Daily Archives: June 27, 2024

কেনিয়ায় অর্থ বিলের প্রতিবাদে দেশজুড়ে সহিংস বিক্ষোভ

কেনিয়ার রাষ্ট্রপতি উইলিয়াম রুটো মঙ্গলবার দেশের পার্লামেন্টে হামলা এবং পাঁচ জনের মৃত্যুকে “রাষ্ট্রদ্রোহী” হিসেবে নিন্দা করেছেন। তবে বিতর্কিত অর্থ বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সম্পর্কে কিছু বলেননি যা ব্যাপক বিক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।

কেনিয়ায় কর বৃদ্ধির প্রস্তাবের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিক্ষোভ চলছে, যার ফলস্বরূপ মঙ্গলবার দেশ “পুরোপুরি বন্ধ” ছিল। পুলিশের কাঁদানে গ্যাস ও লাইভ গুলি ব্যবহারের ফলে সহিংসতা বেড়েছে।

বিতর্কিত অর্থ বিল ২০২৪-এর কারণে বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়েছে। গত সপ্তাহে সরকার রুটির উপর ১৬% মূল্য সংযোজন কর এবং মোটর যানবাহন, ভেজিটেবল তেল এবং মোবাইল মানি ট্রান্সফারের উপর কর বৃদ্ধি বাতিল করেছে। তবুও, উচ্চ জীবনযাত্রার খরচের কারণে বিক্ষোভ থামেনি।

মঙ্গলবার পার্লামেন্ট আগুনে জ্বলছে। রুটো জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে এই ঘটনাকে “জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি” হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন, বিলের আলোচনাটি “বিপজ্জনক ব্যক্তিদের” দ্বারা হাইজ্যাক করা হয়েছে।

মঙ্গলবারের বিক্ষোভে অন্তত পাঁচজন গুলিবিদ্ধ ও প্রায় ৩১ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল কেনিয়া, কেনিয়া মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন, ল সোসাইটি অফ কেনিয়া এবং পুলিশ রিফর্মস ওয়ার্কিং গ্রুপ কেনিয়ার যৌথ বিবৃতি অনুসারে এর মধ্যে ১৩ জনকে লাইভ বুলেট, চারটি রাবার বুলেট এবং তিনটি লঞ্চার ক্যানিস্টার দিয়ে আঘাত করা হয়েছে।

নাইরোবির সিটি হল, নাইরোবির গভর্নরের অফিসেও আগুন লাগানো হয়েছে, সিএনএন অনুমোদিত সিটিজেন টিভির লাইভ ভিজ্যুয়াল দেখানো হয়েছে।

নিচের মাটির জানালা দিয়ে আগুন জ্বলতে দেখা যেত, অন্যান্য জানালা থেকেও ধোঁয়া বেরোচ্ছে। সিটিজেন টিভি জানায়, কয়েকজনকে ভবন থেকে চেয়ারসহ আসবাবপত্র সরাতে দেখা গেছে।

সিটি হলের কাছে অবস্থিত কেনিয়ার সুপ্রিম কোর্টে পার্ক করা যানবাহনেও আগুন দেওয়া হয়।

এর আগে মঙ্গলবার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামার সৎ বোন আউমা ওবামা, বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সময় সিএনএন লাইভ সম্প্রচারে একটি সাক্ষাত্কারের সময় পুলিশ টিয়ারশেল করেছিল।

অধিকার এবং নাগরিক সমাজ পুলিশের কঠোর প্রতিক্রিয়ার সমালোচনা করেছে। নিরাপত্তা বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ কেনিয়ানদের অপহরণের অভিযোগও উঠেছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল কেনিয়া জানিয়েছে, ১২ জন ব্যক্তির স্থান সম্পর্কে তদন্ত করছে যারা মঙ্গলবারের বিক্ষোভের আগে “রাতের বেলা অপহরণ” হয়েছিল। এই তালিকায় ব্লগার, বিষয়বস্তু নির্মাতা, মানবাধিকার রক্ষক, একজন ডাক্তার এবং একজন সংসদীয় কর্মী রয়েছে, অ্যামনেস্টি কেনিয়ার নির্বাহী পরিচালক ইরঙ্গু হাউটন সিএনএনকে জানিয়েছেন।

