Daily Archives: June 14, 2024

গাজার যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্থ ৩০০০ শিশু

Asia Monitor18 গাজার চিকিৎসক সূত্রে খবর,গাজায়ে ক্রমে চলে আসা ইসরায়েলের যুদ্ধে প্রায় তিন হাজার ফিলিস্তিনি শিশু অঙ্গ- প্রত্যঙ্গ হারিয়েছে। আক্রমণের পরে হাজার হাজার শিশু অঙ্গ- প্রত্যঙ্গ হারাচ্ছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ইসরায়েলই হামলায়ে গাজার অধিকাংশ হাসপাতাল বন্ধ ও হাসপাতালে খাবার ও ওষুধের সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন অরথপেডিক সার্জেন ডঃ মোহাম্মদ শাহিন। ফলে চেতনানাশক ছাড়াই অঙ্গচ্ছেদ করাতে বাধ্য হচ্ছে চিকিৎসকরা।

এছাড়াও মানসিক আঘাত পাচ্ছে প্রবল।জাতিসংঘ বলেছে, গাজার ১০ জন শিশুর মধ্যে ৯ জন শিশুই খাদ্যসঙ্কটে ভুগছে। খিদে, তেষ্টায়ে ও অপুষ্টিতে ফিলিস্তিনি শিশুদের মৃত্যু হচ্ছে। শিশুরা তিনদিনের মধ্যে প্রতি একদিন না খেয়ে থাকছে। খিদের অসহনীয় জ্বালা তারা সহ্য করতে পারছে না। বহু মানুষ ঘরবাড়ি হীন হয়ে পড়েছে। বাস্তুচ্যুত লোকেরা একটি স্কুলে আশ্রয় নেয় কিন্তু সেখানে বিমান হামলা করায়ে ৪০ জন নিহত হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, এই হামলায়ে ১৪ জন শিশু নিহত হয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী অক্টোবর থেকে চলে আসা এই যুদ্ধে ১৫ হাজার ৫০০এর বেশি ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছে।

ইসরায়েলই হামলায়ে অঙ্গ হারানোর মধ্যে একজন হল শাম। তার মা আলজাজিরা জানান,তার ছেলে দরজার বাইরে দাঁড়িয়েছিলো। তখন একটি শার্পনেল তার হাতে আঘাত করে এবং তার হাত সুতোয়ে ঝুলছিল। গাজায়ে চিকিৎসা ব্যবস্থার সমস্যা থাকায়ে ডাক্তারের আস্তে দেরি হলে শামের অপারেশন অ্যানাশতেসিয়ার মাধ্যমে করা হয়। গাজা উপত্যকায়ে নিরপরাধ মানুষের ওপর হামলা চালিয়ে মারার জন্য ইসরায়েল সেনাবাহিনীকে কালো তালিকায়ে যুক্ত করেছে জাতিসংঘ।

ইসরায়েলে হামলা ‘ফালাক২’ এর মাধ্যমে

Asia Monitor18 ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যে লড়াই চলছে তার জন্য এক নতুন অস্ত্র ব্যবহার করছে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজুবুল্লাহ। শনিবার এক বিবৃতিতে গোষ্ঠীটি জানিয়েছে তারা প্রথমবার ইসরায়েলের উত্তরঞ্চলে কমান্ড সেন্টারে ‘ফালাক ২’ রকেট ছুঁড়েছে। জানা গেছে এর আগেও কয়েক বার ‘ফালাক১’ ব্যবহারের পর এই অস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীটি।

এই হামলার ফলে ইসরায়েলে কোন ক্ষতি হয়েছে কিনা তা জানা যাইনি।একজন লেবানিজ কর্মকর্তা সূত্রে খবর, গত কিছু সপ্তাহে গাজার দক্ষিণ রাফাহ শহরে ইসরায়েলই সেনা প্রবেশের ফলে হিজুবুল্লাহ আরও বেড়েছে। হিজুবুল্লাহ গত সাত মাস ধরে ইসরায়েলের সীমান্ত জুড়ে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করছিল তবে এটি ইসরায়েলের আকাশ সীমার মধ্যে চালু করা সফল হামলা বলে মনে করা হচ্ছে। এই গোষ্ঠীর আক্রমণ আরও জোরদার হচ্ছে এবং আরও গভীরে আঘাত করছে ও উন্নত অস্ত্রর প্রচলন করছে।

