Monthly Archives: May 2024

আগামী বছর মোদি অবসর নেবেন, অমিত শাহ প্রধানমন্ত্রী হবেন, ভবিষ্যতবাণী কেজরিওয়ালের

বৃহস্পতিবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ভবিষ্যতে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা গ্রহণের পথ প্রশস্ত করছেন।বৃহস্পতিবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ভবিষ্যতে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা গ্রহণের পথ প্রশস্ত করছেন।

লখনউতে সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদবের সাথে একটি যৌথ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কেজরিওয়াল বলেন, “আজ লখনউতে আমি ইউপির ভোটারদের ভারত জোটকে ভোট দেওয়ার জন্য অনুরোধ করতে এসেছি।

কেজরীবাল আরও বলেন, “এরপর অমিত শাহকে প্রধানমন্ত্রী করা হবে। সুতরাং, মোদী নিজের জন্য নয়, অমিত শাহের জন্য ভোট চাইছেন। তাহলে মোদীর গ্যারান্টি পূরণ করবে কে?” কেজরীবালের আরও দাবি, বিজেপি এবার ভোটে জিতলে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীও দুই মাসের মধ্যে বদল হবে। পদ হারাবেন যোগী আদিত্যনাথ।দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বলেন যে, বিজেপি ২২০ আসনের কম পাচ্ছে এবং নিশ্চিত করেছেন যে বিরোধীদের ভারত ব্লক তার সরকার গঠন করতে চলেছে।

কেজরিওয়াল বলেন,”প্রধানমন্ত্রী মোদি ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫-এ ৭৫ বছর বয়সী হবেন। প্রধানমন্ত্রী মোদি অমিত শাহকে তাঁর উত্তরসূরি করার এবং ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫-এ তাঁকে প্রধানমন্ত্রী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।প্রধানমন্ত্রী মোদি এখনও বলেননি যে তিনি ৭৫ বছর পরে অবসর নেবেন না, প্রধানমন্ত্রী মোদী এই নিয়ম তৈরি করেছেন এবং আমি সম্পূর্ণ আশা করি যে তিনি এই নিয়মটি অনুসরণ করবেন।”

অনুমান করা যাচ্ছে যে বিজেপি ২২০টিরও কম আসন পাচ্ছে। হরিয়ানা, দিল্লি, পাঞ্জাব, কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ, উত্তর প্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং রাজস্থানে তাদের আসনসংখ্যা ক্রমশ হ্রাস পেতে চলেছে। বিজেপি তার সরকার গঠন করতে যাচ্ছে না। , ভারত জোট তার সরকার গঠন করতে যাচ্ছে” তিনি বলেন।চলমান লোকসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আম আদমি পার্টি এবং সমাজবাদী পার্টি ভারত ব্লকের অংশীদার।

গত সপ্তাহে, জাতীয় রাজধানীতে লোকসভা নির্বাচনের আগে আম আদমি পার্টির আহ্বায়ককে ১লা জুন পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তবে, তার জামিনের শর্ত অনুসারে, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী দিল্লির মদ কেলেঙ্কারির মামলায় তার ভূমিকা সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করতে পারবেন না।

আন্দোলন ব্যর্থ মনে করে না সরকার বিরোধী দল বিএনপি

বাংলাদেশে চূড়ান্ত সাফল্য না এলেও জাতীয় নির্বাচনের আগের সরকারবিরোধী আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করে না বিএনপি। সমাজবিরোধী বিভিন্ন অপকৌশলের’ সঙ্গে পেরে না ওঠায় লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হয়নি বলে মনে করে বিএনপি।তবে জাতীয় নির্বাচনে সাধারণ মানুষ ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ায় আন্দোলনের নৈতিক বিজয় হয়েছে বলেও তারা মনে করে দলটি।

বিএনপির মতে,আন্দোলন ঘিরে তাদের পরিকল্পনায় কোনো ঘাটতি ছিল না। তাদের লক্ষ্য ছিল শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আন্দোলনকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো। তবে সরকার বিচার বিভাগ, প্রশাসনসহ রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে সেই আন্দোলন দমাতে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে।

বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, বিগত আন্দোলন ঘিরে সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিল, তা মাথায় রেখেই তারা আগামী দিনের কর্মসূচি চূড়ান্ত করবেন। সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী সামনের দিকে অগ্রসর হবেন।