কেনিয়ার বিরোধী নেতা রাইলা ওডিঙ্গা সরকারকে “নাগরিকদের ওপর সহিংসতা বন্ধ করতে” আহ্বান জানিয়েছেন এবং বিক্ষোভকারীদের হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার এবং বিতর্কিত অর্থ বিলের অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি করেছেন।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের মহাসচিব কেনিয়ার পুলিশের প্রতি “সংযম প্রদর্শনের” আহ্বান জানিয়েছেন। আফ্রিকান ইউনিয়ন কমিশন সকল পক্ষকে আরও সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কেনিয়াকে “মুখ্য নন-ন্যাটো মিত্র” হিসেবে ঘোষণা করার পর বিক্ষোভের এই পরিস্থিতি ঘটে।

তাইওয়ান স্বাধীনতার সমর্থকদের মৃত্যুদণ্ডের হুমকি চীনের

চীন, যা তাইওয়ানকে তার নিজস্ব অঞ্চল হিসেবে দাবি করে, তাইওয়ানের নতুন রাষ্ট্রপতি লাই চিং-টেকে “বিচ্ছিন্নতাবাদী” হিসেবে উল্লেখ করে এবং তার অভিষেকের পরপরই সামরিক মহড়া চালিয়েছে। শুক্রবার, চীন তাইওয়ানের স্বাধীনতার কঠোর সমর্থকদের বিরুদ্ধে চরম ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার হুমকি দিয়েছে, যদিও চীনা আদালতে গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত দ্বীপে কোনও এখতিয়ার নেই।

তাইওয়ান জানিয়েছে, জানুয়ারিতে লাই চিং-টে নির্বাচনে জেতার পর থেকে চীন সামরিক ক্রিয়াকলাপ, বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা এবং চীনের কাছাকাছি তাইওয়ান-নিয়ন্ত্রিত দ্বীপগুলির আশেপাশে কোস্ট গার্ড টহল সহ চাপ বৃদ্ধি করেছে। চীনের রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী চীনের আদালত, প্রসিকিউটর এবং নিরাপত্তা সংস্থাগুলি স্বাধীনতার সমর্থকদের বিচ্ছিন্নতার জন্য কঠোর শাস্তি দেওয়া উচিত।

সিনহুয়া জানিয়েছে, ২০০৫ সালের বিচ্ছিন্নতা বিরোধী আইন সহ বইগুলিতে ইতিমধ্যেই আইন অনুসারে নির্দেশিকাগুলি জারি করা হচ্ছে৷

চীনের জননিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা সান পিং জানিয়েছেন, বিচ্ছিন্নতার অপরাধের সর্বাধিক শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। নির্দেশিকাগুলি তাইওয়ানকে আন্তর্জাতিক সংস্থায় প্রবেশের প্রচেষ্টা, “বহিরাগত সরকারি বিনিময়” এবং পুনর্মিলন প্রচারকারী দল ও ব্যক্তিদের দমন করাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করেছে।

তাইওয়ানের সরকার এখনও নির্দেশিকাগুলির প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে তাইওয়ানের কর্মকর্তারা বলেছেন, কেবল তাইওয়ানের জনগণই তাদের ভবিষ্যত নির্ধারণ করতে পারে।চীন এর আগে তাইওয়ানের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে, যার মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাইওয়ানের প্রাক্তন ডি ফ্যাক্টো রাষ্ট্রদূত এবং এখন দ্বীপের ভাইস প্রেসিডেন্ট সিয়াও বি-খিমের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। তাইওয়ান চীনের সার্বভৌমত্বের দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে এবং প্রেসিডেন্টসহ তাইওয়ানের সিনিয়র কর্মকর্তারাও চীন সফর করেন না।

সমুদ্রের নিচে যুদ্ধ: ভবিষ্যতের জ্বালানি সংকটে সমাধান

যখন নিউইয়র্কবাসীরা সকালে কফি খান , তখন তাদের বৈদ্যুতিক গ্রিডের প্রয়োজন পড়ে। বিশাল পরিমাণ বিদ্যুৎ এখনও প্রাকৃতিক গ্যাস দ্বারা উৎপাদিত হয়, যা জলবায়ু পরিবর্তন বাড়িয়ে তুলছে। যদিও নিউইয়র্ক দ্রুত সবুজ শক্তিতে রূপান্তরিত হচ্ছে, তাৎক্ষণিকভাবে পর্যাপ্ত সূর্যালোক বা বাতাস সবসময় পাওয়া যায় না।

একদল উদ্যোক্তা সমাধানের জন্য ৩,০০০ মাইল দূরে, রোদেলা ক্যালিফোর্নিয়ার দিকে নয়, বরং মেঘাচ্ছন্ন ব্রিটেনের দিকে তাকাচ্ছেন। তারা মহাসাগরের তলদেশে বিশ্বের বৃহত্তম শক্তি সংযোগ স্থাপন করতে চান, যা ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকাকে তিন জোড়া উচ্চ-ভোল্টেজ কেবল দিয়ে সংযুক্ত করবে।তারগুলি আটলান্টিক মহাসাগরের পুরো তল জুড়ে ২০০০ মাইলেরও বেশি প্রসারিত হবে যাতে যুক্তরাজ্যে পশ্চিম পূর্ব কানাডার সাথে এবং সম্ভাব্য নিউইয়র্ককে পশ্চিম ফ্রান্সের সাথে সংযুক্ত করা যায়।