লেবাননের রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফয়সাল আব্দুল সাতার জানিয়েছেন, “এটি ইসরায়েলই শত্রুকে বার্তা পাঠানোর একটি পদ্ধতি, যার অর্থ এটি আমাদের যা আছে তার একটি অংশ , এবং প্রয়োজন হলে আমরা আরও আঘাত করতে পারি”। হিজুবুল্লাহ লেবানন সীমান্ত থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে ইলানিয়ার একটি ঘাঁটিতে ড্রনের সাহায্যে ইসরায়েলে গভীর আক্রমণ চালিয়েছে। গত বছরের ৭ই অক্টোবর থেকে গাজায়ে ইসরায়েলের হামলা চলছে। এছাড়াও ইসরাইল ও সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজুবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধ চলছে। আগের সপ্তাহে এই লড়াইয়ের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে ও ইসরাইল লেবাননে আঘাত করছে এই আঘাতের ফলে বাগযুদ্ধ বড় যুদ্ধে রূপান্তরিত হতে পারে।

ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রীর উপর হামলা

Asia Monitor18 ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটি ফ্রেডরিকসেনের পর এবার হামলার ঘটনা ঘটেছে রাজধানী কোপেনহেগেনের সড়কে। তাও আবার রাস্তায়ে সবার সামনে। শুক্রবার সন্ধে ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনের কুলতরতেভ এলাকার একটি রাস্তায়ে হামলা ঘটে।শহরের কেন্দ্রস্থলে এক ব্যক্তি তার কাছে হেঁটে আসে এবং তাকে আঘাত করে। এই ঘটনায়ে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ঘটনাটি দেখে স্থানীয় সংবাদপত্র বিটিকে জানিয়েছেন দুই নারী ম্যারি আদ্রিয়ান ও আনা রাভন। তারা এও বলেন এক ব্যক্তি বিপরীত পাশ থেকে এসে প্রধানমন্ত্রীর কাঁধে জোরে ধাক্কা দেয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, জোরে ধাক্কা দেওয়া হলেও প্রধানমন্ত্রী মাটিতে পড়ে যাইনি। বরং ঘটনার পর তিনি একটি ক্যাফেতে যান। প্রধানমন্ত্রীর চোট কতটা গুরুতর তা যানা যাইনি। এ হামলা ঘটেছে সেই সময় যার দুই দিন পরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে ডেনমার্কে।

এই ঘটনাকে ঘৃণ্য কাজ বর্ণনা করে ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ফন ডার লেয়েন বলেছে,” আমরা যা বিশ্বাস করি এবং ইউরোপে যেটির জন্য লড়াই করি, তার বিরুদ্ধে এই ঘটনা।ঘটনা। দেশটির পরিবেশ মন্ত্রী ম্যাগ্নাস হিউনিকে এক্স পোস্টে জানিয়েছে, “ হামলার ঘটনায়ে মেটি হতবাক।আমি অবশ্যই চাই যারা তার কাছাকাছি থাকি তাদের প্রত্যেকে এই ঘটনা নড়িয়ে দিয়েছে।

ফের ক্ষমতায় নরেন্দ্র মোদী, বিশ্ব রাজনীতির হাওয়া কোন দিকে বইতে চলেছে?

নরেন্দ্র মোদি তৃতীয়বার ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জয়ী হয়ে দেশের আন্তর্জাতিক মর্যাদা বাড়ানোর পথে এগিয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে ভারত বিশ্ব মঞ্চে একটি প্রধান অংশীদার হিসেবে উঠে এসেছে, বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তন ও উন্নয়নে। তবে, সম্প্রতি নির্বাচনে বিজেপি প্রত্যাশিত সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেয়ে জোট সরকার গঠনে বাধ্য হয়েছে, যা মোদির জন্য একটি অপ্রত্যাশিত পরাজয়। এখন তাঁর সামনে চ্যালেঞ্জ হল বিভিন্ন এজেন্ডা নিয়ে জোট অংশীদারদের সাথে সরকারকে সংহত রাখা।