বিএনপি গত রোববার সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেছে, বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা যাতে রাজনীতি করতে না পারেন, সেজন্য তাদের সাজা দিয়ে দূরে রাখতে নতুন ট্রাইব্যুনাল করছে সরকার। বামঐক্যের সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়টি উত্থাপন করে বিএনপি। তখন জোটের পক্ষ থেকে বলা হয়, সব স্বৈরশাসকই এভাবে দমনপীড়নের মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকতে চায়। এসব মোকাবিলা করেই আন্দোলন অব্যাহত রাখতে হবে। এদিকে সমমনা জোট আগামীতে কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণের ওপর জোর দেয়। যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে একটি শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেন তারা।

বিএনপির সঙ্গে বৈঠক সম্পর্কে জানতে চাইলে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, ‘সরকারের দুঃশাসনে অতিষ্ঠ মানুষ পরিবর্তন চায়। এ অবস্থায় যুগপৎ আন্দোলনকে কীভাবে পুনরুজ্জীবিত করে মাঠে নামা যায়, সে বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করেছি। আগামীতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়েই দাবি আদায় করা হবে।’

১২ দলীয় জোটের শরিক লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান বলেন, ‘আগামীর আন্দোলনে জামায়াতসহ সরকারবিরোধী সব দলকে কীভাবে একসঙ্গে মাঠে নামানো যায়, সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল কী হবে—সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ঈদের পর থেকে যুগপৎ আন্দোলন শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে।’

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে ডোনাল্ড লু’র সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

গত কাল অর্থাৎ ১৫ ই মে বুধবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন ঢাকা সফররত মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু।বৈঠক শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জানান,যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক গভীর ও বিস্তৃত করার লক্ষ্যে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু’র সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন জানান, ডোনাল্ড লু সম্পর্ককে ভিন্নমাত্রায় নিয়ে যাওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। সেই অভিপ্রায়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফরে এসেছেন। আমাদের আলোচনা সে লক্ষ্যেই হয়েছে।
তিনি বলেন, তার সঙ্গে নির্বাচন ও মানবাধিকার নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। আমার সঙ্গে শুধু ইতিবাচক ইস্যু নিয়েই আলোচনা হয়েছে।

বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পঞ্চমবারের মতো সরকার গঠনের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। তার চিঠিতে দু›দেশের সম্পর্ককে উচ্চতর ভিন্নমাত্রায় নিয়ে যাওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছিলেন। সেই অভিপ্রায়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফরে এসেছেন।


পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের বৈদেশিক রিজার্ভ শক্তিশালী করার জন্য তাদের ডেভেলপমেন্ট ফিন্যান্স করপোরেশন (ডিএফসি) থেকে বাংলাদেশকে অর্থায়ন করতে চায়। একইসঙ্গে আমাদের ট্যাক্স সিস্টেমকে আধুনিক করার জন্য আমাদের সহায়তা করতে চায়। ট্যাক্স ফাঁকি রোধে ট্যাক্স কালেকশনের ক্ষেত্রে তারা আমাদের সহায়তা করতে চায়। এলডিসি বা নিম্ন থেকে মধ্য আয়ের দেশে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাতেও যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পাশে থাকার কথা বলেছে।


ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনী রাশেদ চৌধুরীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আমি আলোচনা করেছি। তারা জানিয়েছেন, বিষয়টি মার্কিন বিচার বিভাগের আওতাভুক্ত। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের অন্য বিভাগগুলোর হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। কিন্তু তাদের বিচার বিভাগের সাথে বাংলাদেশ দূতাবাসের যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে বিচার বিভাগের সম্মতি আনয়নের কাজ এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত আছে।


মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক উদ্বাস্তু হয়ে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশের পরই সবচেয়ে বেশি ত্রাণ সহায়তা দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানিয়েছি উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘লু জানিয়েছেন, তিনি এ সহায়তা বৃদ্ধির জন্য চেষ্টা করবেন।’ পাশাপাশি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে যুক্তরাষ্ট্রকে আরও বলিষ্ঠ ভূমিকা নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে, বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গাজায় শান্তি স্থাপন করার বিষয়টি আমরা আলোচনা করেছি। ডেনাল্ড লু বলেছেন-‘যুক্তরাষ্ট্র সরকার, সেক্রেটারি অব স্টেট মিস্টার ব্লিঙ্কেন অক্লান্তভাবে কাজ করছেন যাতে গাজায় যুদ্ধ বিরতি কার্যকর হয়’ এবং তিনি আমাকে যেটুকু বলেছেন- ‘আমরা আশাবাদী’। আমরা বলেছি, গাজায় যে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘঠিত হচ্ছে, নিরীহ শিশুদের, নারীদের হত্যা করা হচ্ছে। ৩৫ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, তার মধ্যে ৭০ শতাংশ নারী ও শিশু। এটি আসলে মেনে নেয়া যায় না। আমি বলেছি, টেলিভিশনে যখন এগুলো দেখি তখন টেলিভিশন দেখা কন্টিনিউ করতে পারি না। সেখানে শান্তি স্থাপন করা দরকার। তিনিও একমত যে সেখানে শান্তি স্থাপন করা দরকার।


ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা যাতে আরো ব্যাপকভাবে যুক্তরাষ্ট্রে যায়, ভালোভাবে পড়াশোনা করতে পারে সে বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের সহায়তা করতে চায়। আমি প্রস্তাব দিয়েছি যে, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে যেন তাদের এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম চালু করা হয়।
মন্ত্রী আরও জানান, তারা নারীর ক্ষমতায়ন ও জলবায়ু ইস্যুতেও সহায়তাদানের অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছে।


পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সাথে বৈঠক শেষে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু সাংবাদিকদের কাছে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা দু’দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নিতে আগ্রহী। কীভাবে দু’দেশের সম্পর্ক আরও জোরদার হয়, আমরা সে বিষয়গুলোতে আগ্রহী। এরই অংশ হিসেবে দুই দিনের সফরে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক ও আস্থা নতুন করে তৈরি করতে এসেছি।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আমরা পরস্পর নতুন বিনিয়োগ, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ছাড়াও কীভাবে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে এবং এদেশে শ্রম আইনকে আরও উন্নত করার বিষয় নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

সোনারগাঁয়ে ৫০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী পাগলা গাছের মেলা

একটি গাছ বা খুঁটিকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁর বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের হামছাদী গ্রামে গতকাল মঙ্গলবার শেষ দিনে জমে ওঠে ‘পাগলা গাছের মেলা’।প্রতিবছর ৩১ বৈশাখ থেকে ২ জ্যৈষ্ঠ পর্যন্ত এই মেলাটি হয়ে থাকে।স্থানীয়দের কাছে এটি পাগলা গাছের মেলা হিসেবে পরিচিত।

এলাকাবাসী জানায়, ৫০০ বছর আগে হামছাদী গ্রামের দুই ভাই ফনি সেন ও সুরেন্দ সেন ঘর তৈরির জন্য বার্মা (বর্তমান মায়ানমার ) থেকে ২০টি খুঁটি কিনে আনেন। ১ জ্যৈষ্ঠ রাতে তাঁরা স্বপ্নে দেখেন, তাঁদের কেনা খুঁটিগুলোর দুটি নিজেদের দেবতা হিসেবে পরিচয় দিচ্ছে। খুঁটি দুটি পাগল রূপ ধারণ করে দুই ভাইয়ের উদ্দেশে বলছে, ‘আমাকে ঘরের খুঁটির কাজে লাগাবে না। আমি তোমাদের দেবতা।

সেই থেকে ওই এলাকার সনাতন ধর্মের লোকজন গাছের খুঁটি দুটিকে প্রতিবছর পহেলা জ্যৈষ্ঠে বিশেষ পূজা-অর্চনা করে আসছে। পরবর্তী সময়ে একটি খুঁটি হারিয়ে যায়। পূজারিরা জানায়, পূজা শেষে খুঁটিটি পূজামণ্ডপের পাশের একটি পুকুরে সারা বছর ডুবিয়ে রাখা হয়।পাগল-ভক্তরা ভক্তি করার জন্য প্রতিবছর পুকুর থেকে খুঁটিটি উঠিয়ে দুধ দিয়ে স্নান করায়।ফুল, ফল ঘি, খাসি ও পাঁঠা বলি দিয়ে পাগলা খুঁটির নামে উৎসর্গ করে। পাগলা গাছের মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার লোকের সমাগম ঘটে।