এই সংযোগের মাধ্যমে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি পূর্ব এবং পশ্চিম উভয় দিকে প্রেরণ করা যাবে। “যখন সূর্য তার চূড়ায় থাকে, তখন ইউরোপে আমাদের পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ থাকে যা আমরা ব্যবহার করতে পারি না,” বলেন সাইমন লাডলাম, ইচিয়া এনার্জির- প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও। “এটি একটি ভাল সময় পূর্ব উপকূলের মতো চাহিদা কেন্দ্রগুলিতে প্রেরণ করার জন্য।”

এই প্রস্তাবিত সংযোগের মাধ্যমে ৬ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রেরণ করা সম্ভব হবে, যা ছয়টি বড় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সমান। এটি জলবায়ু পরিবর্তন কমাতে এবং রাশিয়া এবং চীনের সঙ্গে বৈশ্বিক শক্তি যুদ্ধে মোকাবিলা করতে সাহায্য করবে।

যুক্তরাজ্য, যেখানে পাওয়ার প্ল্যান্টের জন্য জমির জায়গা সীমিত, ইতিমধ্যে সমুদ্রের নীচে বেলজিয়াম, নরওয়ে, নেদারল্যান্ডস এবং ডেনমার্কের সাথে সংযুক্ত রয়েছে। ভারত এবং সৌদি আরব তাদের নিজ নিজ পাওয়ার গ্রিডকে আরব সাগরের মাধ্যমে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করেছে, এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপকে সংযুক্ত করার জন্য একটি বিস্তৃত অর্থনৈতিক করিডোর পরিকল্পনার অংশ।মার্চ মাসে লোহিত সাগরে টেলিকমিউনিকেশন তারের একটি কাটা দেখায় যে এই ধরনের ক্ষতি কতটা ব্যাহত হতে পারে — এশিয়া এবং ইউরোপের মধ্যে আনুমানিক 25% ডেটা প্রবাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

তবে সমুদ্রের নিচে থাকা কেবলগুলি অরক্ষিত নয়। রাশিয়া ইতিমধ্যে ইউরোপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সমুদ্রের নিচে গোপন হামলা চালাচ্ছে। এই প্রকল্পটি ২০৩০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে সম্পন্ন হতে পারে, কিন্তু এটি রাশিয়া এবং অন্যান্য প্রতিপক্ষদের সঙ্গে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়াতে পারে।

যদিও সমুদ্রের তলদেশে থাকা কেবলগুলি সমুদ্রের গভীরতায় সুরক্ষিত থাকবে, তবে তারা সবচেয়ে বেশি অরক্ষিত থাকে যখন তারা ভূমির কাছে আসে। তা সত্ত্বেও, সমুদ্রের তলদেশে থাকা এই ধরনের সংযোগগুলি পুর্নবীকরণযোগ্য শক্তির ব্যবহার বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

লালমনিরহাট সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

লালমনিরহাট সীমান্তে ভাতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নুরুল ইসলাম (৫০) নামে এক বাংলাদেশী নিহত হয়েছেন। গতকাল ভোরে কালীগঞ্জ উপজেলার গোড়ল ইউনিয়নের লোহাকুচি সীমান্তের ৯১৯ নম্বর পিলারের কাছে এ ঘটনা ঘটে। নুরুল ইসলাম সীমান্তবর্তী গোড়ল ইউনিয়নের দুলালী গ্রামের মৃত মাইনুদ্দিন মিয়ার ছেলে। তিনি গরুর ব্যবসা করতেন। এ ঘটনায় বিএসএফকে প্রতিবাদপত্র পাঠিয়ে পতাকা বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজিবি।

নুরুল ইসলামের সঙ্গীরা জানান, ভারতীয় চোরাকারবারির সহায়তায় তারা সাত-আটজন গোড়ল ইউনিয়নের লোহাকুচি সীমান্তের ৯১৯ নম্বর মেইন পিলারের কাছ দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। পরে গরু নিয়ে ফেরার পথে দক্ষিণ চামটা বিএসএফ ক্যাম্পের টহল দলের সামনে পড়ে। একপর্যায়ে বিএসএফ গুলি ছুড়লে ঘটনাস্থলে নুরুল ইসলাম মারা যান। পরে তার মরদেহ নিয়ে তারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন।

কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. ইমতিয়াজ কবির জানান, লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষ হলে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় মামলা করা হবে।জানতে চাইলে লালমনিরহাট-১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পরিচালক লে. কর্নেল মোফাজ্জল হোসেন আকন্দ জানান, এ ঘটনায় বিএসএফকে কড়া প্রতিবাদপত্র পাঠিয়ে পতাকা বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। ভারতীয় ৭৮ বিএসএফের কোম্পানি কমান্ডার ও ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হলে প্রকৃত ঘটনার বিবরণ পাওয়া যাবে।

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শনিবার ঢাকায় সমাবেশের ঘোষণা বিএনপির

আগামী ২৯ জুন শনিবার বেলা ৩টায় নয়া পল্টন অফিসের সামনে সমাবেশ, ১ জুলাই সোমবার থাকা এবং ৩ জুলাই জেলা সদরে সমাবেশ হতে চলেছে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায় নিতে।গত বুধবার দুপুরে দলের অঙ্গসংগঠনের সঙ্গে বৈঠক শেষে নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ফখরুল এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

কর্মসূচি ঘোষণা করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। কিছু দিন পরপরই তাকে হাসপাতালে নিতে হয়। এবারো তাকে জরুরিভাবে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে, আল্লাহর অশেষ রহমত যে তাকে আমরা ফিরে পেয়েছি। তার ফিরে আসার সম্ভাবনা খুব কঠিন ছিল যদি ঠিক সময়ের মধ্যে ডাক্তার চিকিৎসা দিতে না পারতেন। এই অবস্থার মধ্যে আমাদের চিকিৎসকরা বারবার বলেছেন, তাকে বাইরের উন্নত হাসপাতালে নেয়া উচিত। কিন্তু সরকার তাকে যেতে দিচ্ছে না। তারা পরিকল্পিভাবে আদালতকে ব্যবহার করে সেটা থেকে তাকে বঞ্চিত করে রেখেছে। এজন্য বিএনপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশনেত্রীর মুক্তির আন্দোলন জোরদার করার।

শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে খালেদা জিয়াকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর দ্রুত তাঁকে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেওয়া হয়। খালেদা জিয়ার হৃদ্‌রোগের সমস্যা আগে থেকেই ছিল। হার্টে তিনটি ব্লক ছিল। আগে একটা রিং পরানো হয়েছিল। সবকিছু পর্যালোচনা করে বিদেশি চিকিৎসক ও মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে গত রোববার সাবেক প্রধানমন্ত্রীর হৃদ্‌যন্ত্রে স্থায়ী পেসমেকার বসানো হয় বলে তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসকেরা জানান।

গত বছরের ৯ আগস্ট খালেদা জিয়াকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সে সময় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিদেশে নিতে তাঁর পরিবার থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হলেও অনুমতি পাওয়া যায়নি। পরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপারসনের রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয় গত ২৭ অক্টোবর। তাঁর স্বাস্থ্য কিছুটা স্থিতিশীল হলে সে দফায় ৫ মাসের বেশি সময় চিকিৎসা শেষে চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি তিনি বাসায় ফেরেন।
খালেদা জিয়া দুর্নীতির দুই মামলায় সাজা পেয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দী হন। দুই বছরের বেশি সময় তিনি কারাবন্দী ছিলেন। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এক নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার সাজা ২০২০ সালের ২৫ মার্চ স্থগিত করে তাঁকে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেয়। তখন থেকে ছয় মাস পরপর মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার।

ভারত দুঃসময়ের বন্ধু, চিনের কাছে অনেক কিছু শেখার আছে’, মন্তব্যে শেখ হাসিনার

ভারতকে দুঃসময়ের বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে বলেছেন, চীন থেকে শেখার আছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ মনে করল এদিকে ঝুঁকলাম নাকি ওদিকে ঝুঁকলাম। আমি সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি।’

গতকাল মঙ্গলবার গণভবনে ভারত সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী তাঁর সূচনা বক্তব্যে ভারতে রাষ্ট্রীয় সফরের অর্জনের কথা তুলে ধরেন।

আগামী ৮ জুলাই চিন সফরে যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে দেশের বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, এই সফরে গুরুত্বপূর্ণ স্থান পাবে বাণিজ্য এবং অর্থনীতি।