নরেন্দ্র মোদির তৃতীয় মেয়াদে ভারতের আন্তর্জাতিক মহত্বাকাঙ্ক্ষা অপরিবর্তিত থাকবে, বিশেষ করে ওয়াশিংটনের সাথে সম্পর্ক। ভারত কোয়াড নিরাপত্তা জোটের একটি স্তম্ভ হিসেবে উঠে এসেছে, এবং চীনের বাড়তি আগ্রাসনের মুখে উচ্চ প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াচ্ছে। বিশেষকদের মতে মোদী এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডিনের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো শক্তিশালী হবে এবং ভারত মার্কিন বন্ধুত্ব ভবিষ্যতে জন্য আরও উন্মুক্ত।

ভারত তার নীতি অনুযায়ী রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক বজায় রেখেছে, যদিও মার্কিন চাপ ছিল যুদ্ধরত দেশের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার। মোদির নেতৃত্বে নাগরিক স্বাধীনতার অবনতি এবং ভারতের মুসলিম সংখ্যালঘুদের প্রান্তিকীকরণের অভিযোগ আমেরিকান নীতি মহলে উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সেপ্টেম্বরে বলেছিলেন যে তার দেশ একজন কানাডিয়ান নাগরিক ও প্রখ্যাত শিখ নেতার হত্যার সাথে ভারতের সংযোগের “বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ” তদন্ত করছে। নিউ zদিল্লি তীব্রভাবে প্রতিবাদ করেছে, কানাডাকে জঙ্গিদের আশ্রয়দাতা হিসেবে অভিযুক্ত করেছে এবং অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

মার্কিন আইনজীবীরা দুই মাস পরে অভিযোগ করেছেন যে একজন ভারতীয় এজেন্ট একটি ব্যর্থ হত্যা-চুক্তির পিছনে ছিলেন, যা একজন আমেরিকান শিখ কর্মীকে লক্ষ্য করেছিল। নিউ দিল্লি এই অভিযোগের যে কোনো জড়িততা অস্বীকার করেছে এবং অভিযোগ তদন্তের জন্য একটি উচ্চ-স্তরের কমিটি গঠন করেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মোদি-র চরম জয়ের পর  নতুন সরকার ভারতের দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশীদের সাথে সম্পর্কের উপর যা যা প্রভাব পড়বে তা পর্যবেক্ষণ করার বিষয়। গত দশকে হিন্দু জাতীয়তাবাদ কেবল দেশের অভ্যন্তরে বিভাজন ও সহিংসতা উস্কে দিয়েছে তাই নয়, পাকিস্তানের সাথে সম্পর্কও তীব্র প্রভাব ফেলেছে ।

বর্তমানে মোদীর বয়স এখন ৭৩বছর এবং তার হিন্দু-জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টিকে (বিজেপি) ভারতের বৈশ্বিক মর্যাদা বাড়াতে হবে এবং পারমাণবিক সশস্ত্র প্রতিবেশী চীন ও পাকিস্তানের সাথে এর বিতর্কিত সম্পর্ক এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সীমানা পরিচালনা করতে আরও পাঁচ বছর সময় পাবে মোদী সরকার।

জ্যাকবের নাটকীয় প্রত্যাবর্তন, নির্বাচনের পর শেষ হাসি কি হাসতে পারবে রামাফোসা!

দক্ষিণ আফ্রিকার আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস (এএনসি) দল গত সপ্তাহের নির্বাচনে প্রচণ্ড ধাক্কা খেয়ে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে সরকার গঠনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।বুধবার, এএনসির জাতীয় মুখপাত্র জানিয়েছেন যে, যেকোনো কোয়ালিশন(জোট) সরকার ঐক্য ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে গড়বে এবং সরকার জাতীয় ঐক্যের ইঙ্গিত দিয়েছিল। কয়েক দশক ধরে এএনসি এককভাবে শাসন করলেও বর্তমান নির্বাচনের নিরিখে দলের সমর্থন ৫৭% থেকে নেমে প্রায় ৪০%-এ দাঁড়িয়েছে। বিশ্লেষক ও জনমত জরিপে এএনসির ক্ষতি পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জ্যাকব জুমা ও তার নতুন গঠিত উমখন্তো ওয়েসিজও (এমকে) দলের কারণে এএনসির প্রচলিত ভোটারদের অসন্তোষের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে।