গতকাল ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, দোকানিরা বাঁশের বাঁশি, কাঠের চেয়ার, হাতপাখা, চৌকি, মোড়া, চুড়ি, প্লাস্টিকের খেলনা, মিষ্টি ইত্যাদি পণ্য নিয়ে বসেছে। বসেছে নাগরদোলাও।পূজা উদযাপন কমিটির সদস্য তপন কুমার চক্রবর্তী জানান, এ মেলা আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য বহন করে আসছে। মেলার আনুষ্ঠানিকতা পূজা অর্চনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়। তবে এই মেলায় হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে অংশগ্রহণ করে ।সময়গমের কথা মাথায় রেখে নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা।

মায়ানমারের শরণার্থীদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর

Asia Monitor18 মায়ানমার থেকে আসা শরণার্থীরা ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ থেকে নিজেদের প্রাণ বাঁচানোর জন্য  ভারতে পালিয়ে আসে। কিন্তু সেখানে মণিপুর রাজ্যের সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপের পরে তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে এবং মায়ানমারে ফিরে যেতে বাধ্য করছে। ২মে মণিপুর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নংথম্বাম বীরেন সিং ৭৭ জন মায়ানমারের অবৈধ অভিবাসীকে বহিষ্কারের বার্তা দেনএবং তিনি এটাকে সবে প্রথম পর্ব বলে জানান।

মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বুধবার সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছেন আরও প্রায় ৫,৪০০ জন অবৈধ অভিবাসীকে বহিষ্কার করার প্রক্রিয়া চলছে। ভারত এই শরণার্থীদের স্বীকৃতি দেইনিএবং এরা জাতিসংঘের শরণার্থী কনভেনশনেও স্বাক্ষর করেনি। শরণার্থীরা জানিয়েছেন এই সাম্প্রতিক নির্বাসন তাদের আতংকিত করে তুলেছে। তারা অন্য অন্য গ্রামে চলে যাচ্ছে কারণ তারা স্বীকার করেছে তারা মণিপুর সরকারকে ভয় পায়ে।

জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী মায়ানমারের এই লড়াইয়ের কারণে প্রায় ২৫ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ভয়েস অফ আমেরিকা সাক্ষাৎকারের জন্য অনুরধ করলে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী কোন জবাব দেননি।

বিদ্রোহীদের রুখতে রোহিঙ্গাদের উপর অত্যাচার মায়ানমারের

Asia Monitor18 কয়েকবছর আগে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতি দাঙ্গার সময় মায়ানমার তাতে মদত দেওয়ায়ে প্রাণ বাঁচানোর উদ্দেশ্যে লাখ লাখ রোহিঙ্গা গোষ্ঠীর মুসলিম মানুষ পালাতে বাধ্য হয়।বহু রোহিঙ্গারা গৃহহীন হয়ে পড়েছে। এখন সেই মায়ানমারের জান্তা সরকার বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য রোহিঙ্গাদের নিজের দলে টানতে বাধ্য করছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন “হিউম্যান রাইটস ওয়াচ” এর রিপোর্ট থেকে জানা গেছে, গত ফেব্রুয়ারী থেকে প্রায় এক হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা সেনাকে মায়ানমার সেনাবাহিনীতে যোগদান করাতে বাধ্য করছে।

বন্দি করে আনা রোহিঙ্গাদের মধ্যে অধিকাংশ গ্রাম থেকে জোর করে তুলে নিয়ে এসেছে। এরপর কিছুদিন শিখিয়ে নিয়ে রাখাইন রাজ্যের আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে যুদ্ধে পাঠিয়ে দিচ্ছে। মায়ানমারের জান্তা সেনা বিদ্রোহীদের আটকাতে রুশ প্রেসিডেন্টের নীতি অনুসরণ করছে। গত নভেম্বরে  দেশের তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী- ‘তাঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি, ‘আরাকান আর্মি, এবং ‘মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি-র নয়া জোট ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স সামরিক জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছিল।

ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিতে  নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের

Asia Monitor18 মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তেহরানের সঙ্গে নয়াদিল্লির  চুক্তিটি মেনে নেইনি, যার বিষয়বস্তু ইরানের চাবাহার সমুদ্র বন্দর পরিচালনা। চুক্তিটি ঘোষণা করার পর সঙ্গে সঙ্গে ভারতকে নিষেধ আজ্ঞা দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এই ঘোষণা শোনার পরেই মার্কিন প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি বলেন, ইরানের সঙ্গে এই প্রকল্পটি দুই অঞ্চলের জনগণের মঙ্গলসাধন করবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বুধবার তার লেখা “হোয়াইট ভারত ম্যাটার” এই বইয়ের বাংলা সংস্করণে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কে জবাব দেন। তিনি বলেন জনগণ কারও সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি মেনে নেবে না। নয়াদিল্লি- তেহরান ১০ বছরের জন্য সোমবার এই চুক্তিটি স্বাক্ষর করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর অনলাইন এন ডি টিভির খবরে জানিয়েছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগে নিজেই চাবাহারের বৃহত্তর প্রাসঙ্গিকতার তারিফ করেছে।

তার মতে, আগে যোগাযোগ এবং এ দেশের জনগণের আশা- আকাঙ্ক্ষার কথা ভাবা প্রয়োজন। ইরানের উপর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল নিষেধআজ্ঞা জারি করেছে। তিনি বলেছেন যারাই ইরানের সাথে বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষর করবে তারা নিজেরাই নিজেদের উপর নিষেধআজ্ঞা  ডেকে আনবে।

স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা নিয়ে বিশ্ব জুড়ে তোলপাড়

কেন্দ্রীয় স্লোভাকিয়ার হ্যান্ডলোভা শহরের একটি অফ-সাইট সরকারী বৈঠকের পরেই প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকোর গুলিবিদ্ধ হওয়ার মুহূর্তটি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে।

‘স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকোকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হত্যা করার চেষ্টা। পাঁচবার গুলি চালানো হয়, আশা করা হচ্ছে উনি সুস্থ হয়ে উঠবেন’ এমনটাই বলেছিলেন স্লোভাকিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী টোমাস তারাবা। আরও বলেন, একটি গুলি তার পেটে এবং অন্যটি তার জয়েন্টে আঘাত করায় প্রধানমন্ত্রী গভীরভাবে আহত হয়েছেন।

“সৌভাগ্যবশত, যতদূর আমি জানি, অপারেশনটি ভালোভাবে হয়েছে এবং আমি মনে করি শেষ পর্যন্ত তিনি বেঁচে যাবেন,” তারাবা বিবিসির নিউজ প্রোগ্রামের একটি সাক্ষাত্কারে বলেছিলেন।

আলোকচিত্রে দেখা গেছে যে, ফিকো তার চারজন দেহরক্ষীর সঙ্গে মানুষের ভিড়ের দিকে এগোচ্ছিলেন এবং তার চারিদিকে ব্যারিকেড দ্বারা বেষ্টিত ছিল। ব্যারিকেডের পিছনে থাকা ওই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীর ফুসফুসের দিকে বন্দুক তাক করেন ওই ভিড়ের মধ্য থেকেই এবং পাঁচটি গুলির শব্দ শোনা যায়, সেখানে থাকা মানুষজন কিছু বুঝতে পারার আগেই এই ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ ফিকো মাটিতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে যান এবং অস্ত্রসহ অপরাধীকে ধরা হয়।

সন্দেহভাজন ব্যক্তির সাথে প্রাথমিক সাক্ষাত্কারের” ভিত্তিতে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাতুস সুতাজ এস্টোক বলেছেন, হত্যার প্রচেষ্টা রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল। স্লোভাকিয়ার রাষ্ট্রপতি জুজানা ক্যাপুতোভা বলেছেন যে “এটি গণতন্ত্রের উপরও একটি আক্রমণ “।রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন এই হামলাকে “দানবীয় অপরাধ” বলে অভিহিত করেছেন।মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন,এটিকে “ভয়ংকর সহিংসতা” বলে অভিহিত করেছে। অন্যান্য ন্যাটো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা, সেইসাথে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও এই হামলার নিন্দা করেছেন।

এক বছরেরও কম ব্যবধানে বেজিং যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি পুতিন

এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের দ্বিতীয় বার চীন সফর, ঠিক সেই সময় যখন রাশিয়ার সেনাবাহিনী ইউক্রেনের ওপর তীব্র আক্রমণ চালাচ্ছে।