তাঁর এই সফরকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে বেজিং। এই সফরে, দুই দেশের মধ্যে ১০টি সমঝোতা স্মারকে সই হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। হাসিনার এই সফরের অগ্রাধিকার থাকবে বাণিজ্য এবং অর্থনীতি বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রক। এই সফরের আগেই, চিনের কাছে অনেক কিছু শেখার আছে বলে মন্তব্য করেছেন শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার একমাত্র লক্ষ্য হল বাংলাদেশের আরও উন্নতি করা করা। তাই দেশের উন্নয়নে কার সঙ্গে কতটুকু বন্ধুত্ব দরকার, সেটা করে যাচ্ছে সরকার। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব এবং কারও সঙ্গে বৈরিতা নয় এই নীতি নিয়ে কাজ আমরা করছি। ভারত আমাদের চরম দুঃসময়ের বন্ধু। আবার চিন যেভাবে নিজেদের উন্নত করেছে, সেখান থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। আমি সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। এটা নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।’

এই সফরেও অন্য বিষয়ের সঙ্গে তিস্তা প্রকল্পর কথা উঠবে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তার জন্য চিন এবং ভারত দুই দেশই প্রস্তাব দিয়েছে জানিয়ে হাসিনা বলেন, ‘যে প্রস্তাবটা দেশের মানুষের কল্যাণে আসবে আমি সেটাই করব। কতটা ঋণ নিতে হবে, কতটুকু পারব সবকিছু বিবেচনা করতে হবে।’ তিস্তা প্রকল্প দেখার জন্য ভারত থেকে একটি টেকনিক্যাল গ্রুপ আসবে এবং চিনও একটা সম্ভাব্যতা যাচাই করেছে বলে জানান হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘যেটা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য এবং লাভজনক হবে আমরা সেটাই করব।’ হাসিনা বলেন, ‘ভারত যদি প্রকল্পটা করে দেয়, তাহলে সব সমস্যার সমাধানই হয়ে যায়। ভারতের সঙ্গে যদি তিস্তা প্রকল্পটা করা হয়, তাহলে জল নিয়ে আর সমস্যা থাকবে না।’

এমপি আনোয়ারুল হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা কামালকে নিয়ে ঝিনাইদহে ডিবি পুলিশের অভিযান

মঙ্গলবার বিকাল ৪টা নাগাদ সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যা মামলার আসামি আওয়ামী লীগ নেতা কাজী কামাল আহমেদ বাবু ওরফে ‘গ্যাস বাবু’কে ঝিনাইদহ জেলা কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে।ঝিনাইদহ কারাগারের জেলার মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আদালতের নির্দেশে তাকে ঝিনাইদহ কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে।”

জেলা আওয়ামী লীগের নেতা কাজী কামাল আহমেদকে নিয়ে মুঠোফোন উদ্ধার অভিযানে যায় ডিবি পুলিশ
জেলা আওয়ামী লীগের নেতা কাজী কামাল আহমেদকে নিয়ে মুঠোফোন উদ্ধার অভিযানে যায় ডিবি পুলিশছবি: প্রথম আলো
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদকে নিয়ে হত্যার আলামত ও মুঠোফোন উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। আজ বুধবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ঝিনাইদহ জেলা কারাগার থেকে কাজী কামাল আহমেদকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে পুলিশের প্রিজন ভ্যানে করে অভিযানে নেওয়া হয়।

পরে কাজী কামাল আহমেদকে ঝিনাইদহ শহরের পায়রা চত্বর এলাকায় নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ। পায়রা চত্বর-সংলগ্ন গাঙ্গুলি হোটেলের পেছনে একটি পুকুরের কাছে নেওয়া হয় তাঁকে। এ সময় পুকুরপাড়ে দাঁড়িয়ে কাজী কামাল আহমেদের কাছ থেকে শুনে জেলেদের পুকুরে নামিয়ে অভিযান চালানো হয়। অভিযান চলাকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঝিনাইদহ শহরে নিরাপত্তা জোরদার করে। কিছুক্ষণ পরে ঘটনাস্থলে আসেন ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ। তিনি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সহকারী কমিশনার মাহাফুজুর রহমান, জেলা পুলিশ সুপার আজিম-উল-আহসানসহ অন্য কর্মকর্তাদের নিয়ে অভিযান তদারক করেন।

গত ১১ মে চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়ে নিখোঁজ হন সংসদ সদস্য আনার। তার বন্ধু স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল বিশ্বাস কলকাতায় জিডি করার পর দুই দেশে তদন্ত শুরু হয়।

এরপর ২২ মে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এমপি আনারকে কলকাতার এক বাড়িতে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন শেরে বাংলা নগর থানায় হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণের মামলা করেন।পরে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের নেতা বাবুকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে তিনদিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত। পরে তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

error: Content is protected !!