জ্যাকব জুমা, বর্তমান এএনসি নেতা এবং দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতি সিরিল রামাফোসার কঠোর সমালোচক, ২০১৮ সালে রাষ্ট্রপতির পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন এবং তারপর থেকে রাজনৈতিক প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করছেন। তার এমকে দল, এএনসির সাবেক সশস্ত্র শাখার নামে নামকরণ করা হয়েছে, মাত্র পাঁচ মাস আগে গঠিত হয়েছিল এবং এখন প্রায় ১৫% ভোট পেয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার তৃতীয় বৃহত্তম দল।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক টেসা ডুমস বলেন, এমকে দলকে “এএনসিকে তার পূর্ব গৌরবে ফিরিয়ে আনার জন্য একটি দল” হিসাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। অনেক এমকে ভোটার এই নির্বাচনকে প্রতিবাদ ভোট হিসাবে দেখেছেন।

এএনসির জনপ্রিয়তা সর্বকালের সর্বনিম্ন স্তরে পৌঁছেছে এবং রামাফোসার রাজনৈতিক ভবিষ্যতও অন্ধকারে আছে, ফলে এএনসির জন্য জোট সরকার গঠন একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।দক্ষিণ আফ্রিকার সংবিধান অনুযায়ী, চূড়ান্ত নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার ১৪ দিনের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলিকে একটি কোয়ালিশন বা জোট গঠন করতে হবে। এই আলোচনার ফলাফলই রামাফোসার ভবিষ্যত নির্ধারণ করবে।

প্রথমে রয়েছে আনুষ্ঠানিক বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (ডিএ), একটি কেন্দ্রীয় ও ব্যবসা-বান্ধব দল যা দীর্ঘদিন এএনসির সমালোচনা করে আসছে। জন স্টিনহুইসেনের নেতৃত্বে, এটি অনেকের দ্বারা শ্বেতাঙ্গ দক্ষিণ আফ্রিকানদের দল হিসাবে দেখা হয়, যদিও ডিএ এই ধারণা অস্বীকার করে। বিশ্লেষকদের মতে, ডিএ-এএনসি জোট হলে রামাফোসা তার পদে থাকতে পারেন। ডিএ ২১.৮% ভোট পেয়েছে, এবং এএনসির সাথে মিলিত হলে তাদের সমর্থন ৬০% এর বেশি হবে, যা স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা।সরকারে থাকাকালীন, বর্ণবাদ-পরবর্তী দক্ষিণ আফ্রিকায় অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি এবং জাতিগত সমতা চালনার জন্য ANC-এর ফ্ল্যাগশিপ নীতি ছিল তার বিস্তৃত-ভিত্তিক কালো অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নীতি, যা ট্রিপল-বিইই বা সাধারণভাবে বিইই নামে পরিচিত।

এএনসি যদি এমকের সাথে জোট আলোচনায় সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে জুমা রামাফোসাকে পদত্যাগ করাতে চাইবেন, প্রতিশোধও নিশ্চিত করবেন। তবে রামাফোসা যদি এএনসির উপর তার নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখেন, তাহলে এমকের সাথে জোট অসম্ভাব্য। এমকের ইশতেহারে ঐতিহ্যবাহী নেতাদের ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের জন্য সংবিধান সংস্কারের দাবি রয়েছে। জুমার দল জুলু জাতীয়তাবাদকে কেন্দ্র করে প্রচারণা চালিয়েছে, যা দক্ষিণ আফ্রিকায় জাতিগত ও উপজাতীয় উত্তেজনা বাড়িয়েছে। অন্য বিকল্প হলো এএনসি-ইএফএফ জোট, যা বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ বাড়াতে সক্ষম। এছাড়া, একটি জাতীয় ঐক্যের সরকার (জিএনইউ) সম্ভাব্য বিকল্প হতে পারে। এএনসিকে জটিল রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট মোকাবিলা করতে হবে এবং একটি স্থিতিশীল সরকার গঠন করতে হবে।

