'মেয়ে হওয়াটাই সবচেয়ে বড় অপরাধ?', পরীমনি নিয়ে প্রশ্ন তসলিমার…

সোচ্চার তসলিমা
#ঢাকা : তাঁর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণে বিদেশি মদ পেয়েছে বাংলাদেশের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব)। এরপরেই আটক করা হয় বাংলাদেশী অভিনেত্রী পরীমনিকে। বাড়িতে তল্লাসির পরেই লাইভে এসে নিজের আতঙ্কের কথা জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, অভিনেত্রীর বাড়ি থেকে প্রায় ৩০টি বিদেশি মদের বোতল পাওয়া গিয়েছে। এ ছাড়াও এলএসডি নেশা করার জন্য ব্লটিং কাগজ এবং কিছু পরিমাণ মাদক উদ্ধার করেছে তারা। পরীমনির বাড়িতে প্রায় তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে তল্লাসি চালানোর পর সন্ধেবেলায় তাঁকে বাড়ি থেকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে র‍্যাব। শুধু পরীমনিকেই নয়, অভিনেত্রীর সঙ্গে আটক করা হয়েছে তাঁর গাড়ির চালক এবং বাড়ির এক কর্মীকেও।
গোটা ঘটনায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ বাংলাদেশের প্রখ্যাত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। বুধবারই বেশ কিছু পোস্টে পরোক্ষে বাংলাদেশে মেয়েদের অবস্থান নিয়ে মুখর হন লেখিকা। এরপর বৃহস্পতিবার রাতে এই নিয়ে প্রকাশ্যেই সরব হন তসলিমা। পুলিশের রিপোর্টে লেখা কিছু বক্তব্যকে তুলে ধরে প্রশ্ন তোলেন তিনি নেটমা‌ধ্যমে। পুলিশের কথা অনুযায়ী পরীমনির কী কী অপরাধ, তার একটি তালিকা লেখেন লেখিকা। আটটি পয়েন্টে লেখা পরীমণির অপরাধগুলি হল, ‘পিরোজপুর থেকে ঢাকায় এসে স্মৃতিমণি ওরফে পরীমনি সিনেমায় রাতারাতি চান্স পেয়ে গিয়েছে। তার বাড়িতে বিদেশি মদের বোতল পাওয়া গেছে। তার বাড়িতে একখানা মিনি বার আছে। পরীমনি মদ্যপান করে, এখন সে মদে আসক্ত। নজরুল ইসলাম নামের এক প্রযোজক, যে তাকে সাহায্য করেছিল সিনেমায় নামতে, মাঝে মধ্যে পরীমনির বাড়িতে আসে, মদ্যপান করে। ডিজে পার্টি হতো পরীমণির বাড়িতে। আইস-সহ মাদকদ্রব্য পাওয়া গেছে (এগুলোর চেহারা অবশ্য দেখানো হয়নি)। মদ খাওয়ার বা সংগ্রহ করার লাইসেন্স আছে পরীমণির, তবে তার মেয়াদ পার হয়ে গেছে, এখনও রিনিউ করেনি সে।’
তসলিমার দাবি, এগুলো কোনওটাই অপরাধের মধ্যে পড়ে না, কিন্তু তাও অভিনেত্রীকে ‘গ্রেফতার’ করা হল! লেখিকার প্রশ্ন, ‘অপরাধ তবে কোথায়? যে অপরাধের জন্য দামি গ্লেনফিডিশ হুইস্কিগুলো বাজেয়াপ্ত করা হলো, মেয়েটাকে গ্রেফতার করা হলো, রিমাণ্ডে নেওয়া হলো! সত্যিকার অপরাধ খুঁজছি। কাউকে কি জোর করে মাদক গিলিয়েছে, প্রতারণা করেছে মেয়েটি, কাউকে খুন করেছে? অপরাধ খুঁজছি। নাকি মেয়ে হওয়াটাই সবচেয়ে বড় অপরাধ?’
এরপরেই বিতর্কিত লেখিকা লেখেন তিনি শুনেছেন, পরীমনি দরিদ্র পরিবারের মেয়ে, পরিশ্রম করে নিজের জায়গা তৈরি করেছেন ঢাকার ইন্ডাস্ট্রিতে। সে কথা উল্লেখ করে লেখিকার ক্ষোভ, পুরুষরা গরিব, দুঃস্থ পরিবার থেকে পরিশ্রম করে সাফল্য অর্জন করলে তাঁদের প্রশংসা করা হয়। কিন্তু মহিলাদের ক্ষেত্রে বলা হয়, ‘কী করে হল, নিশ্চয়ই শুয়েছে!’ তসলিমার প্রশ্ন, ‘যদি শুয়েই থাকে, তাহলে কি জোর করে কারও ইচ্ছের বিরুদ্ধে শুয়েছে? ধর্ষণ করেছে কাউকে, পুরুষেরা যেমন দিন রাত ধর্ষণ করে মেয়েদের, সেরকম কোনও ধর্ষণ?’
নেটমাধ্যমে লেখিকা জানালেন, ‘মদ খাওয়া, মদ রাখা, ঘরে মিনিবার থাকা কোনওটিই অপরাধ নয়। বাড়িতে বন্ধু বান্ধব আসা, এক সঙ্গে মদ্যপান করা অপরাধ নয়। বাড়িতে ডিজে পার্টি করা অপরাধ নয়। কারও সাহায্য নিয়ে সিনেমায় নামা অপরাধ নয়। কারও সাহায্যে মডেলিং-এ চান্স পাওয়া অপরাধ নয়। কোনও উত্তেজক বড়ি যদি সে নিজে খায় অপরাধ নয়। ন্যাংটো হয়ে ছবি তোলাও অপরাধ নয়। লাইসেন্স রিনিউ-এ দেরি হওয়া গুরুতর কোনও অপরাধ নয়।’ লজ্জার লেখিকার প্রশ্ন, তবে কী শুধু মেয়ে বলেই পরীমনির অপরাধকে এতো গুরুরতরভাবে দেখা হচ্ছে আইন ও সমাজের চোখে?
Follow us on
Download News18 App

source

About AM Desk

Check Also

 নেতানিয়াহুকে হত্যার উদ্দেশ্যে ইসরায়েলিকে নিয়োগ ইরানের

Asia Monitor18 এক ইসরায়েলই নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে যাকে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সহ শীর্ষ ইসরায়েলই …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!