক নারী ও ক্যাসিনোর কর্মীরা।ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়েছে তিনি মারা গেছেন।বর্তমানে তিনি স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন এবং জীবিত আছেন।

ক্যাসিনোর মুখপাত্র ভুয়া খবর ছড়ানোর নিন্দা জানিয়ে নিশ্চিত করেছেন যে ওই ব্যক্তি জীবিত এবং তার চিকিৎসা চলছে। তবে জেতা অর্থের পরিমাণ নিয়ে কিছু প্রশ্ন উঠলেও এ ব্যাপারে কোনো আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।

এটি প্রথম নয়, এর আগেও ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রেও এমন ঘটনা ঘটেছিল, যেখানে জুয়া খেলার সময় হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।ওই বছর মিশিগান অঙ্গরাজ্যের একটি সমুদ্রসৈকত থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার হয়। সে সময় মৃতের প্যান্টের পকেটে লটারি জেতার টিকিট পাওয়া যায়।

error: Content is protected !!