ইজরায়েল নিজেদের অবস্থান থেকে পিছু না হটলে, পণবন্দিদের হত্যার হুমকি হামাসের

গাজায়, হামাস নেতারা তাদের অপারেটিভদের শরণার্থী বা হস্টেজদের হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছে। যদিও তারা এটা বিশ্বাস করে যে, ইজরায়েলি বাহিনী অগ্রসর হচ্ছে, ইতিমধ্যেই অস্থিতিশীল পরিস্থিতির আহবান করছে। ইজরায়েলি কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় বন্দী করে রাখা শরণার্থীদের হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন হামাস অপারেটরকে, যদিও তারা ইসরায়েলি বাহিনীর একটি আসন্ন পন্থা অনুভব করে তবেই বন্দীদের গুলি করার নির্দেশ দিয়েছে।

ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) সম্প্রতি মধ্য গাজার নুসেইরাত থেকে চার  দিকে উদ্ধারের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইজরায়েলি কর্মকর্তারা হামাসের দাবির বিরোধিতা করেছেন এবং ইজরায়েলি বিমান হামলায় তিনজন বন্দী নিহত হয়েছে।

৭ই অক্টোবরের পরে যখন হামাস জঙ্গিরা ইজরায়েলের তাদের স্থল-সমুদ্র-আক্রমণে ২০০ জনেরও বেশি লোককে বন্দী করেছিল, তখন থেকে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সরকার এই ব্যক্তিদের সনাক্ত ও উদ্ধার করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এনওয়াইটি রিপোর্ট অনুসারে, আমেরিকান এবং ইজরায়েলি গোয়েন্দা এবং সামরিক বিশ্লেষকদের একটি “ফিউশন সেল” বন্দীদের গতিবিধি করতে ড্রোন, স্যাটেলাইট এবং কমিউনিকেশন ইন্টারসেপ্ট ব্যবহার করে অক্লান্ত পরিশ্রম করছে।

যদিও ইজরায়েল সাতজন বন্দীকে বাঁচাতে পেরেছে। আবার অনেকে সংঘর্ষের সময় বা তাদের অপহরণকারীদের হাতে হত্যা হয়েছে।

কাউকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে চারজন বন্দীকে মুক্তি দেওয়াও  একটি কৌশল। হামাসের এখনও কয়েক ডজন বন্দী রয়েছে, যাদের বেশিরভাগই, যদি সবাই না হয়, অপারেশনে মুক্তি পাবে না, তবে করতে পারে। শুধুমাত্র একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসাবে উদ্ধার করা হবে,” এনওয়াইটি দ্বারা উদ্ধৃত হিসাবে ইজরায়েলি রিজার্ভের একজন লেফটেন্যান্ট কর্নেল আভি কালো বলেছেন।

প্রচেষ্টা আরও জটিল হয়েছে যখন থেকে জানা গেছে যে তাদের ভূগর্ভস্থ টানেল সহ আরও নিরাপদ স্থানে লুকিয়ে রাখা হচ্ছে, যার ফলে মাটির উপরে উদ্ধার ক্রমশ বিরল হয়ে উঠেছে। বেশিরভাগ বন্দীদের মুক্ত করার একমাত্র সম্ভাব্য সমাধান হল কূটনৈতিক আলোচনা এবং সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি চুক্তির মাধ্যমে বলে মনে করা হচ্ছে, বিশেষজ্ঞরা বলেছেন।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ (ইউএনএসসি) সোমবার গাজায় যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনাকে সমর্থন করে মার্কিন খসড়া প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। পক্ষে ১৪টি ভোট এবং রাশিয়া বিরত থাকার কারণে, রেজোলিউশনটি ৩১শে মে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কর্তৃকউত্থাপিত যুদ্ধবিরতি এবং বন্দীদের মুক্তির প্রস্তাবকে “স্বাগত জানায়”। এটি জড়িত সকল পক্ষকে “বিলম্ব না করে এবং শর্ত ছাড়াই এর শর্তাবলী সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করার” আহ্বান জানায়। রেজোলিউশনে উল্লেখ করা হয়েছে যে ইজরাইল যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনায় সম্মত হয়েছে এবং হামাসকেও তা করার আহ্বান জানিয়েছে। জবাবে হামাস বলেছে যে তারা ইউএনএসসি ভোটকে “স্বাগত” জানায়। এবং এটাও বলে যে এই শান্তির পথ চ্যালেঞ্জে ভরা।