পুতিনের চিনা সফল ১৬ ই মে থেকে ১৭ ই মে মধ্যে হতে চলেছে চিনা স্টেট মিডিয়ার অনুসারে বছরখানেক আগে প্রেসিডেন্ট মস্কোতে সফর করেছিলেন।

চীন এবং রাশিয়ার বন্ধুত্ব দীর্ঘদিনের আর্থিক এবং বাণিজ্যিক আদান-প্রদানের জন্য চীনের উপর রাশিয়া অনেকটাই নির্ভরশীল। বরাবর মস্কোর পাশে চীন থাকার জন্য আমেরিকা ও অন্যান্য দেশগুলি রোষের মুখে পড়েছে বারবার।

ক্রেমলিন থেকে বলা হয় যে, ‘দুই নেতা তাদের বিস্তৃত “অংশীদারিত্ব এবং কৌশলগত সহযোগিতা” নিয়ে আলোচনা করবেন এবং সেই সাথে রোজ চীনা সহযোগিতার উন্নয়নের মূল ক্ষেত্রগুলি সংজ্ঞায়িত করবেন এবং আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ইস্যু নিয়ে মতামত বিনিময় করবেন’।

পুতিনের এই চীনা সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। এছাড়া কূটনীতিবিদদের মতানুসারে, আমেরিকাবিরোধী দেশ যেমন ইরান এবং উত্তর কোরিয়ার মধ্যে সমন্বয় সাধনের বিষয়টিও দুই নেতার আলোচনার বিষয় গুলির মধ্যে থাকতে পারে। প্রিয়ংইয়ং যে কিনা প্রায় অর্থনৈতিক দিক দিয়ে পুরোপুরিভাবে চীনের ওপর নির্ভরশীল এবং পশ্চিমা দেশগুলি সরকার রাশিয়াকে যুদ্ধ সামগ্রী সরবরাহের মাধ্যমে সাহায্য করছে বলে অনুমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতে তেহরান যে দেশ কেনা রাশিয়া ও চীন দ্বারা অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠছে।

গত মাসে ন্যাটোর প্রধান জেনিনস স্টলটেনবার্গ সতর্ক করে বলেছিলেন যে, “ন্যাটো সদস্যরা এটা মনে করেন যে বিশ্বে আরো বিপজ্জনক কিছু হতে চলেছে, সেই আগ্রাসনের আভাস রাশিয়া, চীন, ইরান এবং উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে পাওয়া যাচ্ছে”। আরো বলেন যে, “এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে নিরাপত্তা শুধু আঞ্চলিক নয়, নিরাপত্তা বিশ্বব্যাপী”।

গোপন আঁতাত ফাঁস আব্বাসের সঙ্গে ইসরায়েলের

Asia Monitor18 গাজা উপত্যকায়ে ইসরায়েল হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছেন। ইসরায়েল সেনাবাহিনী আগের সপ্তাহে ফিলিস্তিনিদের ত্রান আসার একমাত্র পথ রাফা সীমান্তে ফিলিস্তিন অংশের নিয়ন্ত্রণ নেয়। ইসরায়েল ও গাজার মধ্যবর্তী কেরেম শালম ক্রসিং দিয়ে ট্রাক চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে মিশর। সেখান থেকে ইসরায়েল বাহিনী সরিয়ে নিয়ে গেলে  তারা আবার ট্রাক যেতে দেবে।

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ইসরায়েলি সরকারের গোপন আঁতাতের অভিযোগ অনেক পুরোনো। ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ও তার উপদেষ্টারা  যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে সাফ জানিয়েছে দিয়েছেন যে, ‘আন্ডারকভার হিসেবে রাফা সীমান্তে দায়িত্ব পালন করতে পারবে না ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। উল্টো ১০ দিন ধরে আটকে রাখা ফিলিস্তিনের রাজস্ব ছেড়ে দিতে ইসরায়েলে প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আব্বাস।

আব্বাস সরকার ও তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের কথা নিশ্চিত করার জন্য নিয়ন্ত্রণ চায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। ইসরায়েলের কাছ থেকে সবুজ সংকেত পেলে রাফায় কর্মকর্তা পাঠাতে আপত্তি নেই আব্বাসের।

error: Content is protected !!