প্রাণদণ্ড পাওয়া আট প্রাক্তন ভারতীয় নৌ কর্তাকে মুক্তি দিল কাতার

ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রাক্তন আট কর্মকর্তাকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়ার সাড়ে ৩ মাস পর তাদের মুক্তি দিয়েছে কাতার সরকার।

তাদের মধ্যে সাতজন ইতোমধ্যে দেশেও ফিরেছেন বলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে।

বিবিসি জানিয়েছে, ওই আট ভারতীয় কাতারের একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ ওঠার পর ২০২২ সালের অগাস্টে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

তবে সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগে তাদের ফাঁসির রায় দেওয়া হয়েছিল, কাতার বা ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কেউ তা প্রকাশ করেনি বলে বিবিসি জানিয়েছে।

রায় হওয়ার পরপরই তখন তৎপর হয় ভারত সরকার। বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার কথা জানিয়ে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইনি প্রক্রিয়া শুরু করে। এরপর গত জানুয়ারিতে মৃত্যুদণ্ড মওকুফ করে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয় ওই আটজনকে। সবশেষে তাদের মুক্তি দেওয়া হল।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলছে, “কাতারের সিদ্ধান্তকে আমরা সাধুবাদ জানাই।”

ওই আটজন হলেন– ভারতীয় নৌ বাহিনীর সাবেক কমান্ডার পূর্ণেন্দু তিওয়ারি, কমান্ডার সুগুনাকর পাকালা, কমান্ডার অমিত নাগপাল, কমান্ডার সঞ্জীব গুপ্ত, ক্যাপ্টেন নভতেজ সিং গিল, ক্যাপ্টেন বীরেন্দ্র কুমার ভার্মা, ক্যাপ্টেন সৌরভ বশিষ্ট এবং নাবিক রাগেশ গোপাকুমার।

তারা সবাই ভারতের নৌবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ পদে ২০ বছর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। নেতৃত্ব দিয়েছেন ভারতীয় যুদ্ধজাহাজের।

তাদের মৃত্যুদণ্ডের খবরের পর এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, কাতারের দাহরা গ্লোবাল টেকনোলজিস অ্যান্ড কনসালটেন্সি সার্ভিসেস নামের একটি কোম্পানিতে তারা কাজ করছিলেন। বেসরকারি এই কোম্পানি কাতারে সশস্ত্র বাহিনীকে প্রশিক্ষণ এবং সরঞ্জাম সরবরাহের মত কাজ করে থাকে।
দণ্ডপ্রাপ্তদের কেউ কেউ গোপনে কার্যক্রম চালানো ইতালীয় প্রযুক্তিভিত্তিক ক্ষুদ্র সাবমেরিন তৈরির মত অত্যন্ত স্পর্শকাতর প্রকল্পেও কাজ করছিলেন।

পরে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ উঠলে ২০২২ সালে গ্রেপ্তার করে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। তখন থেকে তাদের মুক্তির জন্য কাজ করে আসছিল দিল্লি।

২০২২ সালের মার্চে তাদের বিচার শুরু হয়। জামিনের আবেদনও বেশ কয়েকবার বাতিল করে তাদের আটকাদেশ বাড়ানো হয়। পরে ‘কোর্ট অব ফার্স্ট ইন্সট্যান্স অব কাতার’ তাদের মৃত্যুদণ্ড দেয়।

উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে লাখ লাখ ভারতীয় রয়েছেন, যারা স্বল্প দক্ষ কিংবা অদক্ষ নিম্নআয়ের শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। দেশগুলোর অর্থনীতিতে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ভারতের প্রবাসী আয়েও তারা গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক।

About AM Desk

Check Also

 নেতানিয়াহুকে হত্যার উদ্দেশ্যে ইসরায়েলিকে নিয়োগ ইরানের

Asia Monitor18 এক ইসরায়েলই নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে যাকে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সহ শীর্ষ ইসরায়েলই …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!