জাতিসংঘে ফিলিস্তিনি দূত রিয়াদ মনসুর কাউন্সিলের সিদ্ধান্তে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন, যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের দায়িত্ব ইসরাইলের ওপর চাপিয়ে দিয়েছেন। ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এই প্রস্তাবটিকে গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে “গণহত্যার যুদ্ধ” বলে অভিহিত করে এর অবসানের জন্য একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ বলে বর্ণনা করেছেন।

কুয়েতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, নিহত ৪০ ভারতীয়, মৃতের পরিবারগুলিকে সহযোগিতার আশ্বাস ভারত সরকারের

স্থানীয় সময় সকাল ছয়টা ঠিক তখনই ঘটে ভয়ংকর এক দুর্ঘটনা, কুয়েতের মাঙ্গাফ শহরের একটি শ্রমিক আবাসন ভবনে আগুন লাগে যেখানে মোট ৪৯ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ৪০ জন ভারতীয় এবং ৫০ জন আহত হয়েছে, বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর। ভারতীয় ছাড়াও নিহতদের মধ্যে পাকিস্তান, ফিলিপাইন, মিশর ও নেপালের বাসিন্দাও আছে বলে জানা গেছে।

ছয় তলা বিল্ডিংয়ের একটি রান্নাঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়, এমনটাই জানান কর্মকর্তারা, সেই আবাসন টিতে প্রায় ১৯৫ জন লোক বাস করত এবং তারা সকলেই একই কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। আধিকারিকরা জানিয়েছেন, বাসিন্দারা সবাই ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন। ধোঁয়ার মধ্যেই শ্বাসরুদ্ধ হয়ে বেশিরভাগ জনের মৃত্যু হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন প্রাণ বাঁচাতে বাসিন্দাদের অনেকেই জানলা দিয়ে ঝাঁপ দিয়েছিলেন কিন্তু তারা প্রাণে বাঁচেননি।
আহতদের কুয়েতের আদান, জাবের, ফারওয়ানিয়া, মোবারক আল কাবীর ও জাহরা নামক পাঁচটি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মতে, ভর্তি হওয়া রোগীদের বেশিরভাগই স্থিতিশীল।

ভারতীয় রাষ্ট্রদূত আদর্শ সোয়াইকা যে ভবনে আগুন লেগেছিল সেই স্থান পরিদর্শন করেছিল এবং আহতদের সাথে বিভিন্ন হাসপাতালে দেখা করেছেন।
বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে যে কুয়েতে ভারতীয় দূতাবাস স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করছে এবং পরিবারের সদস্যদের জন্য একটি হেল্পলাইন নম্বর +৯৬৫-৬৫৫০৫২৪৬ (হোয়াটসঅ্যাপ এবং নিয়মিত কল) তৈরি করা হয়েছে । স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রের খবর কুয়েতের সময় ভোর ৪:৩০ নাগাদ আদতে আগুনটি লাগে এবং ছটা নাগাদ দমকলের কাছে খবর পৌঁছায়। সময়ের এই ব্যবধান নিয়েও উঠছে নানান প্রশ্ন।

কুয়েত টাইমস জানিয়েছে যে, শেখ ফাহাদ আল-ইউসুফ আল-সাবাহ, প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী ভবনের মালিক এবং দারোয়ানকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন। কুয়েতের আমির শেখ মেশাল আল-আহমদ আল-জাবের আল-সাবাহ কর্তৃপক্ষকে আগুনের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং বলেছেন যে এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার বাসভবনে একটি উচ্চ-পর্যায়ের পর্যালোচনা সভা করেছেন এবং যারা মারা গেছেন তাদের প্রত্যেকের পরিবার পিছু ২ লাখ করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন। তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।
বিদেশ মন্ত্রক বলেছে যে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে, রাজ্যের মন্ত্রী শ্রী কীর্তি বর্ধন সিং অবিলম্বে কুয়েতে যাচ্ছেন “মৃতদেহের দ্রুত প্রত্যাবাসনের পাশাপাশি আহতদের চিকিৎসা সহায়তার জন্য”।

বিদেশ মন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর তার কুয়েতের প্রতিপক্ষ আবদুল্লাহ আলী আল-ইয়াহিয়ার সাথে কথা বলেছেন যিনি তাকে সেখানকার কর্তৃপক্ষের প্রচেষ্টা সম্পর্কে আপডেট করেছেন। “আশ্বস্ত করা হয়েছিল যে ঘটনাটি সম্পূর্ণভাবে তদন্ত করা হবে এবং সেই দায় স্থির করা হবে,” মিঃ জয়শঙ্কর এক্স-এ বলেছিলেন, তিনি আরও বলেছেন যে তিনি যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের মৃতদেহ দ্রুত প্রত্যাবাসনের আহ্বান জানিয়েছেন।

রাশিয়ার নিউক্লিয়ার সাবমেরিন পৌঁছল কিউবাতে, চাপে যুক্তরাষ্ট্র

মার্কিন রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে, শক্তি প্রদর্শনী করতে একটি রাশিয়ান পারমানবিক সাবমেরিন এবং অন্যান্য নৌ জাহাজ বুধবার কিউবায় পৌঁছায় এবং সেখান থেকে ফ্লোরিডা উপকূল হয়ে কমিউনিস্ট দ্বীপে পাঁচদিনের সফরে যায়।
কিউবার মতে, সাবমেরিন কাজান কোনরকম পারমাণবিক অস্ত্র নাকি বহন করছে না। তার সাথে ছিল ফ্রিগেট অ্যাডমিরাল গোর্শকভ, সেই সাথে একটি তেল ট্যাঙ্কার এবং উদ্ধারকারী টাগ।

কাজান এবং অ্যাডমিরাল গোর্শকভ, যা রাশিয়ার অন্যতম আধুনিক যুদ্ধজাহাজ। হাভানা থেকে কিছু দূরে জাহাজটি দেখা যায়, যা ফ্লোরিডার প্রান্ত থেকে প্রায় ৯০ মাইল (১৪৫ কিমি) দূরে অবস্থান করছে।

এএফপির এক সাংবাদিক জানিয়েছেন, ট্যাঙ্কার পাশিন এবং টাগ রাশিয়ার সাদা, নীল ও লাল তিরঙ্গা উড়িয়ে বুধবার ভোরে বন্দরে প্রবেশ করে।
কিউবান সরকার ঘোষণা করেছে যে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রদ্রিগেজ বুধবার মস্কোতে তার রাশিয়ান প্রতিপক্ষ সের্গেই ল্যাভরভের সাথে দেখা করছেন, কারণ দুজনেই কোল্ড ওয়ার বা ঠান্ডা লড়াইয়ের সময় থেকেই মিত্র, বর্তমানে তাদের সম্পর্ক আরও শক্ত করছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এত কাছাকাছি রাশিয়ান সামরিক বাহিনীর অস্বাভাবিক মোতায়েন, বিশেষ করে শক্তিশালী সাবমেরিন – ইউক্রেনের যুদ্ধ নিয়েও একটি উত্তেজনার সৃষ্টি করে। যেখানে ইউক্রেন, পশ্চিমা-সমর্থিত সরকার রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করছিল।
কিউবার প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল দিয়াজ-ক্যানেল গত মাসে ক্রেমলিনের বাইরে অনুষ্ঠিত, রেড স্কোয়ারে ৯ই মে বার্ষিক সামরিক প্যারেডের জন্য রাশিয়ার প্রতিপক্ষ ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে দেখা করেছিলেন।

শীতল যুদ্ধের সময়, কিউবা, সোভিয়েত ইউনিয়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র ছিল। দ্বীপে, সোভিয়েত পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনের ফলে ১৯৬২ সালে কিউবান ক্ষেপণাস্ত্র সংকট শুরু হয়, যখন ওয়াশিংটন এবং মস্কো যুদ্ধের জন্য তৈরি। ২০২২ সালে ডিয়াজ-কানেল এবং পুতিনের মধ্যে বৈঠক হওয়ার পর থেকে রাশিয়া এবং কিউবার মধ্যে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়েছে।

error: Content is protected !!